For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

৫১ পীঠের কতগুলি ভারতে আছে?

By Swaity Das
|

সত্যযুগে দক্ষ রাজা নিজের রাজপুরীতে মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞে দেবতা, মুনি-ঋষি, যক্ষ, কিন্নর সকলকে নিমন্ত্রণ করলেও, নিজের মেয়ে সতী এবং জামাই শিবকে নিমন্ত্রণ জানাননি। বিনা আমন্ত্রণে যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হলে, সতীর সামনেই দক্ষ শিবের নিন্দা করেন। পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে যজ্ঞকুণ্ডে আত্মাহুতি দেন সতী। তখন শিব ক্রুদ্ধ হয়ে সতীর শবদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বসংসার ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন।

তখন শ্রীবিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। এতে সতীর দেহের টুকরোগুলি বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীতে পড়ামাত্রই সেগুলি প্রস্তরখণ্ডে পরিণত হয়। এই জায়গাগুলিই আজ শক্তি আরাধনার পীঠস্থান। শক্তিপীঠগুলির সংখ্যা নিয়ে ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে মতভেদ আছে। বিভিন্ন পুরানের মতানুসারে চারটি প্রধান শক্তিপীঠ আছে।

51 pith of sati in bengali

কালীঘাট

৫১ সতীপীঠের একটি কলকাতার আদিগঙ্গার তীরে কালীঘাট। শোনা যায়, এখানে দেবীর ডান পায়ের চারটি মতান্তরে একটি আঙ্গুল পড়েছিল। কালিকা পুরানের মতে, এখানে দেবীর মুখ পড়ে ছিল। দেবী দক্ষিণাকালি নামে পরিচিত এখানে। বড়িশার সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী, তাঁর পুত্র রামলাল ও ভ্রাতুষ্পুত্র লক্ষ্মীকান্তের উদ্যোগে আদিগঙ্গার তীরে বর্তমান মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে।

কামাখ্যা

আসামের রাজধানী গুয়াহাটি শহরের পশ্চিমে নীলাচল পর্বতে অবস্থিত এই মন্দির। দেবীর যোনিদেশ পড়েছিল বলে এখানকার আরাধ্যা দেবীর নাম কামাখ্যা। শোনা যায় দেবীর যোনিদেশ এখানে পড়ায় পাহারটি নীলবর্ণ ধারন করেছিল।

জগন্নাথধাম

ওড়িশার পুরী শহরের মন্দির চত্বরে অবস্থিত এই মন্দির। শাক্ত ও তান্ত্রিকদের কাছে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ এটি। কথিত আছে, এখানে সতীর পা দুটি পড়েছিল এখানে। তাই এটি একটি প্রধান পীঠ। ভিন্নমতে এখানে পড়েছিল সতীর উচ্ছিষ্ট।

তারাতারিণী মন্দির

ওড়িশার ব্রক্ষ্মপুরের কাছে পড়ে ছিল সতীর স্তনযুগল। ঋষিকুল্যা নদীর তীরে তাঁর পূজা হয়। ওড়িশার ঘরে ঘরেও তারা তারিণী পুজিতা হন।

তারাপীঠ

বীরভূম জেলার রামপুরহাটে পড়ে ছিল দেবীর নয়ন তারা। এই সিদ্ধপীঠে সাধনা করেন বহু সাধক।

ক্ষীরগ্রাম

বর্ধমানের ক্ষীরগ্রাম। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এখানে সতীর আঙুলসহ ডান পায়ের পাতা পড়েছিল। দেবীকে এখানে যোগাদ্যা রুপে পূজা করা হয়।

ভৈরব পাহাড়

মধ্যপ্রদেশের অবন্তী নগরে ভৈরব পাহাড়ে পড়েছিল দেবীর ওষ্ঠ। এখানে দেবী অবন্তি নামে পরিচিত।

নলহাটি

বীরভূম জেলায় অবস্থিত নলহাটিতে দেবীর কণ্ঠনলা পড়েছিল। এখানে দেবী নলাটেশ্বরি নামে পরিচিত।

অট্টহাস

বীরভূমের লাভপুর গ্রামের কাছে দেবীর অধর পতিত হয়। দেবীর নাম ফুল্লরা।

বহুলা

বর্ধমানে অজয় নদীর তীরে বহুলা গ্রামে দেবীর বাম হাত পতিত হয়। দেবী এখানে বহুলা নামেই পরিচিত।

বক্রেশ্বর

বীরভূমের সিউড়ির কাছে দেবীর ভ্রুযুগলের মাঝের অংশ পতিত হয় এখানে। দেবীর নাম মহিষমর্দিনী।

ভবানীপুর

বাংলাদেশের রাজশাহীর শেরপুরে করতোয়া নদীর তীরে দেবীর বাম পায়ের মল বা নূপুর (মতান্তরে বাঁ নিতম্ব এবং পোশাক) পতিত হয়। দেবীর নাম অপর্ণা।

ছিন্নমস্তিকা

হিমাচলপ্রদেশের উর্ণা অঞ্চলের চিৎপূর্ণীতে দেবীর পায়ের পাতা পতিত হয়। দেবীর নাম এখানে ছিন্নমস্তিকা।

জয়ন্তী

মেঘালয়ের জয়ন্তী পাহাড়ে দেবীর বাম ঊরু পতিত হয়। দেবীর নাম জয়ন্তী।

জ্বালামুখী

হিমাচলপ্রদেশের কাঙরা অঞ্চলে অবস্থিত এই সতীপীঠে দেবীর জিভ পতিত হয়। দেবী এখানে সিদ্ধিদা বা অম্বিকা নামে পূজিতা।

