Just In
কালীপূজা ২০২০ : জেনে নিন এবছরের কালীপূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি
দুর্গাপূজার রেশ কাটতে না কাটতেই, আরেক উৎসবে মেতে উঠতে চলেছে বাঙালি সহ ভারতবর্ষের সমস্ত মানুষ। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, তারপরই চারিদিকে ঝলমল করবে আলোয়। আর এই আলোর মাঝে বাঙালির ঘরে ঘরে পূজিত হবেন মা কালী। এই কালীপুজো বা শ্যামা পুজোকে বলা হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। এটি কেবল পশ্চিমবঙ্গেই নয়, অসম ও ওড়িশা সংলগ্ন সমস্ত অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুজো।
দুর্গাপুজো ও কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার পর, এই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন আপামর বাঙালি। মা কালীর পুজো ও দীপাবলি, একসঙ্গে পালনের মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠেন সকলে। হিন্দু সমাজে সারাবছর মা কালী মাতৃরূপে পূজিত হলেও, এই দীপাবলীর সময় কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত সাংবাৎসরিক দীপান্বিতা কালীপুজো বেশ জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে চলুন, জেনে নেওয়া যাক এবছর অর্থাৎ ২০২০ সালে কালীপূজার দিনক্ষণ ও তাৎপর্য সম্পর্কে।
২০২০ সালের কালীপূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি
বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকা অনুযায়ী কালী পূজার সময়,
বাংলা
-
২৮
কার্তিক,
১৪২৭
ইংরেজি
-
১৪
নভেম্বর
২০২০,
শনিবার
অমাবস্যা শুরু হবে
১৪ নভেম্বর, শনিবার দুপুর ১টা বেজে ৪০ মিনিট থেকে।
অমাবস্যা শেষ হবে
১৫ নভেম্বর, রবিবার সকাল ১১টা ১৯ মিনিটে।
তাৎপর্য
দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন এর জন্যই কালী পুজো করা হয়। মা কালী দেখতে ভয়ঙ্কর হলেও, তাঁর প্রকৃতিতে রয়েছে এক অন্য রূপ। দেবীর চেহারার মধ্যে প্রেম হয় ও যত্নশীল মা-কে দেখা যায়। তিনি তার ভক্তদের চারপাশে থাকা নেতিবাচক দিকগুলিকে সমস্ত শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিনাশ করেন।
দেবী কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, দেবতা ও অসুরদের যুদ্ধে যখন দেবতারা পরাজিত হন, তখন দেবতাদের প্রার্থনায় আদ্যাশক্তি ভগবতি পার্বতীর দেহ কোষ থেকে দেবী কৌশিকী আবির্ভূত হন। তখন ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন বলে তাঁর নাম হয় কালী বা কালিকা। যেহেতু মা কালী আদ্যাশক্তির দেবী, তাই শক্তি এবং সাহস অর্জন করার জন্য দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে থাকা ষড়রিপু অর্থাৎ কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মায়া এবং মাৎসর্য-ই হলো মানুষের সর্বনাশের কারণ। তাই এই ষড়রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মনের মধ্যে থাকা সকল অন্ধকার দূর করতে মায়ের আরাধনা করে হয়।
আরও পড়ুন : দীপাবলি ২০২০ : জেনে নিন দীপাবলি ও লক্ষ্মী পুজোর দিন-ক্ষণ
ইতিহাস অনুযায়ী আনুমানিক ১৮ শতকের শেষদিকে, বিশাল আকারে কালীপুজো সংগঠিত হয়েছিল নদীয়ার কৃষ্ণনগরে। প্রথমবার নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই পুজো উদযাপন করেন। আজ, সেই কালীপুজোই বাংলার অন্যতম পালিত উৎসবগুলির মধ্যে একটি।
কালীপুজোর আগের রাতে অনেকেই ভূতচতুর্দশী পালন করেন। অনেকে এই চতুর্দশীকে নরক চতুর্দশীও বলেন। এই দিনে সমস্ত অন্ধকার ঘোচাতে বাড়িতে ১৪টি আলো বা প্রদীপ জ্বালানো হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এই প্রদীপগুলি অশুভ শক্তি বা অশুভ আত্মাকে দূরে করে রক্ষা করবে পরিবারের সকলকে। অনেকেই আবার বলে থাকেন, এই প্রদীপ পূর্বপুরুষদের গত ১৪ প্রজন্মের স্মরণে জ্বালানো হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, কালীপুজোর আগের রাতে এই পূর্বপুরুষদের আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে। তাই প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি ভূত চতুর্দশীতে ওল, কেঁউ, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, জয়ন্তী, নিম, হেলঞ্চা, শাঞ্চে, পলতা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা, শুলফা, শুশনি, এই চোদ্দ ধরনের শাকও খাওয়ার রীতি আছে।