Just In
প্রতি শুক্রবার লক্ষ্মী মহা মন্ত্র জপ করা উচিত কেন জানা আছে?
হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক প্রাচীন বইয়ে এমন অনেক মন্ত্রের সন্ধান পাওয়া যাদেরকে কাজে লাগিয়ে বাস্তবিকই জীবনের ছবিটা বদলে ফেলা সম্ভব। কারণ এই সব মন্ত্রের শরীরে এত মাত্রায় পজেটিভ শক্তি মজুত থাকে যে সেগুলি পাঠ করা মাত্র সেই শক্তি আমাদের গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে যায়। ফলে একাধিক উপকার মিলতে শুরু করে। যেমন লক্ষ্মী মহা মন্ত্রের কথাই ধরুন না। সিংহভাগেরই আজানা এই মন্ত্রটি পাঠ করলে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ লাভের পথ প্রশস্ত হয়। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতির স্বাদ পেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি আরও নানা সব উপকার পাওয়া যায়, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তবে সে বিষয়ে যাওয়ার আগে একটা কথা বলতে চাই বন্ধু, লক্ষ জন্ম পেরিয়ে পাওয়া এই মানব জীবনকে যদি বাস্তবিকই সার্থক বানাতে হয়, তাহলে এই লেখায় চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন। কারণ লেখাটি পড়া মাত্র আপনার জীবনের ছবিটা যে বদলে যাবে সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই!
"ওম হ্রিম শ্রিম লক্ষ্মী ভায়ো নমহঃ", এই মন্ত্রটিকেই লক্ষ্মী মহা মন্ত্র বলা হয়ে থাকে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি শুক্রবার মায়ের পুজো করার পর এক মনে যদি এই মন্ত্রটি ১০৮ বার পাঠ করা যায়, তাহলে মায়ের নেক দৃষ্টি পরে তার ভক্তের উপর। ফলে একাধিক উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যেমন ধরুন...
১.অনেক অনেক টাকার মলিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয়:
মা লক্ষ্মী হলেন অর্থ এবং সমৃদ্ধির দেবী। তাই তো মাকে একবার প্রসন্ন করতে পারলে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করলে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে সঞ্চয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। তাই তো বলি বন্ধু, জীবনের ক্যানভাসটিকে যদি নানা রঙে রঙিয়ে তোলার ইচ্ছা থাকে, তাহলে এই মন্ত্রটি জপ করতে ভুলবেন না যেন!
২. রোগ-ব্যাধি দূরে পালায়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ছোট-বড় সব রোগই দূরে পালায়। শুধু তাই নয় শরীরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাই তো মহিলাদের এই মন্ত্রটি নিয়ম করে প্রতি শুক্রবার পাঠ করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
৩. ব্যবসায় চরম উন্নতির স্বাদ মেলে:
আপনি কি কোনও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত? তাহলে বন্ধু প্রতি শুক্রবার লক্ষ্মী মহা মন্ত্রটি পাঠ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রচি পাঠ করা শুরু করলে গৃহস্থে মায়ের প্রবেশ ঘটে। ফলে ব্যবসায় একের পর এক সফলতা লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে ব্যবসা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা মিটে যেতেও সময় লাগে না।
৪. কর্মক্ষেত্রে পদন্নতি ঘটে:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! এই মন্ত্রটি এতটাই শক্তিশালী যে নিয়মিত পাঠ করা শুরু করলে কর্মক্ষেত্রে চটজলদি প্রমোশন পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে প্রতিপক্ষদের নিকেশ ঘটতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু ৩০ পেরতে না পেরতেই যদি বাড়ি,গাড়ি এবং মোটা মাইনের মালিক হয়ে উঠতে চান, তাহলে শুধু শুক্রবার নয়, প্রতিদিন লক্ষ্মী মহা মন্ত্রটি জপ করতে ভুলবেন না যেন!
