Just In
মঙ্গল এবং শনিবার শ্রী রামের আশীর্বাদ নিচ্ছেন হনুমানজি এমন ছবির পুজো করলে কী কী উপকার মেলে জানেন?
হনুমানজি, শ্রী রামের আশীর্বাদ নিচ্ছেন এমন ছবি বা মূর্তির পুজো করলে নাকি খারাপ সময় কেটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে।
সময় বদলেছে। বদলে গেছে মানসিকতাও। তবু আজও বন্ধুত্বের উদাহরণ দেওয়ার সময় শ্রী হনুমান এবং রামের নাম আসেই আসে। আর কেন আসবে নাই বা বলুন! এমন ভক্তি এবং বন্ধুত্বের নিদর্শন আর কটাই বা আছে এদেশে। তবে শুধু সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতেই নয়, হিন্দু শাস্ত্রেও শ্রী রাম এবং হনুমানজির পারস্পরিক সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নানাবিধ প্রাচীন বইয়ে এমন দাবী করা হয়েছে যে হনুমানজি, শ্রী রামের আশীর্বাদ নিচ্ছেন এমন ছবি বা মূর্তির পুজো করলে নাকি খারাপ সময় কেটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। ফলে ভক্তের মনের সব ইচ্ছা পূরণ হয় চোখের পলকে। তবে এখানেই শেষ নয়, এমনও বিশ্বাস রয়েছে যে এমন ছবি বা মূর্তির নিয়মিত আরাধনা করলে আরও অনেক সুফল মেলে, যেমন ধরুন...
১. শনির প্রভাব কমে নিমেষে:
শাস্ত্র মতে প্রতি মঙ্গল এবং শনিবার এমন বিশেষ ছবির পুজো করার মধ্যে দিয়ে যদি শ্রী হনুমানের অরাধনা করা যায়, তাহলে শনির বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি যারা ইতিমধ্যেই শনির সাড়ে সাতির খপ্পরে পরেছেন, তাদের উপর থেকে শনির খারাপ প্রভাব কেটে যেতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের জন্মকুষ্টিতে শনির সাড়ে সাতির যোগ রয়েছে, তারা নিয়মিত হনুমানজির পুজো করার পাশাপাশি হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে ভুলবেন না যেন!
২. ভূত-প্রেত ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না:
বিশ্বাস করুন বা অবিশ্বাস একথা মানতেই হবে যা আমাদের আশেপাশে যেমন শুভ শক্তি রয়েছে, তেমনি রয়েছে খারাপ শক্তিও। আর এই খারাপ শক্তিকে কেউ ভূত-প্রেসর নাম দেন, তো কেউ নেগেটিভ এনার্জি বলে থাকেন। তবে যে নামেই ডারুন না কেন একথা অস্বীকার করা সম্ভব নয় যে আমাদের আশেপাশে নেগেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়তে শুরু করলে একের পর এক বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তো বলি, এমন ক্ষতি আপনার সঙ্গেও ঘটুক, যদি না চান, তাহলে হনুমানজি, শ্রী রামের আরাধনা করছেন এমন ছবির পুজো করতে ভুলবেন না যেন!
৩. যে কোনও সমস্যা মিটে যায়:
জীবন থাকলে নানাবিধ সমস্যা তো থাকবেই। তবে একথা ঠিক যে মাঝে মাঝে বেশ কিছু সমস্যা এমন দানবীয় রূপ নেয় যে সামলে ওঠা সম্ভব হয় না। এমনকি সে কারণে স্ট্রেস লেভেল এত বেড়ে যায় যে সুখ-শান্তি দূরে পালায় চোখের পলকে। তবে জীবনে আর কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে না যদি শনি-মঙ্গলবার হনুমানজির আরাধনা করেন তো। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবের বিশেষ ছবি বা মূর্তির আরাধনা করলে হনুমানজি এবং শ্রী রাম বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না।
৪. পাপের হাত থেকে মুক্তি মেলে:
আপনি কি নানা সময় নানা লোককে ঠকিয়েছেন? টাকা মেরেছেন? এমনকি অকারণে দুঃখও দিয়েছেন? তাহলে বন্ধু মারুথির শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না যেন! কারণ আপনি যে কাজগুলি করেছেন সেগুলি পাপ। আর এমন পাপের শাস্তির হাত থেকে মুক্তি পেতে পথ দেখাতে পারেন একমাত্র বায়ু পুত্রই...!
