Just In
Jaya Ekadashi 2022 : জয়া একাদশীর ব্রত পালনে মোক্ষ লাভ হয়, জেনে নিন শুভক্ষণ ও ব্রতকথা
মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিকে বলা হয় জয়া একাদশী। বিশ্বাস করা হয় যে, জয়া একাদশী ব্রত পালন করলে মোক্ষ লাভ হয় এবং জীবনে চলমান সমস্ত দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলে। এছাড়া, জ্ঞানে-অজ্ঞানে করা সমস্ত পাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। জয়া একাদশীর দিন সমস্ত নিয়ম মেনে ভক্তিভরে পুজো ও উপবাস করলে বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভ সম্ভব হয়। পূজার সময় শ্রীহরিকে ফুল, জল, অক্ষত, রোলি নিবেদন করা উচিত। এই দিনে পূজার পর একাদশীর আরতি করা খুবই লাভদায়ক বলে বিবেচিত হয়।
পুরাণ অনুযায়ী, জয়া একাদশীর দিনে শ্রীবিষ্ণুর পুজো ও নাম জপ করলে পিশাচ যোনির ভয় থাকে না। তাহলে জেনে নিন, ২০২২ সালে জয়া একাদশী কবে পড়েছে এবং এই একাদশীর ব্রত কথা।
জয়া একাদশীর দিনক্ষণ
ইংরাজী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২০২২ সালে জয়া একাদশী পড়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি, শনিবার।
একাদশী তিথি শুরু হবে - ১১ ফেব্রুয়ারি, দুপুর ০১টা বেজে ৫২ মিনিটে
একাদশী তিথির সমাপ্ত - ১২ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ০৪টা বেজে ২৭ মিনিটে
ব্রতভঙ্গের সময় - ১৩ ফেব্রুয়ারি, সকাল ০৬টা ১০ মিনিট থেকে সকাল ০৮টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত।
জয়া একাদশী ব্রতের তাৎপর্য
একাদশী ব্রতকে সবচেয়ে কঠিন ব্রত বলে মনে করা হয়। ভগবান বিষ্ণুকে সন্তুষ্ট করার জন্য, ভক্তরা এই দিন নিষ্ঠাভরে তাঁর পূজা করে। বিশ্বাস করা হয়, যে ব্যক্তি পূর্ণ ভক্তি ও নিষ্ঠা সহকারে জয়া একাদশী ব্রত পালন করেন, তিনি এই ব্রতের পুণ্য ফলে ভূত, প্রেতাত্মা বা পিশাচ থেকে মুক্তি লাভ করেন। এছাড়া, মৃত্যুর পরে মোক্ষ প্রাপ্তিও হয়।
জয়া একাদশী ব্রত কথা
দেবরাজ ইন্দ্র একদিন নন্দন বনে অপ্সরাদের সঙ্গে গন্ধর্ব গান গাইছিলেন। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রসিদ্ধ গন্ধর্ব পুষ্পদন্ত ও তাঁর কন্যা পুষ্পবতী, চিত্রসেন ও তাঁর স্ত্রী মালিনী। মালিনীর পুত্র পুষ্পবান ও তাঁর ছেলে মাল্যবানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গন্ধর্ব কন্যা পুষ্পবতী, মাল্যবানকে দেখে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন এবং নিজের রূপের ছটায় মাল্যবানকে বশীভূত করেন। এরপরই ঘটে বড় অঘটন। সেখানে চলতে থাকা গানের বিপরীতে গিয়ে তাঁরা নিজেদের মন মতো গান গাইতে শুরু করেন। এতে দেবরাজ ইন্দ্র অত্যন্ত অপমানিত হন এবং দুজনকেই অভিশাপ দেন।
দেবরাজের অভিশাপের প্রভাবে হিমাচলের পার্বত্য এলাকায় তাঁরা দুজন দুঃখ-কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে শুরু করেন। যত দিন যায়, ততই তাঁদের কষ্টও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন তাঁরা দেবতার আরাধনা করে সংযমী জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এভাবেই মাঘ মাসে শুক্লপক্ষের একাদশী তিথির আগমন ঘটে। সেই দিনটি তাঁরা উপবাসেই কাটান। তারপর, সন্ধ্যের সময় অশ্বত্থ গাছের নীচে নিজেদের পাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশে ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ করেন। সারারাত জেগে ভগবানের আরাধনা করেন।
এরই পুণ্য প্রভাবে পরের দিন সকালে তাঁরা পিশাচ যোনি থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং অপ্সরার নবরূপ লাভ করে স্বর্গলোকে গমন করেন। সেই সময় স্বর্গলোক থেকে তাঁদের ওপর পুষ্পবৃষ্টি হয়। আর, দেবরাজ ইন্দ্র দুজনকেই ক্ষমা করে দেন।