For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

মহালয়া ২০১৯ : দিন, ইতিহাস ও এর তাৎপর্য

|

আর মাত্র দু'দিন পর অর্থাৎ এই বছর মহালয়া পড়েছে ১০ আশ্বিন ১৪২৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শনিবার। এইদিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জীবনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ এটি পিতৃপক্ষের শেষ দিন এবং এইদিনে পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা হয়।

Mahalaya Amavasya 2019

বাঙালী হিন্দুদের কাছে যে বিষয়টির জন্য মহালয়ার গুরুত্ব অপরিসীম সেটা হল, মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহিষাসুরমর্দিনীর স্তোত্রপাঠ শোনা। এর মাধ্যমেই শুরু হয় বাঙালীর দুর্গাপূজা। এই একটি ঐতিহ্য বাঙালি আজও সমানভাবে বহন করে চলেছে। সেই অর্থে দুর্গাপুজোর আভাস মেলে এই 'মহিষাসুরমর্দিনী'-র বিশেষ বেতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। এছাড়া, রীতি মেনে এইদিনে দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকা হয়।

আসলে মহালয়া অমাবস্যা হল তর্পণের দিন বা পিতৃপক্ষের শেষদিন। এইদিনে অনেকেই তাদের পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানাতে বা তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে গঙ্গায় বা অন্য নদীতে তর্পণ করেন অনেকে। পিন্ড দান বা শ্রাদ্ধের মতো আচার অনুষ্ঠান করা হয়। পূর্বপুরুষদের তৃপ্ত করার জন্য তিল, জল দান করা হয় এবং তাদের যাত্রাপথকে আলোকিত করার জন্য উল্কাদান করা হয়। সাধারণভাবে মৃত পূর্বপুরুষগণকে জলদান করাকেই তর্পণ বলা হয়। মহালয়া তর্পণের মধ্যে দিয়েই অবসান হয় পিতৃপক্ষের। আর, সামনে যেহেতু দুর্গাপুজো, তাই তারপর থেকেই বাঙালীর দেবীপক্ষ শুরু হয়।

মহালয়া পক্ষের পনেরোটি তিথির নাম হল প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী, চতুর্দশী ও অমাবস্যা। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, যে ব্যক্তি তর্পণে ইচ্ছুক হন, তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষের মৃত্যুর তিথিতে তর্পণ করতে হয়।

মহালয়া নিয়ে নানান কাহিনী শোনা যায়। ষেমন- মহাভারতে বলা আছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কর্ণের মৃত্যুর পর তাঁর আত্মা স্বর্গে গমন করলে, তাঁকে স্বর্ণ ও রত্ন খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়। কর্ণ খাবারের এমন বিচিত্রতার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারাজীবন শুধু স্বর্ণই দান করেছেন, তিনি তাঁর পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কোনওদিন খাদ্য প্রদান করেননি। তাই স্বর্গে তাঁকে স্বর্ণই খাদ্য হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্ণ বলেন, তিনি যেহেতু তাঁর পিতৃগণের সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না, তাই তিনি তাঁদের উদ্দশ্যে খাদ্য-পানীয় প্রদান করেননি।

এই কারণে ইন্দ্রের নির্দেশে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপ্রতিপদ তিথিতে কর্ণ ষোলো দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করেন। আশ্বিনের অমাবস্যা তিথিতে শেষ জলদান করে তিনি স্বর্গে ফিরে যান। এই বিশেষ পক্ষকাল সময়কে হিন্দু শাস্ত্রে 'পিতৃপক্ষ' বলা হয়। পিতৃপক্ষের শেষ দিন হল 'মহালয়া'। এই কাহিনির কোনও কোনও পাঠ্যন্তরে, ইন্দ্রের বদলে যমকে দেখা যায়।

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই লোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। পিতৃলোকের শাসক হলেন মৃত্যুদেবতা যম। তিনিই সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। পরবর্তী প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে পূর্ববর্তী প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন এবং পরমাত্মায় লীন হন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠে যান। এই কারণে, কেবলমাত্র জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

English summary

Mahalaya Amavasya 2019 : History, Date and Significance

The significance of Mahalaya is that on this day Pitru Paksha ends and it marks the beginning of Devi Paksha. Check out the date, history and significance.
Story first published: Wednesday, September 25, 2019, 16:48 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion