For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

মহাশিবরাত্রি : জেনে নিন জ্যোতির্লিঙ্গ এবং শিবলিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য

|

ভগবান শিব, যিনি মহাদেব, দেবাদিদেব, মহেশ্বর, শঙ্কর, ইত্যাদি আরও অনেক নামে পরিচিত। হিন্দুদের মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই ভগবান শিবের ভক্ত, তাই প্রায়শই ভক্তদের দেখা যায় শিবলিঙ্গের পূজা করতে। শিবলিঙ্গ উপাসনা ছাড়াও, ভক্তরা জ্যোতির্লিঙ্গেরও পূজা করেন এবং বছরের অনেক সময় বিশেষত, মহা শিবরাত্রির সময় জ্যোতির্লিঙ্গ পরিদর্শন করে।

Difference Between Jyotirlinga And Shivlinga

ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, শিবলিঙ্গ উপাসনা করলে ধন, স্বাস্থ্য এবং জীবনে চির শান্তি আসে ও তাদের আত্মাকে পবিত্র করে। যদিও এটিও বিশ্বাস করা হয় যে, জ্যোতির্লিঙ্গ উপাসনা করলে আরও অনেক রুপে সমৃদ্ধি, সৌভাগ্য এবং আশীর্বাদ আসে।

সারা দেশে অসংখ্য শিবলিঙ্গ খুঁজে পাবেন। তবে, বর্তমানে আমাদের গোটা দেশে মোট ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে। তবে, ভক্তরা নিষ্ঠা ও বিশ্বাসের সহিত শিবের উভয় রহস্যময় রূপেরই উপাসনা করে থাকেন। কিন্তু জ্যোতির্লিঙ্গ এবং শিবলিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

জ্যোতির্লিঙ্গ এবং শিবলিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য

'লিঙ্গ' যা ভগবান শিবের সাথে সম্পর্কিত। যে সমস্ত শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ-অর্থাত্‍ নিজেই স্বয়ং শিবলিঙ্গরূপে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, এইরূপে সারা ভারতবর্ষে ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ আছে, সেই সব শিবলিঙ্গকে বলা হয় জ্যোতির্লিঙ্গ। শিব পুরাণ অনুসারে, যেখানেই ভগবান শিব আলোর আকারে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তাঁর ভক্তদের দ্বারা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন, তিনি সেখানেই নিজেকে জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে প্রকাশ করেছেন। ভগবান শিব ভারতের ১২টি পৃথক স্থানে জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এই ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গগুলি ১২টি রাশিকে চালিত করে।

অন্যদিকে, শিবলিঙ্গ হল ভগবান শিবের একটি রূপ যা, মনুষ্য নির্মিত হতে পারে বা নিজে থেকেও উপস্থিত হতে পারে। দেশজুড়ে অসংখ্য শিবলিঙ্গ রয়েছে এবং ভক্তরা নিষ্ঠার সহিত তাঁর পূজা করে।

জ্যোতির্লিঙ্গের গল্প

শিব পুরাণ অনুসারে, একসময় মহাবিশ্বের স্রষ্টা ভগবান ব্রহ্মা এবং মহাবিশ্বের পালনকর্তা ভগবান বিষ্ণুর বিতর্ক হয়েছিল যে তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কে। এটি অন্যান্য দেবতাদের চিন্তিত করেছিল। ভগবান ব্রহ্মা এবং ভগবান বিষ্ণুর মধ্যে আলোচনা বন্ধ করার জন্য, অন্যান্য দেবতারা শিবের কাছে আসে।

তাই, ভগবান শিব আলোর স্তম্ভ আকারে হাজির হন। ভগবান বিষ্ণু এবং ব্রহ্মা জ্যোতি (আলোক) স্তম্ভ দ্বারা বিস্মিত হন কিন্তু আলোর উৎস এবং আলোর শেষও খুঁজে পাননি। তখন উভয়েই সিদ্ধান্ত নেন যে, যিনি প্রথমে উভয় প্রান্তে পৌঁছবেন তিনিই হবেন সর্বশ্রেষ্ঠ। দু'জনেই আলোর উৎস এবং শেষ সন্ধান করতে গেলেও তাঁরা খুঁজে পেতে সক্ষম হননি। এইসময় ভগবান শিব তাঁর আসল রূপে এসে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, ত্রয়ী অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ (শিব) কেউই একে অপরের চেয়ে বড় নন। তবে একসাথে, ত্রয়ীর সম্মিলিত শক্তি তাদের সর্বোত্তম করে তোলে।

জ্যোতি স্তম্ভ পরে 'জ্যোতির্লিঙ্গ' নামে পরিচিতি লাভ করে কারণ, ভগবান শিব আলোর স্তম্ভের আকারে উপস্থিত হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন : মহাশিবরাত্রি : শিবরাত্রিতে আপনার রাশিচক্র অনুযায়ী ভগবান শিবের উপাসনা করুন

১২টি জ্যোতির্লিঙ্গগুলি নিম্নরূপ

১) সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ : এই জ্যোতির্লিঙ্গকে ভগবান শিবের প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে বলা হয়। এটি গুজরাটে অবস্থিত।

২) মল্লিকার্জুন জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি অন্ধ্রপ্রদেশে অবস্থিত এবং একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ যা ভগবান শিব এবং তাঁর স্ত্রী দেবী পার্বতী উভয়েরই প্রতীক। এটি 'দক্ষিণ ভারতের কৈলাস' নামেও পরিচিত।

৩) মহাকলেশ্বর : এই জ্যোতির্লিঙ্গটি মধ্য প্রদেশের উজ্জয়িনী জেলায় রয়েছে। প্রাচীনকালে এটি অবন্তিকা নামেও পরিচিত ছিল।

৪) ওঁকারেশ্বর : এই জ্যোতির্লিঙ্গটিও মধ্য প্রদেশের নর্মদা নদীর তীরে অবস্থিত।

৫) কেদারনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ : এই মহান জ্যোতির্লিঙ্গটি উত্তরাখণ্ডের কেদার পর্বতে অবস্থিত।

৬) ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ : এই জ্যোতির্লিঙ্গটি মহারাষ্ট্রের ভীমা নদীর তীরে অবস্থিত।

৭) কাশী বিশ্বনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে অবস্থিত এবং হিন্দুদের মধ্যে এর বিশাল তাৎপর্য রয়েছে। এই জ্যোতির্লিঙ্গটি শ্রী বিশ্বনাথ বা শ্রী বিশ্বেশ্বর নামেও পরিচিত। এটি শিবের ৭ম ​​জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে বিবেচিত।

৮) ত্র্যম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি শিবের অষ্টম জ্যোতির্লিঙ্গ এবং মহারাষ্ট্রের নাসিকের গোদাবরী নদীর কাছে অবস্থিত।

৯) বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতির্লিঙ্গ। এটি ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে অবস্থিত। ভক্তরা একে বৈজনাথ বাবা বলেও ডাকে।

১০) নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি গুজরাটের গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত।

১১) রামেশ্বরম জ্যোতির্লিঙ্গ : এই জ্যোতির্লিঙ্গ অস্তিত্ব লাভ করে যখন, ভগবান রাম তাঁর স্ত্রী দেবী সীতাকে উদ্ধারের জন্য লঙ্কার দিকে যাচ্ছিলেন। এই জ্যোতির্লিঙ্গটি তামিলনাড়ুতে অবস্থিত।

১২) ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ : এটি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে অবস্থিত এবং শিবের রূপ হিসেবে বিবেচিত হয় যা ভক্তদের অনন্ত শান্তি ও সৌভাগ্যের আশীর্বাদ করে।

English summary

Maha Shivratri 2023: Know The Difference Between Jyotirlinga And Shivlinga

This year, devotees of Lord Shiva will be celebrating Maha Shivratri on 18 February 2023. On this day they all visit and worship different Jyotirlingas and Shivlingas but do you know what is the difference between them? Read the same below.
X
Desktop Bottom Promotion