Just In
দুগ্গা পুজো: সব স্বপ্ন পূরণ হোক এমনটা চান নাকি? তাহলে পুজোর চারদিন এই মন্ত্রগুলি পাঠ করতে ভুলবেন
ধনে নিন আপনার বয়স ২৫। তাহলে বলা যেতেই পারে যে টেকনিকালি আপনি সচেতনভাবে কম-বেশি ২০-২২ টা দূর্গা পুজোয় সামিল হয়েছেন। সামিন মানে ওই আর কী! কারণ আমি, আপনি আমাদের সবার কাছে দুগ্গা পুজো মানে তো ফ্যাশন শো আর সঙ্গে লেজুড় "খানা-পিনা"। তাই মা দুগ্গা তো ফুল ব্যাক সিটে! কি তাই না?
একেবারেই ঠিক! কিন্তু এমনটা হওয়াতে তো ব্যাপক মজা হয়! আলবাৎ...! একদম ঠিক বলেছেন, কিন্তু মায়ের আশীর্বাদ মেলে কি? না, সে ভাড়ার তো শূন্যই থেকে যায়। তাই তো চার দিন পরেই শুরু হয়ে যায় জীবন যুদ্ধ। তখন আর অফুরন্ত আনন্দের জায়গায় স্থান পায় স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তা! কিন্তু আপনি যদি চান, তাহলে এবারের দুর্গা পুজোর পরের সময়টা কিন্তু বেজায় সুখকর হতে পারে...! কীভাবে?
আসলে বন্ধু এই লেখায় পুরান থেকে খুঁজে খুঁজে এমন কিছু দুর্গা মন্ত্রের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা পুজোর চারদিন সকাল-বিকাল এক মনে পাঠ করলে মনের সব ইচ্ছা তো পূরণ হয়ই, সেই সঙ্গে "বোনাস" হিসেবে আরও কিছু সুফল মেলে। যেমন ধরুন- বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন দিনের আলো দেখে, অফিসে সম্মান বাড়ে, সঙ্গে মাইনেও। আর সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ-শান্তিও বজায় থাকে। ফলে জীবনের প্রতিটা দিন বেজায় অনন্দে ভরে ওঠে। তাই তো বলি বন্ধু বাকি জীবনটা যদি কেঁদে-কেটে কাটাতে না চান, তাহলে এই প্রবন্ধেটি পড়তে ভুলবেন না যেন!
প্রসঙ্গত, যে যে শক্তিশালী দুর্গা মন্ত্রগুলি বাস্তবিকই মিরাকেল ঘটায়, সেগুলি হল...
১. মা ব্রহ্মচারী মন্ত্র:
শাস্ত্র মতে মা দুর্গার এক রূপ হল দেবী ব্রহ্মচারী, যার পুজো নবরাত্রির চতুর্থ দিনে করা হয়ে থাকে। মায়ের এই বিশেষ রূপের পুজো করার সময় একটি মন্ত্র পাঠ করা হয়ে যাতে, যা "মা ব্রহ্মচারী মন্ত্র" নামে পরিচিত। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে পুজোর যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে দেবীর সামনে দাঁড়িয়ে এক মনে এই মন্ত্রটি যদি পাঠ করা হয়, তাহলে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি মায়ের আশীর্বাদে নানাবিধ রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল-"ওম হ্রিম ব্রহ্মচারিনী দুর্গায়ে নমহঃ"।
২. মা চন্দ্রঘন্টা মন্ত্র:
পুজোর তৃতীয় দিনে, মানে অষ্টমীর দিন এই মন্ত্রটি পাঠ করতে করতে যদি দেবীর পুজো দেন, তাহলে দেবীর আশীর্বাদে দেখবেন মনের সব ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগবে না। তাই তো বলি বন্ধু এবারের অষ্টমীর অঞ্জলী দেওয়ার সময় মনে মনে এই দুর্গা মন্ত্রটি জপে ফেলতে ভুলবেন না যেন! মন্ত্রটি হল- "ওম হ্রিম শ্রিম শ্রী চন্দ্রঘন্টা দুর্গায় নমহঃ"।
৩. মা দূর্গা দুঃস্বপ্ন নিবারণ মন্ত্র:
"শান্ত কর্মমণী সর্বত্র তাথ দুহা স্বপ্ন দার্শনে। গ্রহ পিদাসু চোগারসু মাহাতমায়াম শ্রীনু ইয়াম্মাম।" এই মন্ত্রটি দুর্গা পুজোর সময় তো বটেই, তার পরেও যদি প্রতি শুক্রবার, দেবী দূর্গার ছবি বা মূর্তির সামনে বসে পাঠ করা যায়, তাহলে খারাপ স্বপ্ন আসার আশঙ্কা কমে যায়। সেই সঙ্গে মনের জোর বৃদ্ধি পায়। ফলে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও বাঁধার পাহাড় সরিয়ে এগিয়ে যেতে কোনও সমস্যাই হয় না। শুধু তাই নয়, জন্ম কুষ্টিতে উপস্থিত গ্রহ দোষ কেটে যেতেও সময় লাগে না। সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের ভয় দূর হয়। ফলে জীবন সুখে-শান্তিতে ভরে ওঠে। প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রটি বাচ্চাদের সামনে পাঠ করলে তাদেরও ভয়ও দূর হয় এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
