Just In
প্রতি বুধবার স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে উপোস করে বুধ গ্রহ এবং বিষ্ণু দেবের পুজো করা উচিত কেন জানা আছে?
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ দিনে স্বামী-স্ত্রী মিলে উপোস করে বুধ গ্রহের আরাধনা করলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক দিক থেকে চরম উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়।
শাস্ত্র মতে সপ্তাহের এক একটা দিন যেমন এক একজন দেব-দেবীর আরাধনা করার জন্য বরাদ্দ, তেমনি সপ্তাহের সাতটি দিন সাতটি আলাদ আলাদা গ্রহের পুজোর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এমনকি এমনটাও বিশ্বাস করা হয় য়ে দিন বিশেষ সেই বিশেষ গ্রহের অরাধনা করলে নাকি দারুন সব উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন- সোমবার হল চাঁদের অরাধনা করার দিন, মঙ্গলবার মঙ্গল গ্রহের, বুধবার বুধ গ্রহের এবং বৃহস্পতিবার বৃহস্পতি গ্রহের পুজো করলে জন্ম কুষ্টিতে ওই নির্দিষ্ট গ্রহের ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার কারণেও নানা সুফল মিলতে সময় লাগে না।
এখন প্রশ্ন হল বুধবার বুধ গ্রহ এবং ভগবান বিষ্ণুর অরাধনা করা উচিত কেন? আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ দিনে স্বামী-স্ত্রী মিলে উপোস করে বুধ গ্রহের আরাধনা করলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক দিক থেকে চরম উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়। শুধু তাই নয়, বুধে গ্রহের "রুলিং গড" যেহেতু ভগবান বিষ্ণু। তাই এদিন দেবের অরাধনা করলেও বেশ কিছু সুফল মেলে। যেমন ধরুন- ছোট-বড় নানা রোগ-ব্যাধির খপ্পর থেকে মুক্তি মেলে, গৃহস্থের অন্দরে খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে, মনের জোর বাড়ে, টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা ঝামেলা মিটে যায় এবং কোনও ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভবনাও যায় কমে।
বুধবার
উপোস
করে
বুধ
গ্রহের
পুজো
করার
রীতি
কবে
থেকে
শুরু
হয়েছে?
হিন্দু
শাস্ত্রের
উপর
লেখা
নানা
বই
ঘেঁটে
একটা
গল্পের
খোঁজ
পাওয়া
যায়।
তাতে
এমন
উল্লেখ
পাওয়া
যায়
যে
বগু
বহু
বছর
আগে
এদেশে
এক
নামী
ব্যবসায়ী
বসবাস
করতেন।
একদিন
সেই
ব্যবসায়ী
স্থির
করলেন
শশুর
বাড়িতে
গিয়ে
স্ত্রীকে
নিয়ে
আসবেন।
সেই
মতো
বেরিয়েও
পরলেন।
কয়েক
দিনের
যাত্রার
পর
বুধবার
গিয়ে
পৌঁছালেন
শশুর
বাড়ি।
এদিকে
এক
দিনও
না
থেকেই
কয়েক
ঘন্টা
মাত্র
বিশ্রাম
করে
সেদিনই
বেরিয়ে
পরার
প্রস্তুতি
শুরু
করে
দিলেন।
এই
সব
দেখে
শাশুড়ি
বার
বার
অনুরোধ
করতে
লাগলেন
যে
বুধবার
যাত্রা
করার
জন্য
ভুলো
দিন
নয়।
তাই
তারা
যেন
এই
দিনটা
থেকে
যান।
কিন্তু
কোনও
কথা
না
শুনেই
স্বামী-স্ত্রী
বেরিয়ে
পরলেন।
গরুর গাড়িতে যেতে যেতে এক সময় স্ত্রীর খুব জল তেষ্টা পাওয়ায় ব্যবসায়ী গরুর গাড়ি থেকে নেমে জল আনতে গেলেন। কিছু সময় পরে ফিরে এসে দেখলেন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মতোই দেখতে এক পুরুষ বসে রয়েছেন। কে তুমি...এমন প্রশ্ন করাতে সেই ব্যক্তি বললো সে নাকি সেই মহিলার স্বামী। সেই শুনে ব্যবসায়ী ক্ষেপে গিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করতে লাগলেন যে সেই হলেন আসল ব্যবসায়ী এবং ওই মহিলার স্বামী।
জল গড়ালো পুলিশ পর্যন্ত। বাদানুবাদ চলাকালীনই ব্যবসায়ী বুঝতে পারলেন বুধ দেব রুষ্ট হওয়ার কারণেই এমন বিপদ! তাই তিনি সঙ্গে সঙ্গে মনে মনে বুধ দেবের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁর নাম নিতে শুরু করলেন। অবশেষ বুধ গ্রহের আশীর্বাদে বিপদ কেটে গেল। স্বামী-স্ত্রী নির্বিগ্নে বাড়ি ফরলেন। সেই থেকেই প্রতি বুধবার করে স্বামী-স্ত্রী মিলে শুরু করলেন উপোস করে বুধ গ্রহের পুজো। যে রীতি এখনও চলে আসছে।
বুধবার
উপোস
করে
বুধ
গ্রহের
পুজো
করলে
কী
কী
উপকার
পাওয়া
যায়?