৫. খারাপ শক্তির প্রকোপ কমে যায়:
বিশ্বাস করুন বা না করুন একথা মানতেই হবে যে আমাদের আশেপাশে পজেটিভ শক্তি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নেগেটিভ বা খারাপ শক্তিও। আর কোনওভাবে যদি এই খারাপ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করে, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ। কারণ সেক্ষেত্রে নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি হঠাৎ করে কোনও দুর্ঘটনার কবলে পরার সম্ভাবনাও থাকে। তাই তো বলি বন্ধু নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের নানাবিধ বিপদ থেকে বাঁচাতে শুক্রবার করে এই মন্ত্রটি জপ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্ত্রটি জপ করা মাত্র বাড়ির প্রতিটি অংশে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে খারাপ শক্তি ঘর ছাড়া হতে সময় লাগে না।
৬.মনের যে কোনও ইচ্ছা পূরণ হয়:
গৃহস্থে যখন পজেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর এমনটা যখন হয়, তখন মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
৭. পড়াশোনায় উন্নতি ঘটে:
শাস্ত্র মতে প্রতিদিন মায়ের পুজো করার পাশাপাশি লক্ষ্মী মহা মন্ত্র পাঠ করলে বাচ্চাদের মনোযোগ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে পড়াশোনায় উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পরিবারের বাকি সদস্যদের কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়। প্রসঙ্গত, যারা ব্যবসা করেন, তারা যদি তাদের অফিসে মায়ের মূর্তি রাখতে পারেন, তাহলে ব্যবসায় উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৮. ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা কমে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মহা লক্ষ্মী মন্ত্র জপ করা শুরু করলে জীবনের প্রতিটি বাঁকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। আর বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত যখন ঠিক হয়, তখন জীবনের ছবিটা বদলে যেতে যে সময় লাগে না, তা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে।
লক্ষ্মী মহা মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করলে নানাবিধ উপতার মেলে ঠিকই। কিন্তু একথা জানেন কি বাড়িতে মা লক্ষ্মীর আগমণ ঘটলে আরও বেশি মাত্রায় সুফল পাওয়া যায়। তাই তো বলি বন্ধু, আপনার গৃহস্থে মায়ের সারা জীবন অধিষ্ঠান করুক, এমনটা যদি চান, তাহলে এই নিয়মগুলি মানতে ভুলবেন না যেন...
১. গণেশ এবং লক্ষী দেবীর রুপোর মূর্তি:
শাস্ত্র মতে বাড়িতে বা অফিসে রুপো দিয়ে তৈরি গণেশ এবং লক্ষী দেবীর মূর্তি রাখা এবং তার পুজো করা খুব শুভ। এমনটা যদি করতে পারেন, তাহলে যে কোনও চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে দেখবেন সময়ই লাগবে না।
২. রুপোর পা:
রুপো দিয়ে তৈরি মা লক্ষীর পা ঠাকুর ঘরে রাখা খুব শুভ। কারণ এমনটা করলে মায়ের আগমণ ঘটতে সময় লাগে না।
৩. মার্কারি দিয়ে তৈরি মায়ের মূর্তি:
এমনটা মানা হয় যে বাড়িতে মার্কারি দিয়ে তৈরি দেবী লক্ষীর মূর্তি পুজো করলে সেই পরিবারে সমৃদ্ধি এবং সুখের আগমণ ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি ঘটে। তাই আপনার জীবনে কখনও যদি কোনও অর্থনৈতির সমস্যা হয়, তাহলে মায়ের পুজো শুরু করতে ভুলবেন না যেন!এমনটা করলে দেখবেন বিপদের মেঘ কেটে যেতে সময় লাগবে না।
৪. ঠাকুর ঘরে কুবের দেবতার মূর্তি রাখা মাস্ট:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে অর্থের দেবতা কুবেরের মূর্তি রাখলে দেবীর আগমণ ঘটতে সময় লাগে না। আর একবার মায়ের পায়ের ছাপ পরলে যে কোনও সমস্যা, তা অর্থনৈতিক হোক, কী জীবন সংক্রান্ত, তা মিটে যেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, ঠাকুর ঘরের যে স্থানে কুবের দেবের ছবি বা মূর্তি রাখবেন, সেই জায়গাটা প্রতি দিন ভাল করে পরিষ্কার করতে ভুলবেন না যেন!
৫. পুজোর ঘরে ছোট নারকেল:
একাধিক প্রাচীন গ্রন্থ অনুসারে ঠাকুর ঘরে ছোট একটা নারকেল রেখে তার পুজো শুরু করলে বাড়িতে মায়ের আগমণ ঘটে। আসলে এমন নারকেলকে হিন্দু শাস্ত্রে "শ্রী ফল" নামে ডাকা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে ফল মা লক্ষীর। তাই তো নিয়মিত নারকেলের পুজো করার অর্থ হল মায়ের পুজো করা।
৬. কড়ি এবং মা লক্ষ্মী:
এমনটা করার প্রয়োজন কেন? কারণ শাস্ত্র মতে সমুদ্রে তৈরি হয় কড়ি, আর দেবী লক্ষীরও আগমণ ঘটে সমুদ্র থেকে। তাই তো ঠাকুর ঘরে কড়ি রাখলে মা লক্ষীর প্রবেশ ঘটে গৃহস্থে। আর এমনটা হওয়া মাত্র সুখের সময় শুরু হতেও সময় লাগে না। তাই পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে সুখের হদিশ দিতে কড়ির সঙ্গ নিতে ভুলবেন না যেন!