৪. দূর্গা শান্তি মন্ত্র:
এই মন্ত্রটি যদি এক মনে জপ করা যায়, তাহলে প্রতিপক্ষদের বিনাশ ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে খারাপ শক্তির প্রভাবে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে এই মন্ত্রটি এতটাই শক্তিশালী যে পাঠ করা মাত্র কালো যাদুর প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে কেউ যদি ইর্ষান্বিত হয়ে আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করেও থাকে, তাহলেও কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল: "রিপাভা শংকাশম যন্ত্রি কল্যানাম চপ পদ্যতে। নন্দেথ চা কুলাম পানশম মাহাতমিয়া মহত্তম মম শ্রীনু ইয়াম্মাম"।
৫. মা দূর্গা মুক্তি মন্ত্র:
কর্মক্ষেত্রে কি একের পর একে বাঁধা আসতে শুরু করেছে? সেই সঙ্গে নানা কারণে পারিবারিক জীবনও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে? তাহলে বন্ধু পুজোর চারদিন এই শক্তি মন্ত্রটি পাঠ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে দেখবেন সুদিন আসবে চোখের পলকে। সেই সঙ্গে একে একে যেমন বাঁধার পাহাড় সরে যেতে শুরু করবে, তেমনি পরিবারের অন্দরে হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তিও ফিরে আসবে। শুধু তাই নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত এই মন্ত্রটি পাঠ করলে বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতেও সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পুনরায় খারাপ সময়ের সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনাও যায় কমে। এক্ষেত্রে যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হবে, সেটি হল- "সার্ব বাঁধা বিনিরমুক্ত ধন ধান্যে সুতানবিতা। মনুষ্য মিতপ্রসাদেন ভাবিষ্যতী না সনস্যয়া"।
৬. মা দূর্গা ধ্যান মন্ত্র:
"ওম জাটা জুট সাম্যুকত্তমার্ণ্ডু ক্রিট লাক্ষনাম। লোচনয়াত্ত্র সংযুক্তাম পদ্মেন্দু শান নাম", এই মন্ত্রটি জপ করলে একদিকে যেমন মনোযোগ ক্ষমতার বিকাশ ঘটে, তেমনি ব্রেন পাওয়ারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়। সেই সঙ্গে মন শান্ত হয় এবং রাগের প্রকোপ কমে। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ছাত্র-ছাত্রীরা যদি নিয়মিত এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করে তাহলে পড়াশোনায় উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়।
দূর্গামন্ত্র পাঠ করার নিয়ম:
জেনে রাখা ভাল যে ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে যদি দূর্গা মন্ত্রগুলি পাঠ করা না হয়, তাহলে কিন্তু কোনও উপকারই পাওয়া যায় না। তাই তো মন্ত্রগুলি পাঠ করার সময় কতগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন- মন্ত্রগুলি পাঠ করার আগে শান্ত মনে মা দূর্গার মূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীর পুজো করতে হবে। তারপর শুরু করতে হবে মন্ত্র পাঠ। প্রসঙ্গত, মায়ের পুজো করার সময় মায়ের কপালে এবং পায়ে লাল সিঁদুর লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর তাজা ফুল পরিবেশ করে অল্প পরিমাণ চাল মায়ের সামনে রেখে শুরু করতে হবে পুজো। এই নিয়মগুলি মেনে যদি মায়ের আরাধনা করতে পারেন, সেই সঙ্গে পাঠ করতে পারেন এই মন্ত্রগুলি, তাহলে দেখবেন সুফল মিলতে সময় লাগবে না।