৫. ভাগ্য ফেরে চোখের পলকে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করা শুরু করলে খারাপ ভাগ্যের দোষ কাটতে শুরু করে। ফলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর ভাগ্য একবার সহায় হলে সাফল্যের স্বাদ পেতে যে সময় লাগে না, তো বলাই বাহুল্য!
৬. মনের জোর বাড়ে চোখে পরার মতো:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার দেবের পুজো করার পাশাপাশি যদি হনুমান চল্লিশা পাঠ করা যায়, তাহলে মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ভয় কাটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মনের জোর এতটা বেড়ে যায় যে কোনও বাঁধা পেরতেই সময় লাগে না। ফলে জীবনের চলার পথটা বেজায় সহজ হয়ে যায় বৈকি।
৭.মনের ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জি-এর বিশেষ ছবি বা মূর্তির পুজো করলে দেব এতটাই প্রসন্ন হন যে মনের সব ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, নিয়মিত দেবের আরাধনা করলে মনের মতো চাকরি যেমন মেলে, তেমনি কর্মক্ষেত্রে চরম উন্নতির স্বাদ পেতেও সময় লাগে না।
৮. বুদ্ধির বিকাশ ঘটে:
শাস্ত্র মতে হনুমান জি-এর পুজো করা শুরু করলে ধীরে ধীরে মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটতেও সময় লাগে না। আর বুদ্ধির ধার বাড়তে শুরু করলে চাকরি হোক কী ব্যবসা, যে কোনও ক্ষেত্রেই সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা যে বাড়ে, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
৯. অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না:
হনুমান জি তাঁর ভক্তদের বেজায় ভালবাসেন। তাই তো নিয়মিত তাঁর পুজো করলে যে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক কষ্ট কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির আগমণ ঘটে। প্রসঙ্গত, অনেকেই আমাদের উপর খারাপ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। এই কু-দৃষ্টির প্রভাব কাটতে সময় লাগে না যদি নিয়মিত হানুমান চল্লিশা পাঠ করা যায় তো! শুধু তাই নয়, জীবনের যে কোনও বাঁকে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও হ্রাস পায় দেবের আশীর্বাদে।
শনি এবং মঙ্গলবার কী কী নিয়ম মেনে করতে হবে দেবের পুজো?
সপ্তাহের বিশেষ বিশেষ দিনে দেবের অরাধনা করার ইচ্ছা থাকলে বেশ কতগুলি নিয়ম মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন। যেমন ধরুন...
১. যে দিন মারুথির পুজো করবেন সেদিন উপোস করতে হবে। খাবার খেতে পারবেন কেবল সূর্যাস্তের পরে।
২. পুজোর দিনে সকাল সকাল উঠে স্নান সেরে, পরিষ্কার জামা-কাপড় পরে প্রথমে ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর দেবের মূর্তি, একটা ভেজা কাপড়ের সাহায্য়ে পরিষ্কার করে নিয়ে শুরু করতে হবে পুজোর আয়োজন।
৩. দেবকে তুলসির মালা পরিয়ে তাঁর সামনে ফল, ফুল এবং অন্যান্য প্রসাদ নিবেদন করতে হবে। সেই সঙ্গে অশ্বত্থ গাছের পাতার উপর চন্দন বা সিঁদুর দিয়ে রাম নাম লিখে তা রাখতে হবে দেবের সামনে। এবার ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে মারুথির ছবি বা মূর্তির সামনে বসে এক মনে হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে হবে। সবশেষে মনে মনে সর্বশক্তিমানের নাম নিয়ে শেষ করতে হবে পুজো।
৪. পুজো শেষে হনুমানজির ছবি বা মূর্তিতে সিঁদুর লাগিয়ে অশ্বত্থ গাছের গোড়ার জল দিয়ে কম করে সাত বার পরিক্রমা করতে হবে। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমনটা করলে দেব এতটাই প্রসন্ন হন যে নানাবিধ উপকার মিলতে সময় লাগে না।