Just In
হনুমান জয়ন্তী ২০২০ : হনুমান সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন!
আজ হনুমান জয়ন্তী। অন্যান্য দেবতাদের মতই হিন্দু ধর্মের অন্যতম শ্রদ্ধেয় দেবতা হলেন হনুমান। যাঁকে সাহস ও শক্তির প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ভগবান হনুমান হলেন রামায়ণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যাকে ভগবান শিবের একাদশতম অবতার বলে মনে করা হয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসে শুক্লপক্ষের ১৫তম দিন অর্থাৎ পূর্ণিমার দিন হনুমান জয়ন্তী পালন করা হয়। ভক্তরা মন্দের সঙ্গে লড়াই করতে এবং যুদ্ধে বিজয়ী হতে তাঁর উপাসনা করেন। তবে চলুন আজ এই বিশেষ দিনে দেখে নেওয়া যাক ভগবান হনুমান সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য।
১) ভক্তি, শক্তি এবং প্রচেষ্টার অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ভগবান হনুমানকে। হনুমান ছিলেন রুদ্র অর্থাৎ শিবের একাদশতম অবতার, পাশাপাশি তাঁকে পবন পুত্রও বলা হয়।
২) হনুমান এর পিতার নাম কেশরী এবং মাতার নাম অঞ্জনা। অঞ্জনা দেবীও ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত।
৩) আমরা অনেকেই হয়তো 'হনুমান’ নামের আসল অর্থ জানি না। সংস্কৃত ভাষায় 'হনু’ শব্দের অর্থ 'চোয়াল’ এবং 'মান’ শব্দের অর্থ 'বিশিষ্ট’ বা 'কদাকার’, অর্থাৎ "কদাকার চোয়ালবিশিষ্ট"।
৪) হনুমান জয়ন্তী চৈত্র মাসে শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয়।
আরও
পড়ুন
:
হনুমান
জয়ন্তী
২০২০
:
জেনে
নিন
এই
উৎসবের
দিন-ক্ষণ,
পূজা
বিধি
এবং
তাৎপর্য
সম্পর্কে
৫)
পবন
পুত্র
ব্রহ্মচারী
ছিলেন,
কখনও
বিবাহ
করেননি।
তবুও
তাঁর
এক
পুত্র
ছিল
মকরধ্বজ
।
স্বর্ণলঙ্কায়
অগ্নিকাণ্ডের
পরে
লেজের
আগুন
নেভাতে
হনুমান
লেজ
চুবিয়েছিলেন
সমুদ্রের
জলে।
তখন
তাঁর
এক
ফোঁটা
ঘাম
থেকে
জন্ম
হয়
মকরধ্বজের।
সেই
থেকেই
মকরধ্বজ
হনুমানকে
নিজের
পিতা
ভাবেন।
৬) হনুমান ভগবান রামের একনিষ্ঠ ভক্ত। আপনি যদি ভগবান হনুমানকে মুগ্ধ করতে চান তবে ভগবান রামের উপাসনা করুন।
৭) সংস্কৃত ভাষায় হনুমানের ১০৮ টি নাম রয়েছে।
রামায়ণ অনুযায়ী ভগবান হনুমান সম্পর্কে কিছু তথ্য
১) রামভক্ত হনুমানের ছিল পাঁচটি মুখ। রামায়ণ অনুযায়ী হনুমানের এই পঞ্চমুখের পিছনে আছে আকর্ষণীয় গল্প। রামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে রাবণ সাহায্য চান পাতালের শাসক মহীরাবণ এবং অভিরাবণের। মহীরাবণ বিভীষণের রূপ ধারণ করে রাম-লক্ষ্মণকে অপহরণ করে নিয়ে যান পাতালে। হনুমান তাঁদের খুঁজতে খুঁজতে পাতালের প্রবেশপথে মকরধ্বজকে দেখে হনুমান নিজের পরিচয় দেন এবং পথ ছেড়ে দেন মকরধ্বজ। পাতালে প্রবেশ করার পর দেখেন মহীরাবণ এবং অভিরাবণকে বিনাশ করতে হলে পাঁচটি দ্বীপ নেভাতে হবে। সেই দ্বীপের মুখ পাঁচদিকে অবস্থান করায় তা নেভাতে হনুমানও পাঁচটি মুখ ধারণ করলেন। ফুঁ দিয়ে পাঁচটি দীপ নিভিয়ে দিয়ে বিনাশ করলেন মহীরাবণের এবং উদ্ধার করলেন রাম-লক্ষ্মণকে।
২) হনুমানের এই পঞ্চমুখের স্বতন্ত্র নাম রয়েছে। সেগুলি হল- হনুমান, হয়গ্রীব, নরসিংহ, গরুড় এবং বরাহ। আবার হনুমানের পঞ্চমুখকে প্রার্থনার পাঁচটি রূপ- নমন, স্মরণ, কীর্তন, যাচন এবং অর্পণ এই পাঁচটির প্রতীক বলে মনে করেন অনেকে।
৩) রামায়ণ অনুযায়ী, নারদ মুনির প্ররোচনার শিকার হয়ে একবার ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে হনুমানকে বধ করতে গিয়েছিলেন রাম। তখনই হনুমান একমনে রামনাম জপ করতে থাকেন এবং সেই নামজপেই অকেজো হয়ে যায় সবচেয়ে শক্তিশালী এই দৈব অস্ত্র।
৪) রামায়ণ অনুযায়ী, হনুমানের লঙ্কাকাণ্ড আসলে ছিল একটি অভিশাপ যা বহুদিন আগে রাবণকে দিয়েছিলেন শিবের সেবক নন্দী।
৫) ভগবান হনুমান যখন জানতে পারেন যে রামের দীর্ঘায়ু কামনার জন্য সীতা তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর পরেন, তখন হনুমানও রামের দীর্ঘায়ু কামনার তাঁর সারা গায়ে সিঁদুর মেখে ফেলেন। মেটে সিঁদুরের রঙে পবন পুত্রের গায়ের রং হয়ে ওঠে কমলা। এজন্যই হনুমানের আর এক নাম বজরঙ্গবলি। কারণ, বজরং কথার অর্থ কমলালেবু।
৬) রামায়ণ অনুযায়ী, সীতা যখন হনুমানকে উপহার হিসাবে একটি সুন্দর মুক্তোর নেকলেস দিয়েছিলেন তখন হনুমান তা বিনীতভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। হনুমান বলেছিলেন যে তিনি তাঁর প্রভু রামের নাম ছাড়া এমন কোনও কিছু গ্রহণ করেন না। তাঁর এই কথাটি প্রমাণ করার জন্য সে তাঁর বুকটি চিরে ফেলে।