Just In
Don't Miss
দুর্গা পূজা ২০২০ : দেখে নিন মহানবমীর দিন-ক্ষণ ও তাৎপর্য
কথায় আছে, বারো মাসে তেরো পার্বণ। কিন্তু তা হলেও বাঙালির কাছে সেরা উৎসব হলো দুর্গাপুজো। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন। কিন্তু দেখতে দেখতে এমনভাবে দিন কেটে যায় যে আমরা কেউই টের পাই না। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী তিথি পেরিয়ে এবছরের দুর্গোৎসব পদার্পণ করছে নবমী তিথিতে। আর নবমী মানেই সকলের মুখ ভার। কারণ, মাত্র কয়েক ঘন্টা পর ঘরের মেয়ে উমা বাপের বাড়ি ছেড়ে পুনরায় ফিরে যাবেন কৈলাসে। কিন্তু আর কি করার আছে, কালের নিয়মে আমাদের বিদায় জানাতে হবে মা দুর্গাকে। তাই মা বিদায় নেওয়ার আগে আপামর বাঙালির কাছে দুর্গাপূজার নবমীর দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক, নবমী তিথির দিনক্ষণ, তাৎপর্য ও পুজো বিধি সম্পর্কে।

মহানবমীর দিন-ক্ষণ
বাংলা ১৪২৭ সনের বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকা মতে মহানবমীর দিন-ক্ষণ হল -
নবমী তিথি আরম্ভ
ইংরেজি তারিখ - ২৪/১০/২০২০, শনিবার
বাংলা তারিখ - ৭ কার্তিক, ১৪২৭
তিথি শুরু - সকাল ১১টা ২৫ মিনিট থেকে
নবমী তিথি শেষ
ইংরেজি তারিখ - ২৫/১০/২০২০, রবিবার
বাংলা তারিখ - ৮ কার্তিক, ১৪২৭
তিথি শেষ - সকাল ১১টা ১২ মিনিটে

তাৎপর্য
মহানবমী পুজোর তাৎপর্য সম্পর্কে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। তবে হিন্দু পুরাণ মতে মা দুর্গা মহিষাসুরকে দশমীতে বধ করছিলেন, তাই সেই দিক থেকে দেখতে গেলে যুদ্ধের শেষ দিন নবমী। অষ্টমী আর নবমীর সন্ধিক্ষণের সন্ধি পুজোর সময় মা দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। শাস্ত্র মতে, এই দিন দেবীর পূর্ণাঙ্গ পুজো করা হয়।

পূজা বিধি
অষ্টমীর পূজার্চনার মতোই নবমীর দিনও জাঁকজমকভাবে মায়ের কাছে পুজো করা হয়। শাস্ত্র মতে, নবমীর দিন মায়ের পূর্ণাঙ্গ পুজো হয় বলে, এই তিথিতে বলি, হোম এবং ষোড়শ উপাচারের বিধান রয়েছে। এই বলিদান মহা নবমীর একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি। মূলত মা দুর্গাকে সন্তুষ্ট করতে এবং তাঁর আশীর্বাদ পেতে করা হয়। অনেকেই ভাবেন বলি সাধারণত অষ্টমীতেই হয়। কিন্তু না, বলিদানের রীতিটি কেবল নবমীতেই সঞ্চালিত হয়। শাস্ত্র মতে, সন্ধি পুজোর প্রথম দণ্ড অর্থাৎ ২৪ মিনিট পার হওয়ার পরেই হয় বলি। সহজ করে বলতে গেলে, নবমী তিথি শুরু হওয়ার প্রথম ২৪ মিনিটের মধ্যে হয়।
প্রাচীন যুগে এই দিনে মায়ের কাছে পশু বলি হলেও, বর্তমান দিনে পশু বলি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই এখন কুমড়ো, লাউ, আখ, শসা বা কলা ইত্যাদি বলিতে ব্যবহার করা হয়।
কোথাও কোথাও এই দিনে কুমারী পুজোও হয়ে থাকে। হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান কুমারী পুজো দেখার জন্য। ঘরের মায়েরা পরিবারের মঙ্গল কামনায় উপোস থেকে অঞ্জলি দিয়ে থাকেন। এই দিন বহু মণ্ডপে চলে পঙক্তি ভোজন। পুজো উদ্যোক্তারা লুচি, খিচুড়ি ও ফল, প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করেন সকলের মধ্যে। নবমীর সর্বশেষ আকর্ষণ হল সন্ধ্যা আরতি ও ধুনুচি নাচ।
দুর্গাপূজা এমন একটি উৎসব, যা শুধু বাংলাতেই নয়, ওড়িশা, আসাম, বিহার, ঝাড়খন্ড এবং ত্রিপুরাতেও বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়।