For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

শিবরাত্রি স্পেশাল : শিবের মতই তৃতীয় চক্ষুর অধিকারি হতে চান নাকি?

গল্প-গাঁথায় আমরা বহুবার পড়েছি দেবাদিদেব মহাদেব যখন রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন, তখন খুলে যায় তাঁর তৃতীয় চক্ষু এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংসের সম্মুখিন হয় ত্রিভূবন।

By Nayan
|

গল্প-গাঁথায় আমরা বহুবার পড়েছি দেবাদিদেব মহাদেব যখন রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন, তখন খুলে যায় তাঁর তৃতীয় চক্ষু এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংসের সম্মুখিন হয় ত্রিভূবন। কিন্তু একথা জানা আছে কি মহাদেবের মতোই তৃতীয় চক্ষুর অধিকারি অপনিও হতে পারেন। এবং নিজের দেহের অন্দরে জাগিয়ে তুলতে পারেন অপার শক্তি।

কীভাবে এমনটা করবেন তাই ভাবছেন তো? এই উত্তর পাবেন, তবে তার আগে জেনে নেওয়া জরুরি যে তৃতীয় চক্ষু আদতে কী? একাধিক গ্রান্থানুসারে এটি আসলে একটি রূপক মাত্র। দেবাদিদেব নিজের অন্দরে সৃষ্টি হওয়া নানা খারাপ কিছুকে ধ্বংস করে দেন। আর তা থেকে জন্ম হাওয়া ছাইকে উড়িয়ে দেন প্রকৃতির মাঝে, যাকে নানা বইয়ে তৃতীয় চক্ষুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। সহজ কথায় রাগ, হিংসা এবং খেদের মতো নানা খারাপ চিন্তাকে মেরে ফেলাই তো তৃতীয় চক্ষুর আসল কাজ। তাই তো যোগীরা বলেন মহাদেবের মতো আমরা যদি তৃতীয় চোখকে একবার খুলতে পারি, তাহলে জীবন হয়ে উঠবে ক্লেশমুক্ত, বাঁধাহীন। আর এমনটা হলে খুশির দরজা খুলতে যে সময় লাগবে না, সে কথা আর বলে দিতে হবে! তাই বন্ধুরা শীবরাত্রিরের প্রাকাল্লে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন, যত অন্ধকার লুকিয়ে রয়েছে মনের অন্দরে, তাকে আলোকিত করবেন তৃতীয় চক্ষু থেকে বেরিয়ে আসা আগুনের মাধ্যমে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেবেন সব খারাপ কিছুকে। আর সেই আগুন থেকে জন্ম হবে এক নতুন মানুষের, যে ঘৃনাকে নয়, ভালবাসাতে জানবে, খারাপকে নয়, ভালকে আলিঙ্গন করবে। আর সেই সঙ্গে প্রাণ, মন এবং মস্তিষ্ককে সমৃদ্ধ করে তুলবে জ্ঞানের আলোয়।

তৃতীয় চক্ষু তখনই উন্মুক্ত হবে, যখন আমাদের শরীরে অন্দরে থাকা চক্রদের আমরা অ্যাকিটেভ করতে পারবো। কারণ চক্র যত শক্তিশালী হয়ে উঠবে, তত আমাদের "সিক্স সেন্স" শক্তিশালী হবে, আর এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই জ্ঞান-বুদ্ধির বিকাশ ঘটতে সময় লাগবে না। ফলে জীবনের মান উন্নত হবে। তাই আর অপেক্ষা নয়, যদি টেনশন এবং স্ট্রেস ফ্রি জীবনযাপন করতে চান, তাহলে এই প্রবন্ধে চোখ রেখে জেনে নিন কীভাবে নিজের অন্দরে লুকিয়ে থাকা তৃতীয় চক্ষুর বিকাশ ঘটাবেন।

এক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম মেনে চললেই দেখবেন আপনার কপালেও ধীরে ধীরে জেগে উঠবে একটি অদৃশ্য চোখ, যা আপনাকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে! প্রসঙ্গত, যে যে নিয়ম মেনে চলতে হবে, সেগুলি হল...

১. নিস্তব্ধতার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান:

১. নিস্তব্ধতার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান:

এই শব্দহীনতা আসলে পারিপার্শিক নয়, অন্দরের। মানে! খেয়াল করে দেখবেন সারাক্ষণ কিছু না কিছু আমরা ভেবেই চলেছি। আমাদের মস্তিষ্ক যেন ২৪ ঘন্টা কাজ করছে। তবে সব ভাবনাই যে কাজের, তা যদিও নয়। তাই তো খারাপ ভাবনাকে মেরে তৃতীয় চক্ষুর শক্তিকে বাড়াতে মস্তিষ্ককে শান্ত করতে হবে। মনের অন্দরে কোনও ভাবনা যাতে শব্দের স্বন্দন সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজটি করতে মেডিটেশনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো নিয়মিত অল্প একটু সময় বিনিয়োগ করে যদি ধ্যান করলে শরীরের অন্দরে পরিবর্তন আসতে শুরু করে, আর এই পরিবর্তন যত জোড়াল হয়, তত তৃতীয় চক্ষু খুলতে শুরু করে।

২. সুক্ষ অনুভূতিকে জাগাতে হবে:

২. সুক্ষ অনুভূতিকে জাগাতে হবে:

