Just In
পাঁচ মিনিট ধরে এই নিয়মগুলি মেনে শিবের পুজো করলেই দেখবেন দেবাদিদেব আপনার গৃহস্থে আসন পেতেছেন!
এই লেখায় মাত্র পাঁচ মিনিটে দেবকে কীভাবে প্রসন্ন করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে সপ্তাহের প্রতিটি দিন কোনও না কোনও দেব-দেবীর আরাধনা করার জন্য বরাদ্দ রয়েছে। যেমন সোমবার শিব ঠাকুরের আরাধনা করার দিন। এদিন ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে দেবাদিদেবের অরাধনা করলে সর্বশক্তিমান এতটাই প্রসন্ন হন যে সুখে-শান্তিতে ভরে ওঠে জীবন। সেই সঙ্গে খারাপ শক্তির প্রভাবে কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি দেবের আশীর্বাদে ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স মোটা হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, মেলে আরও অনেক ধরনের উপকার। যেমন ধরুন শিব ঠাকুরের কৃপায় মনের জোর বাড়ে, রোগ-ব্যাধি সব দূরে পালায় এবং লোকের কুনজরের কারণে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না। তবে এতসব উপকার পেতে গেলে যে প্রথমে শিব ঠাকুরকে প্রসন্ন করতে হবে! আর এই কাজটি করবেন কীভাবে?
দেবকে খুশি করার অনেক রাস্তা রয়েছে। তবে সহজ রাস্তাটির যদি খোঁজ পেতে চান, তাহলে চোখ রাখতে হবে এই প্রবন্ধে। আসলে এই লেখায় মাত্র পাঁচ মিনিটে দেবকে কীভাবে প্রসন্ন করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সেই সঙ্গে শিব ঠাকুরের পুজো করার সময় দেবের সামনে কী কী ফুল নিবেদন করলে নীলকন্ঠ বেজায় খুশি হন, সে বিষয়ের উপরও আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই পাঁচ মিনিটের প্রার্থনাটি শুরু করার পর প্রতিটি মিনিটে যে যে উপাচারগুলি মেনে দেবের অরাধনা করতে হবে সেগুলি হল...
১. প্রথম মিনিটে:
সোমবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার জামা-কাপড় পরে শিব ঠাকুররে ছবি বা মূর্তিটা প্রথমে গঙ্গা জল দিয়ে ভাল করে মুছে নিতে হবে। তারপর শুরু করতে হবে অরাধনা। প্রথম মিনিটে দেবকে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করে এক মনে শিব ঠাকুররে নাম জপ করতে হবে। এমনটা করলে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা নানাবিধ সমস্যার পাহাড় সরে যেতে শুরু করবে। ফলে হারিয়ে যাওয়া মানসিক শান্তি ফিরে আসতে দেখবেন সময় লাগবে না।
২. দ্বিতীয় মিনিটে:
পরের মিনিটে ধূপ কাঠি জ্বালিয়ে দেবের মূর্তি বা ছবির চারিপাশে ৯ বার চক্কর কাটতে হবে। শাস্ত্র মতে এই উপাচারটি মেনে দেবের আরাধনা করলে নাকি বৈবাহিক জীবনে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানাবিধ সমস্যা মিটে যেতে যেমন সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে। ফলে গৃহস্তের অন্দরে সুখের ঝাঁপি খালি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
৪. তৃতীয় মিনিটে:
শিবের পুজোর তৃতীয় ঘাপে, অর্থাৎ তৃতীয় মিনিটে দেবের সামনে ৯ টি বেল পাতা রেখে এক মনে "ওম নম শিবায়", মন্ত্রটি জপ করতে হবে। প্রসঙ্গত, এই মন্ত্রটি ১০৮ বার পাঠ করলে মন শান্ত হবে, দুঃশ্চিন্তা দূর হবে এবং বাবা-মা হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতেও দেখবেন সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, শিব ঠাকরেরে অরাধনা করার সময় বেল পাতা নিবেদন করা কেন হয়, সে সম্পর্কে যদি জানতে হয়, তহালে বাকি প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন!
৪. চতুর্থ মিনিট:
বেল পাতা নিবেদন করে এক মিনিট শিব মন্ত্রটি জপ করার পর ধীরে ধীরে ঠান্ডা জল অথবা দুধ দিয়ে শিব লিঙ্গকে স্নান করাতে হবে। এমনটা ১ মিনিট ধরে করলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! কারণ শাস্ত্র মতে প্রতি সোমবার শিব লিঙ্গকে ঠান্ডা দুধ অথবা জল দিয়ে স্নান করালে সর্বশক্তিমান এতটাই প্রসন্ন হন যে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মন এবং শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতেও সময় লাগে না।
৫. পঞ্চম অর্থাৎ শেষ মিনিট:
দেবকে স্নান করানোর পর প্রদীপ এবং ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে দেবাদিদেবের অরতি করতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন যে কোনও অর্থনৈতিক সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে অনেক অনেক টাকায় পকেট ভরে ওঠার স্বপ্নও পূরণ হবে চোখের পলকে!