শাস্ত্র
মতে
এদিন
সকাল
সকাল
ঘুম
ঠেকে
উঠে
স্নান
সেরে
পরিষ্কার
জামা-কাপড়
পরে
এক
মনে
বুধ
গ্রহের
নাম
নেওয়ার
পাশাপাশি
বিষ্ণু
দেবের
সহস্র
নাম
নিতে
হবে।
সেই
সঙ্গে
সবুজ
রঙের
নানা
ফল,
সবুজ
মুগ
ডাল
এবং
সবুজ
সবজি
ভোগ
হিসেবে
চড়াতে
হবে।
শুধু
তাই
নয়
বুধ
দেবের
ছবির
সামনে
সবুজ
রঙের
কাপড়ও
রাখতে
হবে।
কারণ
সবুজ
রং
বুধ
গ্রহের
বিশেষ
পছন্দের।
প্রসঙ্গত,
পুজোর
পর
গরীব
মানুষদের
খাওয়াতে
হবে।
কারণ
এমনটা
করলে
বুধ
গ্রহ
বেজায়
প্রসন্ন
হয়।
ফলে
নানাবিধ
উপকার
মিলতে
সময়
লাগে
না।
যেমন
ধরুন...
১. বুধ গ্রহের খারাপ প্রভাব কেটে যায়:
এমনটা বিশ্বাস কা হয় যে টানা ২১ টা বুধবার যথাযথ নিয়ম মেনে বুধ গ্রহের পুজো করলে জন্ম কুষ্টিতে থাকা এই বিশেষ গ্রহটির কুপ্রভাব কেটে যেতে সময় লাগে না। ফলে বুধের কুপ্রভাবের কারণে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে।
২. সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে:
প্রতি বুধবার উপোস করে এক মনে বুধ দেবের নাম নিলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি পরিবারের অন্দরে কোনও ধরনের কলহ বা বিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে। ফলে বাকি জীবনটা বেশ সুখ-শান্তিতেই কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা যে বাড়ে, তা আ বলার অপেক্ষা রাখে না!
৩. যে কোনও সমস্যা মিটে যাবে:
মনে বিশ্বাস নিয়ে প্রতি বুধবার এই বিশেষ গ্রহটির অরাধনা করে দেখুন। ফল যে পাবেই পাবেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে টানা ২১ টা বুধবার, বুধ গ্রহের অরাধনা করলে যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে চাকরি সংক্রান্ত নানা ঝামেলাও মিটে যায়। শুধু তাই নয়, একের পর এক পদন্নতি লাভের সম্ভাবনাও বাড়ে।
৪. অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয়:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! নিয়ম করে বুধ গ্রহের আরাধনা করলে জন্মকুষ্টিতে এই গ্রহটির প্রভাব এতটা বাড়তে থাকে যে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা ঝামেলা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে একের পর এক এমন সব সুযোগ আসতে শুরু করে যে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৫. ব্যবসায় উন্নতি ঘটে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বুধ গ্রহের পুজো করার পর ওই দিনই যদি কোনও কাজ শুরু করা যায়, তাহলে তাতে সফলতা লাভের সম্ভাবনা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে ব্যবসায় উন্নতি লাভের পথও প্রশস্ত হয়। তাই তো বলি বন্ধু, যারা নানাবিধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তারা বুধ দেবের আরাধনা শুরু করতে দেরি করবেন না যেন!
বুধ গ্রহের পুজো শুরু করার সময়:
প্রতি বুধবার যদি এই বিশেষ গ্রহটির অরাধনা করার কথা ভেবেই থাকেন, তাহলে সকাল ১০:৪৩ মিনিট থেকে ১২:০৬-এর মধ্যে পুজো সেরে ফেলার চেষ্টা করবেন। কারণ এই সময়টি অরাধনা করার জন্য শুভ। কিন্তু ভুলেও সকাল ৭:৪৩ থেকে ৯:২১ এবং দুপুর ১২:০৬ থেকে ১:২৯ পর্যন্ত পুজো করবেন না যেন!