প্রচন্ড আওয়াজের মাঝে দাঁড়িয়ে পাখির ডাক শুনতে পাওয়া যায় কি? না তো! ঠিক তেমনি তৃতীয় চক্ষু বা সিক্স সেন্সকে অনুভব করতে হলে মনের অন্দরকে শান্ত করে সুক্ষ অনুভূতির জন্ম দিতে হবে। আর এই কাজটি করা তখনই সম্ভব হবে, যখন আপনি নিজেকে সম্পূর্ণরূপে জেনে উঠবেন। আর এমনটা করবেন কীভাবে? বিশেষজ্ঞদের মতে আমার মানুষ হিসেবে কেমন, তা জানার সবথেকে ভাল উপায় হল নিজের চিন্তাকে বিশ্লেষণ করা। কেমন ধরনের চিন্তা আসে আপনার মনে? কী কী কাজ আপনি বাকিদের থেকে বেশি ভালভাবে করতে পারেন? সহজে রেগে যান, না আপনি শান্ত মনের? নিজের সম্পর্কে এমন নানা প্রশ্নের জবাব পেতে পেতে দেখবেন এক সময় নিজেকে জেনে উঠতে পেরেছেন, আর যখনই এমনটা করতে পারবেন, তখন দেখবেন মনের একেবারে গভীর তল থেকে জন্ম নেওয়া সুক্ষ অনুভূতিকেও পাকড়াতে পারছেন, বুঝতে পারছেন কেউ যেন ভিতর থেকে আপনাকে গাইড করছে খারাপ থেকে দূরে থাকার জন্য। এই অনুভূতেকেই তো আমরা সিক্স সেন্স বলি ,তাই না! আর সিক্স সেন্সই তো হল তৃতীয় চক্ষু।

৩. ব্রেন পাওয়ার বাড়ান:

৩. ব্রেন পাওয়ার বাড়ান:

বিজ্ঞানীরা প্রায়শই বলে থাকেন মানুষ নানা কিছু আবিষ্কার করছে ঠিকই, কিন্তু নিজের মস্তিষ্ককে অবিষ্কার করার কোনও চেষ্টাই তারা করছেন না। একবার কেউ যদি নিজের মস্তিষ্কের অন্দরে লুকিয়ে থাকা অফুরন্ত শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে পারেন, তাহলে সাফল্য় তার চিরসঙ্গী হবে। আর মস্তিষ্কের এই ক্ষমতাই তো এক কথায় তৃতীয় চক্ষু। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব? এক্ষেত্রে প্রাণায়মের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তবে আরেকটি সহজ পদ্ধতিও আছে। কী সেই পদ্ধতি? নিজের কল্পনা শক্তিকে বাড়ান। চোখ বন্ধ করে মনের ক্যানভাসে নানা কিছু আঁকতে শুরু করেন। এক কথায় নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে আরও বাড়ান। যত এমনটা করবেন, তত মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশের ক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে অবশ্যই বাড়বে তৃতীয় চক্ষুর ক্ষমতাও।

৪. ভিতকে শক্তপোক্ত করতে হবে:

৪. ভিতকে শক্তপোক্ত করতে হবে:

বাড়ি যখন তৈরি হয়, তখন প্রথমেই তার ভিতকে মজবুত বানানো হয়, না হলে বাড়ি ভেঙে পরার আশঙ্কা থাকে। একই ভাবে তৃতীয় চোখের শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে সারা শরীরে এনার্জির ভারসাম্যকে ঠিক রাখতে হবে, এমনটা না হলে কিন্তু কখনই তৃতীয় চক্ষুর উন্মুক্তি ঘটবে না। আর এনার্জির ভারসাম্যকে যদি ঠিক রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত প্রাণয়ম করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাণায়ম করার সময় দুচোখের মাঝে প্রদীপ শিখা জ্বলে রয়েছে, এমনটা যদি ভাবতে পারেন। তাহলে আরও দ্রুত উপকার মেলে।

৫. পিনাল গ্ল্যান্ড এবং তৃতীয় চক্ষু:

৫. পিনাল গ্ল্যান্ড এবং তৃতীয় চক্ষু:

আধ্যাত্মিকতার ভাষায় যা তৃতীয় চক্ষু, বিজ্ঞানের ভাষায় তা হল পিটুইটারি বা পিনাল গ্ল্যান্ড। প্রাণায়ম করার মাধ্যমে একবার যদি এই গ্ল্যান্ডটির উপর কারও নিয়ন্ত্রণ এসে যায়, তাহলে শরীরে প্রতি ছোট-বড় কাজের উপর ধীরে ধীরে কন্ট্রোল আসতে শুরু করে। ফলে মন এবং শরীর একদিকে যেমন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পায় না, তেমনি নানাবিধ রোগ-ভোগের আশঙ্কাও হ্রাস পায়। পিনাল গ্ল্যান্ডের অবস্থান ঠিক কোন জয়গায়? দুটি ভুরুর মাঝে এর অবস্থান, মানে ঠিক যেখানে তৃতীয় চক্ষুকে কল্পনা করা হয়ে থাকে। এবার বুঝেছেন তো তৃতীয় চক্ষুর ধরণা যতটা ধর্ম নির্ভর, ততটাই কিন্তু বিজ্ঞান নির্ভর।

English summary

গল্প-গাঁথায় আমরা বহুবার পড়েছি দেবাদিদেব মহাদেব যখন রুদ্র মূর্তি ধারণ করেন, তখন খুলে যায় তাঁর তৃতীয় চক্ষু এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংসের সম্মুখিন হয় ত্রিভূবন। কিন্তু একথা জানা আছে কি মহাদেবের মতোই তৃতীয় চক্ষুর অধিকারি অপনিও হতে পারেন। এবং নিজের দেহের অন্দরে জাগিয়ে তুলতে পারেন অপার শক্তি।

The most significant aspect of Shiva is that he opened his third eye. He did many other things—he danced, he meditated, he married twice. But it is only because he opened his third eye that we remember him. After thousands of years, we still bow down to him because there is no substitute for knowing. To know is to be free. And there is no way to know unless your perception is enhanced.
X
Desktop Bottom Promotion