অমরকণ্টক বা শোণ

মধ্যপ্রদেশের শোণ নদীর পারে এই পবিত্র তীর্থস্থানে দেবীর বাম নিতম্ভ পতিত হয়। দেবী এখানে কালীরূপা।

কন্যাকুমারীকা

ভারতের মূল ভূখন্ডের সবচেয়ে দক্ষিণে এই শক্তিপীঠে দেবীর পিঠ পতিত হয়। দেবীর নাম এখানে সর্বাণী।

কঙ্কালীতলা

বীরভূমের কোপাই নদীর তীরে এই শক্তিপীঠে দেবীর শ্রোণি পতিত হয়। দেবী স্থানীয়দের কাছে কঙ্কালেশ্বরী বা দেবগর্ভা নামে পরিচিত।

চামুন্ডেশ্বরী

সতীর দুই কান এসে পড়ে এখানে| বর্তমানে এই তীর্থক্ষেত্রটি মাইসোরে চামুণ্ডি পাহাড়ের উপরে|

কিরীটেশ্বরী

মুর্শিদাবাদের কিরীটকোনা গ্রামে দেবীর মাথার মুকুট পতিত হয়। দেবীকে মুকটেশ্বরী নামেও ডাকা হয়।

রত্নাবলী

হুগলীর খানাকুল-কৃষ্ণনগরের রত্নাকর নদীর তীরে দেবীর দক্ষিণ স্কন্ধ পতিত হয়। অন্য মতে, এই তীর্থক্ষেত্র তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে|

ভ্রামরী

জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর তীরে শালবাড়ি গ্রামে পড়েছিল সতীর বাঁ পায়ের পাতা। দেবী ভ্রামরী নামে পরিচিত।

মানস

তিব্বতের মানস সরোবরের কাছে কৈলাসের পাদদেশে দেবীর দক্ষিণ হস্ত পতিত হয়। দেবী এখানে দাক্ষায়ণী নামে পরিচিত।

পুষ্কর

রাজস্থানের পুষ্করে দেবীর কবজি পতিত হয়। দেবীর নাম এখানে গায়ত্রী।

মিথিলা

দেবীর দক্ষিণ স্কন্ধ পতিত হয় এখানে। দেবীর নাম এখানে উমা।

প্রভাস

মুম্বইয়ের কাছে এখানে সতীর পাকস্থলি পড়েছিল| দেবীর নাম চন্দ্রভাগা|

সূচিদেশ

ছত্তিসগড়ের জগদলপুরে দন্তেওয়াড়াতে পড়েছিল দেবীর উপরের পাটির দাঁত| দেবী এখানে নারায়ণী |

বৃন্দাবন

সতীর কেশরাশি পড়েছিল এখানে| দেবী এখানে উমা।

অমরনাথ

সতীর ঘাড়ের আর এক অংশ পড়েছিল এখানে| দেবী এখানে মহামায়া|

মানবক্ষেত্র

সতীর ডান হাতের তালু পড়েছিল এখানে| কোগ্রামের এই পুণ্যভূমিতে সতীর অপর নাম দাক্ষ্যায়ণী|

উজ্জয়িনী

মধ্যপ্রদেশের এই স্থানে পড়েছিল দেবীর কনুই| তিনি পূজিত হন মঙ্গলচণ্ডী।

প্রয়াগ

এলাহাবাদের ত্রিবেণী সঙ্গমে পড়েছিল সতীর হাতের দশ আঙুল| দেবীর নাম এখানে ললিতা।

জলন্ধর

পাঞ্জাবের এই অঞ্চলে পড়েছিল সতীর ডান স্তনের কিছুটা অংশ| দেবী এখানে ত্রিপুরমালিনী।

রামগিরি

ছত্তিসগড়ে বিলাসপুরের কাছে দেবীর বাম স্তনের কিছু অংশ পড়েছিল| সতী এখানে শিবানী।

বৈদ্যনাথধাম

এই তীর্থক্ষেত্রে পড়েছিল সতীর হৃৎপিণ্ড| দেবীর নাম জয়দুর্গা।

বোলপুর

কোপাই নদীর তীর পড়েছিল সতীর কঙ্কাল| তিনি এখানে দেবগর্ভা।

কালমাধব

অসমের শক্তি পীঠ| এখানে পড়েছিল সতীর ডান দিকের নিতম্ব| দুর্গা এখানে কালী|

পাটনা

এখানে নাকি পড়েছিল সতীর ডানদিকের থাই| দেবী এখানে সর্বনন্দোদরী।

ত্রিপুরা

দেবীর ডান দিকের পায়ের পাতা পড়েছিল এখানে| সতীর নাম এখানে ত্রিপুরাসুন্দরী|

কুরুক্ষেত্র

এখানে পড়েছিল সতীর ডান পায়ের গোড়ালি| তাঁর নাম এখানে সাবিত্রী বা স্থানু|

বারাণসী

কাশীধামও একটি শক্তি পীঠ| সতীর কানের দুল পড়েছিল এখানে| তিনি এখানে বিশ্বলক্ষ্মী।

English summary

শ্রীবিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। এতে সতীর দেহের টুকরোগুলি বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীতে পড়ামাত্রই সেগুলি প্রস্তরখণ্ডে পরিণত হয়। এই জায়গাগুলিই আজ শক্তি আরাধনার পীঠস্থান।

The history of Daksha yagna and Sati's self immolation had immense significance in shaping the ancient Sanskrit literature and even had impact on the culture of India. It led to the development of the concept of Shakti Peethas and thereby strengthening Shaktism. Enormous stories in Puranas and other Hindu religious books took the Daksha yagna as the reason for its origin.
Story first published: Thursday, October 19, 2017, 11:42 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion