Just In
সাবধান: বাড়িতে শিব লিঙ্গ রাখলে ভুলেও এই কাজগুলি করবেন না যেন!
একান্তই যদি বাড়িতে শিব লিঙ্গ স্থাপন করতে হয়, তাহলে সব নিয়মবিধি মেনে এমনটা করা উচিত। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে গৃহস্থের অন্দরে শিব অবস্থান করলে মেনে চলতে হয় আরও বেশি কিছু নিয়ম।
অনেকই বিশ্বাস করেন বাড়িতে শিব লিঙ্গ রাখা একেবারেই উচিত নয়। কথাটা যে একেবারে ভুল, এমন নয়। কারণ ভগবান শিবের পুজো যে যে নিয়ম মেনে করা উচিত, আজকের ডেটে অনেকের পক্ষেই এত নিয়ম মেনে পুজো করা সম্ভব নয়। এর পিছনে মূল কারণ সময়ের অভাব। আর ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে দেবের পুজো করতে না পারলে উপকারের থেকে অপকার হয় বেশি। শুধু তাই নয়, নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।
তাই একান্তই যদি বাড়িতে শিব লিঙ্গ স্থাপন করতে হয়, তাহলে সব নিয়মবিধি মেনে এমনটা করা উচিত। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে গৃহস্থের অন্দরে শিব অবস্থান করলে মেনে চলতে হয় আরও বেশি কিছু নিয়ম। যেমন ধরুন শিব লিঙ্গের উপরে স্থাপন করতে হবে একটি জলের আধার। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে লিঙ্গের অন্দরে বিপুল পরিমাণে শক্তি মজুত থাকে, তাই তো প্রতি মুহূর্তে লিঙ্গকে যদি ঠান্ডা রাখা না যায়, তাহলে পরিবারের অন্দরে নেগেটিভ শক্তির প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে একের পর এক খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় বেড়ে।
এখানেই শেষ নয়, সারা জীবন দেবাদিদেবের আশীর্বাদ আপনার মাথার উপর থাকুক, এমনটা যদি চান, তাহলে জলাধার স্থাপন করার পাশাপাশি মেনে চলতে হবে আরও কিছু নিয়ম। যেমন ধরুন...
১. স্থান নির্বাচন:
বাড়ির এমন জায়গায় শিব লিঙ্গ স্থাপন করতে হবে যেখানে অপনি সহজ পৌঁছে যেতে পারবেন। কারণ প্রতিদিন লিঙ্গের পুজো করাটা জরুরি। তাই তো কোনও উঁচু জায়গায় শিব লিঙ্গ স্থাপন করতে মানা করা হয়। প্রসঙ্গত, খেয়াল করে পরিষ্কার জায়গায় স্থাপন করতে হবে লিঙ্গ। আর ভুলেও মাটিতে রাখা যাবে লিঙ্গকে। একান্তই যদি মাটিতে রাখতে হয়, তাহলে পরিষ্কার একটা কাপড় পেতে তার উপর স্থাপন করতে হবে শিব লিঙ্গকে।
২. হলুদ:
শাস্ত্র মতে ভুলেও শিব লিঙ্গের গায়ে হলুদ লাগাবেন না। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি মহিলাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজে লাগানো হয়ে থাকে। এই কারণেই তো লিঙ্গের গায়ে হলুদ লাগাতে মানা করা হয়।
৩. সিঁদুর:
স্বামীর আয়ু যাতে বৃদ্ধি পায় এই কামনা করেই সিঁথিতে সিঁদুর লাগান বিবাহিত মহিলারা। এই কারণেই ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে পরিচিত শিবের পুজো করার সময় লিঙ্গের গায়ে ভুলেও সিঁদুর লাগানো উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, বিশেষত বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে। তাই স্বামীর মঙ্গল যদি চান, তাহলে লিঙ্গের পুজো করার সময় ভুলেও সিঁদুর ব্যবহার করবেন না।
৪. লিঙ্গকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গেলে:
এমনটা যদি করতে হয়, তাহলে যে জায়গায় শিব লিঙ্গকে স্থাপন করতে চলেছেন সেই জায়গাটি গঙ্গা জল এবং দুধ দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর পরিষ্কার কাপড় পেতে সেখানে স্থাপন করতে হবে লিঙ্গকে।
৫. ঠান্ডা দুধ:
শিব লিঙ্গের পুজো করার সময় লিঙ্গকে দুধ দিয়ে স্নান করাতে হয়। এক্ষেত্র একটি নিয়ম সব সময় মাথায় রাখা জরুরি। কী নিয়ম? ভুলেও প্যাকেট থেকে সরাসরি দুধ লিঙ্গের শরীরে ঢালবেন না। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন দুধটা যেন মারাত্মক ঠান্ডা না হয়। এক্ষেত্রে পরিষ্কার একটি পাত্রে দুধটা ঢেলে নিয়ে তারপর তা থেকে শিব লিঙ্গের শরীরে ঢালতে হবে। আর যদি দেখেন দুধটা বেশ ঠান্ডা, তাহলে একটু গরম করে নিতে হবে।
৬. সাপের অবস্থান:
যখনই শিব লিঙ্গ কিনবেন, তখন খেয়াল করে দেখে নেবেন লিঙ্গের শরীরে সাপ রয়েছে কিনা। কারণ শিবের সঙ্গে সাপের সম্পর্ক বেজায় গভীর। তাই তো তাকে ছাড়া লিঙ্গকে স্থাপন করা একেবারেই উচিত নয়।
৭. মা দুর্গা এবং গণেশ:
শাস্ত্র মতে বাড়িতে শিব লিঙ্গ স্থাপন করলে সেই সঙ্গে মা দুর্গা এবং গণেশ ঠাকুরকেও স্থাপন করতে হবে। কারণ দেবাদিদেব শিব একা কখনও থাকতে চান না। তাঁকে তার পরিবারের সঙ্গে রাখলে আপনার পরিবারের প্রতিটি সদস্যের উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সুখ-সমৃদ্ধির পথও প্রশস্ত হয়।
৮. ভুলেও তুলসি পাতা নয়:
শিব লিঙ্গের পুজো করার সময় ভুল করেও তুলসি পাতা নিবেদন করা চলবে না। বরং দেবাদিদেবের পুজো করতে হবে বেল পাতা দিয়ে। প্রসঙ্গত, নিয়মিত দুধ, গঙ্গা জল এবং বেল পাতা সহযোগে শিবের পুজো করলে তিনি বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে পরিবারের অন্দরে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা যে কোনও সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
৯. চন্দন:
প্রতিদিন সকালে স্নান সেরে শিব লিঙ্গের উপরে চন্দনের পেস্ট দিয়ে তিলক এঁকে দিতে হবে। এমনটা কেন করা উচিত জানা আছে? কারণ শাস্ত্রে মতে চন্দন পেস্ট লিঙ্গের শরীরে লাগালে দেবাদিদেব ঠান্ডা থাকেন। সেই সঙ্গে যে জায়গায় লিঙ্গ রাখা হয়েছে সেই জায়গাটি পবিত্র হয় ওটে। ফলে ভগবান শিবের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।