Just In
কুবের দেবের মন জয় করে প্রচুর টাকার মালিক হয়ে উঠতে চান? তাহলে এই মন্ত্রগুলি জপ করুন!
কে এই কুবের দেব জানা আছে? শাস্ত্র মতে কুবের ছিলেন এক অতি সাধারণ মানুষ। কিন্তু শিব ঠাকুরকে খুব মনতেন। একদিন কষ্টের জীবন আর সহ্য় করতে না পেরে কুবের ঠিক করলেন শিব ঠাকুরের আরাধনা শুরু করবেন। সেই মতো শুরু হল দেবাদিদেবের নাম জপ। দীর্ঘ দিন একভাবে দেবের নাম জপতে জপতে একদিন মহাদেব এতটাই প্রসন্ন হলেন যে স্বয়ং এলেন কুবেরের সঙ্গে দেখা করতে। শুধু তাই নয়, কুবেরকে আশীর্বাদ করলেন যে সারা দুনিয়ার সব সম্পদ এবং অর্থের দেবতা হয়ে উঠবেন তিনি।
এত সম্পদ এবং অর্থ দেখে কুবেরের মাথা ঘুরে গেল। পরিবর্তন আসতে থাকলো সার স্বভাবেও। এই দেখে শিব ঠাকুর এতটাই রেগে গেলেন যে কুবেরকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এদিকে সবে দেবতার স্থান পাওয়া কুবের তার প্রসাদে সব দেবতাদের আমন্ত্রণ জানালেন রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। শিব ঠাকুরের হয়ে সেই সভায় পৌঁছালেন তাঁর পুত্র গণেশ। আর ঠিক তখনই ঘটল একটা ঘটনা। কী ঘটনা?
গণেশ ঠাকুর এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলেন যে দেবতাদের জন্য বানানো সব খাবার একাই খেয়ে নিলেন। এমনকি খিদে মেটাতে কুবের দেবকে পর্যন্ত খেতে উদ্যত হলেন। এমন সময় শিব ঠাকুর আর্বিভাব ঘটল। কুবের বুঝতে পারলেন তিনি কী ভুল করেছেন। ক্ষমাও চাইলেন দেবাদিদেবের কাছে। ধন দেবতার এমন পরিবর্তিত রূপ দেখে শিব ঠাকুর এতটাই প্রসন্ন হলেন যে কুবের দেবকে বর দিলেন যে কোনও ভক্ত যদি মন প্রাণ দিয়ে তাঁর নাম করেন, তাহলে কুবেরের আশীর্বাদে সেই ভক্তের জীবন খুসিতে ভরে উঠবে, সেই সঙ্গে পকেটও ভরে উঠবে অনেক অনেক টাকায়।
তবে ধন দেবতাকে প্রসন্ন করতে পারলে যে শুধু বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়, তা নয়, সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়, ব্যবসায় চরম উন্নতি ঘটে, বুদ্ধির জোর বাড়ে এবং পরিবারে সুখ-শান্তির ছোঁয়া লাগে। তবে এত সব উপকার পেতে প্রথম তো কুবের দেবের মন জয় করতে হবে। আর সেই কাজটা করবেন কীভাবে জানা আছে?
শাস্ত্র মতে বিশেষ কিছু মন্ত্র আছে, যেগুলি জপ করা শুরু করলে ধন দেবতা এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁর ভক্তের মনের সব ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্নও পূরণ হয়। শুধু তাই নয়, কুবের দেবের আশীর্বাদে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা সমস্যাও মিটে যায় চোখের পলকে। তাই তো বলি বন্ধু, বাকি জীবনটা যদি টাকার বিছানায় শুতে চান,তাহলে যে যে মন্ত্রগুলি পাঠ করতে হবে, সেগুলি হল...
১. কুবের ধন মন্ত্র:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মেডিটেশন পোজে বসে এক মনে এই মন্ত্রটি জপ করলে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি নতুন বাড়ি এবং গাড়ির স্বপ্নও পূরণ হয়। শুধু তাই নয়, এই মন্ত্রটি জপ করার সময় মনে মনে যাই ভাববেন, তাই বাস্তবায়িত হবে। তাই তো বলি বন্ধু মনের সব ইচ্ছা পূরণ করতে "ওম শ্রিম ওম হ্রিম শ্রিম হ্রিম ক্লিম বিত্তেশ্বরায় নমহ", এই মন্ত্রটি জপ করতে ভুলবেন না যেন!
২. কুবের মন্ত্র:
"ওম ইকশয়া কুবেরায় ভাইশ্রাবানায় ধন ধান্যে ধিপাত্যয় ধন ধান্যে সমৃদ্ধম মে ধি দপয় সোয়াহা", এই মন্ত্রটি জপ করা শুরু করলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না। ফলে গৃহস্থের অন্দরে কোনও ধরনের অশান্তি বা কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন মনের জোর বাড়ে এবং মনের ছোট থেকে ছোট স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না।
৩. মহালক্ষ্মী কুবের মন্ত্র:
প্রতিদিন এক মনে এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করলে কুবের দেব তো প্রসন্ন হনই, সেই সঙ্গে মা লক্ষ্মীও খুব খুশি হন। ফলে গৃহস্থে প্রবেশ ঘটে মায়ের। আর যে বাড়িতে মা লক্ষ্মী আসন পাতেন, সেখানে কুবের দেবেরও প্রবেশ ঘটে। ফলে মা লক্ষ্মী এবং কুবের দেবের আশীর্বাদে সব দুঃখ তো দূর হয়ই, সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের সমস্যা মিটে যেতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, পকেট ভর্তি টাকার পাশপাশি যদি অফুরন্ত আনন্দের সন্ধান পেতে চান, তাহলে "ওম শ্রি মহা লক্ষ্মী চ ভিদমাহে বিষ্ণু পত্নী চ ধিমাহে তানো লাক্ষ্মী প্রাচোদায়াত ওম", এই মন্ত্রটি জপ করতে হবে প্রতিদিন!
৪. গায়েত্রী কুবের মন্ত্র:
"ওম ইক্ষ রাজ্য ভিদমাহে অলিকাদিস্যয়া ধিমাহে তানো কুবের প্রাচোদায়াত", এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করলে কুবের দেবের আশীর্বাদে বুদ্ধির ধার তো বাড়েই, সেই সঙ্গে মনের জোর বাড়তেও সময় লাগে না।
কুবের মন্ত্র জপ করার নিয়ম:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতিদিন কুবের দেবের পুজো করার পর যদি এই মন্ত্রগুলির কোনও একটি পাঠ করা হয়, তাহলে দ্রুত উপকার মেলার সম্ভাবনা বাড়ে। শুধু তাই নয়, একবার মন্ত্র জপ শুরু করলে কম করে ২১ দিন পাঠ করতে হবে। কারণ এমনটা করলে সুফল মেলার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে আরও কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। যেমন ধরুন-কুবের মন্ত্র জপ করার সময় মন শান্ত করে এক মনে দেবের কথা ভাবতে হবে। সে সময় খারাপ কিছু ভাবলে কিন্তু কোনও ফলই পাবেন না। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে আরও একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, তা হল দেবের আশীর্বাদে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার পরে ভুলেও কোনও মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে কুবের দেব এতটাই রুষ্ট হবেন যে যা পেয়েছেন, তা হারিয়ে ফেলতে দেখবেন এক মুহূর্তও সময় লাগবে লাগবে না।