Just In
- 8 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 9 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 12 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 14 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
আজ মহালয়া, দেখুন তর্পণের সময় ও তাৎপর্য
আজ 'শুভ মহালয়া'। আর মাত্র কয়েকঘণ্টার পরই হবে অপেক্ষার অবসান। প্রত্যেক বাঙালীর জীবনে এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। মহালয়ার মাধ্যমেই পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষ। মহালয়ার ভোরে বাঙালীর ঘরে ঘরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সুমধুর কন্ঠস্বরের মাধ্যমে ভেসে আসে মা দূর্গার আগমনী বার্তা। শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। এই একটি ঐতিহ্য বাঙালি আজও সমানভাবে বহন করে চলেছে। সেই অর্থে দূর্গাপুজোর আভাস মেলে মহালয়ার ভোর চারটেয় 'মহিষাসুরমর্দিনী'-র বিশেষ বেতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই।
আসলে মহালয়া অমাবস্যা হল তর্পণের দিন বা পিতৃপক্ষের শেষদিন। এইদিনে অনেকেই তাদের পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানাতে গঙ্গায় বা পবিত্র নদীতে তর্পণ করেন। পিন্ড দান বা শ্রাদ্ধের মতো আচার অনুষ্ঠান করা হয়। পূর্বপুরুষদের তৃপ্ত করার জন্য তিল, জল দান করা হয় এবং উল্কাদান করা হয়। এককথায়, মৃত পূর্বপুরুষগণকে জলদান করাকেই তর্পণ বলা হয়। পিতৃপক্ষের ১৬ দিন ধরে প্রতিদিনই পূর্বপুরুষদের জন্য তর্পণ করা যেতে পারে। শাস্ত্রে, প্রতিটি দিনের পিতৃকর্মের পৃথক ফলাফলের উল্লেখ রয়েছে। তবে যারা প্রতিদিন পিতৃকর্ম করতে পারেন না, তারা পিতৃপক্ষের শেষদিন অর্থাৎ মহালয়া অমাবস্যায় শ্রাদ্ধ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন : দূর্গাপূজা ২০২০ : এবছর মহালয়ার একমাস পরে শুরু দুর্গাপুজো, জানুন এর কারণ
মহালয়া তর্পণের মধ্যে দিয়েই অবসান হয় পিতৃপক্ষের, শুরু হয় দেবীপক্ষ। কিন্তু এবার অর্থাৎ ২০২০ সালের চিত্রটা একটু অন্যরকম। পিতৃপক্ষ শেষ হওয়ার পরই দূর্গাপূজা শুরু হচ্ছে না, কারণ পিতৃপক্ষের পরই আশ্বিন মাসের অধিকমাস বা মলমাস শুরু হবে। তাই, মা দূর্গা আশ্বিনের বদলে কার্তিক মাসে মর্ত্যে আগমন করবেন। ২০২০ সালে মহালয়া ১৭ সেপ্টেম্বর, আর মহাষষ্ঠী পড়েছে ২২ অক্টোবর অর্থাৎ প্রায় একমাসের ব্যবধান।
২০২০ সালের মহালয়ার দিন-ক্ষণ
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, ১৭ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার মহালয়া। এই দিন ভোর থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত তর্পণ এর সময়।
গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা মতে, ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলায় ৩০ ভাদ্র বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ০৭ মিনিটে অমাবস্যা শুরু হবে। শেষ হবে ৩১ ভাদ্র অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ০৪ মিনিটে।
আরও পড়ুন : বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, যাঁর কন্ঠস্বরে ভেসে আসে আগমনীর বার্তা
মহালয়া ঘিরে নানান কাহিনী
মহালয়া নিয়ে নানান কাহিনী শোনা যায়, যেমন- মহাভারতে বলা আছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কর্ণের মৃত্যুর পর তাঁর আত্মা স্বর্গে গমন করলে, তাঁকে স্বর্ণ ও রত্ন খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়। কর্ণ খাবারের এমন বিচিত্রতার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারাজীবন শুধু স্বর্ণই দান করেছেন, তিনি তাঁর পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কোনওদিন খাদ্য প্রদান করেননি। তাই স্বর্গে তাঁকে স্বর্ণই খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্ণ বলেন, তিনি যেহেতু তাঁর পিতৃগণের সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না, তাই তিনি তাঁদের উদ্দশ্যে খাদ্য-পানীয় প্রদান করেননি।
এই কারণে ইন্দ্রের নির্দেশে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপ্রতিপদ তিথিতে কর্ণ ষোলো দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করেন। আশ্বিনের অমাবস্যা তিথিতে শেষ জলদান করে তিনি স্বর্গে ফিরে যান। এই বিশেষ পক্ষকাল সময়কে হিন্দু শাস্ত্রে 'পিতৃপক্ষ' বলা হয়। পিতৃপক্ষের শেষ দিন হল 'মহালয়া'। এই কাহিনির কোনও কোনও পাঠ্যন্তরে, ইন্দ্রের বদলে যমকে দেখা যায়।
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। পিতৃলোকের শাসক হলেন মৃত্যুদেবতা যম। তিনিই সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। পরবর্তী প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে পূর্ববর্তী প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন এবং পরমাত্মায় লীন হন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠে যান। এই কারণে, কেবলমাত্র জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।