এই বিশেষ নিয়মগুলি মেনে পাঁচ মিনিট দেবের অরাধনা করার পাশাপাশি যদি এই ফুলগুলি শিব ঠাকুরের সামনে নিবেদন করতে পারেন, তাহলেও কিন্তু দেব খুব খুশি হন। ফলে মনের সব ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, যে যে ফুল দেবাদিদেবের বেজায় পছন্দের সেগুলি হল...
১. বেল পাতা:
এটি কোনও ফুল নয় ঠিকই, কিন্তু শাস্ত্রে বলে দেবাদিদেবের পুজো করার সময় যদি বেল পাতা নিবেদন করা হয়, তাহলে শিব ঠাকুর বেজায় প্রসন্ন হন। তাই তো এই পাতাটি ছাড়া দেবের পুজো কানও ভাবেই সম্ভব হয় না। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বেল পাতার জন্ম হয়েছে ভগবান ব্রহ্মার শরীর থেকে। তাই তো শুধু শিব ঠাকুরের পুজো নয়, যে কোনও মাঙ্গলিক কাজেই বেল পাতার ব্যবহার চোখে পরে।
২. ধুতুরা ফুল:
"মুন ফ্লাওয়ার" নামে পরিচিত এই ফুলটি দিয়ে শিব ঠাকুরের পুজো করলে খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে ভূত-প্রেত এবং কালো যাদুর প্রভাবও কমতে থাকে। ফলে এই সব নেগেটিভ শক্তির প্রভাবে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে কালো যাদুর কারণে পরিবারের কারও শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
৩. বকুল ফুল:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এক মনে ওম নম শিবায় মন্ত্রটি পাঠ করতে করতে যদি দেবের সামনে বকুল ফুল নিবেদন করা যায়, তাহলে মনের সব ইচ্ছা পূরণ তো হয়ই, সেই সঙ্গে মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, পরিবারের অন্দরে কোনও ধরনের কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে।
৪. আকন্দ ফুল:
শাস্ত্রে বলে এই ফুলটি দিয়ে প্রতি সোমবার দেবাদিদেবের অরাধনা করলে অতীতে করা যে কোনও পাপ কাজের কারণে শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে যে যে রোগের প্রকোপ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তারা বেশিরভাগের সঙ্গেই স্ট্রেসের যোগ রয়েছে। তাই নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন যে সুস্থ থাকতে আকন্দ ফুল দিয়ে দেবের অরাধনা করার প্রয়োজন কতটা।
৫. জবা ফুল:
এই ফুলটির নাম শুনে কি অবাক হয়ে গেলেন বন্ধু! তাহলে জনিয়ে রাখি বন্ধু জবা ফুল শিব ঠাকুরের খুব পছন্দের। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে জবা ফুলের মালা দিয়ে দেবের পুজো করলে কারও করা যে কানও পাপ কাজের খণ্ডন ঘটে যায়। ফলে পাপের শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে স্বর্গলাভের পথও প্রশস্ত হয়। শুধু তাই নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি সোমবার যদি এই ফুলটি দিয়ে দেবের অরাধনা করা হয়, তাহলে আরও বেশি মাত্রায় ফল মেলে।
৬. গোলাপ ফুল:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে আটটি গোলাপ ফুল দিয়ে প্রতিদিন দেবের পুজো করলে জীবন পথে সামনে আসা যে কোনও বাঁধার পাহাড় সরে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে খারাপ শক্তির প্রভাবও কমতে শুরু করে। ফলে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।
৭. পদ্ম ফুল:
অল্প সময় অনেকে অনেক টাকার মালিক হতে চান নাকি? তাহলে বন্ধু নীল পদ্ম দিয়ে শিব ঠাকুরেরে আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই ফুলটি দিয়ে সর্বশক্তিমানের আরাধনা করলে দেব তো প্রসন্ন হনই, সেই সঙ্গে গৃহস্থের অন্দরে মা লক্ষ্মীর প্রবেশ ঘটে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কোনও সময়ে টাকার সমস্যায় পরার আশঙ্কাও যায় কমে।