Just In
- 1 hr ago প্রেম জীবনে উত্তেজনা মেষ-তুলার, সতর্ক থাকতে হবে ৩ রাশিকে, দেখুন আজকের রাশিফল
- 17 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 18 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 21 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
মকর সংক্রান্তির দিন এই কাজগুলি অবশ্যই করুন, পরিবারে সুখ সমৃদ্ধি ফিরবে!
বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসব হল পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি। পৌষ মাসের শেষ দিন এই উৎসব পালন করা হয়। যদিও লোকমুখে শোনা যায়, পৌষ মাস হল মলমাস বা অশুভ মাস। তবে শাস্ত্রমতে, মকর সংক্রান্তি থেকেই অশুভ লক্ষণ বর্জিত হয়ে শুভ ক্ষণের সূচনা হয়৷ তাই ঘরে ঘরে সবাই মেতে ওঠে উৎসবের আবহে।
এই উৎসব বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন - পশ্চিমবঙ্গে পৌষ সংক্রান্তি, তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল, গুজরাতে উত্তরায়ণ, অসমে ভোগালি বিহু, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে খিচড়ি পর্ব, পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মুতে লোহরি, কর্নাটকে মকর সংক্রমণ, ইত্যাদি। এছাড়াও, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, গোয়া, অন্ধ্র, তেলঙ্গানা এবং কেরলে মকর সংক্রান্তি নামটিই চলে।
মকর বা পৌষ সংক্রান্তি বাঙালির অতি প্রিয় পার্বণ। তাই, এই দিনটি নানা ধরনের অনুষ্ঠান ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। অন্যান্য উৎসবের মতো পৌষ সংক্রান্তিরও রয়েছে কিছু নিয়ম-নীতি, যা আমাদের মেনে চলা উচিত। ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ পালিত হচ্ছে পৌষ সংক্রান্তি। তবে দেখে নেওয়া যাক, এই দিনে কোন কাজগুলি করবেন এবং কোনগুলি করবেন না।
যে কাজগুলি করা উচিত নয়
১) মকর সংক্রান্তির দিনে বাড়িতে আমিষ রান্না করবেন না। পুরো দিন নিরামিষ রান্না করতে হবে এবং রান্নার দ্রব্যের মধ্যে কালো তিল ব্যবহার করলে ভাল।
২) অন্যান্য হিন্দু উৎসবের মতোই মকর সংক্রান্তির দিনে বাড়িতে বা বাইরে মদ ও মাংস খাওয়া কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। কারণ, এই দিনে সূর্যদেবের পুজো করার মাধ্যমে পরিবেশের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়। তাই প্রাণী হত্যা এই দিনে নিষিদ্ধ।
৩) মকর সংক্রান্তির দিন গাছ কাটবেন না। যেহেতু, মকর সংক্রান্তিতে 'নবান্ন' পালন করা হয় এবং ঘরে ঘরে নতুন ধান ওঠে, তাই এই দিনে গাছ কাটা অত্যন্ত অশুভ বলে মনে করা হয়। আবার, হিন্দু শাস্ত্র মতে গাছকে প্রকৃতির পবিত্র দান বলে মনে করা হয়। তাই, এই দিনে অনেক জায়গাতেই গাছকে পুজো করা হয়।
৪) এই দিনে কাউকে খালি হাতে বা খাবার না খাইয়ে বাড়ি থেকে যেতে দেবেন না। বাড়িতে যদি কোনও গরিব, দুঃখী বা ভিখারী আসে তবে, তাদেরও খালি হাতে ফেরাবেন না। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু দান করবেন এবং তাকে খাবার খাইয়ে ফেরাবেন। এতে, গৃহে অন্নের অভাব হয় না বলে মনে করা হয়।
৫) এই দিনে বাড়ির কেউ যাতে দূরে কোথাও যাত্রা না করে। কারণ, এই দিনে বাড়ির মানুষের দূরে যাত্রা করাটা অশুভ বলে মনে করা হয়। সবাই একসঙ্গে মিলিত হয়ে উৎসবের আনন্দকে উপভোগ করুন। বজায় থাকবে বাড়ির সুখ ও শান্তি।
৬) শাস্ত্রমতে, মকর সংক্রান্তির দিন নিজের ক্রোধ বর্জন করা ভাল। কারণ, এই পবিত্র দিনে অনেক শুভ কাজের সূচনা হয়, তাই এই দিনে রাগ, হিংসা ও খারাপ বাক্য ব্যবহার করবেন না। বিশেষ করে খেয়াল রাখবেন, এই দিনে যাতে আপনার কথায় কেউ আঘাত না পায়। আঘাত পেলে আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
যে কাজগুলি অবশ্যই করা উচিত
১) মকর সংক্রান্তির দিনে ঘরের ভেতর থেকে বাড়ির আশেপাশের সমস্ত জায়গায় পরিস্কার করে রাখবেন। বিশেষ করে রান্নাঘর ও রান্নার সামগ্রী। যাতে সমস্ত রকম অপরিশুদ্ধতা দূর হয় বাড়ি থেকে।
২) মকর সংক্রান্তির দিন সূর্যদেবের পুজো অবশ্যই করুন। শাস্ত্রমতে, এই দিন সকালে উঠে স্নান করে উঠোন বা ঘরে আল্পনা দিয়ে সূর্যদেবের পুজো করলে ঘরে রোগমুক্তি ঘটে এবং ফসল ভাল হয়। তাই এই নিয়ম মেনে পুজো করুন সূর্যদেবের।
৩) জ্যোতিষীদের মতে, এই দিনে কোনও গরিব, দুঃখীকে চাল, ডাল, ঘি, কম্বল দান করলে গৃহস্থের পূণ্যলাভ হবে। তাই দান করতে ভুলবেন না।
৪) শাস্ত্রে আছে, মকর সংক্রান্তির দিন পূণ্য লগ্নে শাহি স্নান করলে জীবনের সমস্ত অমঙ্গল দূর হয়ে যায়। তাই সময় ও তারিখ দেখে করুন শাহি স্নান।
৫) মকর সংক্রান্তির দিন নিজে মিষ্টি মুখ করুন এবং অন্যকে করান। এতে সবার মধ্যে মিষ্টি সম্পর্কের সূত্রপাত ঘটে। কথিত আছে, এই দিনে সূর্যদেব তাঁর পুত্র শনি দেবতার প্রতি সমস্ত ক্ষোভ ভুলে গিয়ে, শনির গৃহে প্রবেশ করেন। তাই, এই দিনে সকলে মিলিত হয়ে মিষ্টি মুখের মাধ্যমে সু-সম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার করে থাকে।
৬) বিশ্বকর্মা পুজোর মত মকর সংক্রান্তির দিনেও এক বিশেষ আকর্ষণ হলো ঘুড়ি ওড়ানো। এইদিন বাড়ির বাচ্চা থেকে বড়রা সকলে মিলেই ঘুড়ি ওড়াতে থাকেন। শাস্ত্রমতে, সকাল সকাল ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে সূর্যের আলো শরীরে লাগালে তা শরীরের জন্য ভাল। তাই, এই উৎসবের দিনে সূর্যের আলোয় শরীর ও মন সুস্থ এবং সতেজ রাখতে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়। শুধু খেয়াল রাখবেন আপনার আনন্দ যেন অন্যের ক্ষতি না করে।
ছবি সৌজন্যে : jagran.com, hoyejak.com, youtube.com