Just In
Don't Miss
আপনার বাচ্চা অপুষ্টির শিকার নয় তো? বুঝবেন কীভাবে? জেনে নিন অপুষ্টির কিছু লক্ষণ
প্রত্যেক মা-বাবাই নিজের সন্তানকে, সুস্থ-সবল দেখতে চায়। তবে আজকাল প্রায় সব বাচ্চার মধ্যেই খাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এখনকার বেশিরভাগ বাচ্চাই ঠিকমতো খেতে চায় না, ফলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বাচ্চারা ঠিকভাবে পুষ্টি না পেলে, বিভিন্ন ধরনের রোগ এবং সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়ে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, বাচ্চাদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কিছু লক্ষণ সম্পর্কে।
১) উদ্বেগ এবং অবসাদ
শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রে, পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেকোন ধরণের পুষ্টির ঘাটতি, শিশুদের মধ্যে উদ্বেগ অথবা অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কের সঠিক ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে। তাই বিশেষজ্ঞরা, শিশুদের প্রোটিন যুক্ত ডায়েট খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
২) খিদে কমে যাওয়া
অনেক সময় একটানা জ্বর কিংবা সর্দি-কাশি হলে, বাচ্চাদের মধ্যে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যেতে দেখা যায়। এটি জিঙ্কের ঘাটতির কারণে হতে পারে। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায়, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
৩) অস্থিরতা
বাচ্চাদের মধ্যে অনেকসময় হজম শক্তির দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ শোষণ করতে বাধা দেয়। কৃত্রিম ফুড কালার, শিশুদের মধ্যে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এটি ব্যবহার করা এড়ানো উচিত। দই, পেঁপে কিংবা বাটারমিল্ক জাতীয় খাদ্য হজমশক্তি উন্নত করতে সহায়তা করে।
৪) স্থূলতা
অপুষ্টিজনিত কারণে স্থূলতা দেখা দিতে পারে। কোনও বাচ্চার শরীরে পুষ্টিকর খাবার না পৌঁছালে তারা সর্বদা ক্ষুধার্ত এবং অসন্তুষ্ট বোধ করতে পারে। তাই, ব্যালেন্স ডায়েট খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যা শরীরকে সঠিক পুষ্টি সরবরাহ করবে এবং স্থূলতার হাত থেকেও রক্ষা করবে।
৫) ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া
ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিনের অভাবে, বাচ্চাদের চুল ও ত্বক শুষ্ক-রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। তাই পুষ্টির ঘাটতি থেকে বাঁচাতে, বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় উচ্চমানের ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন সরবরাহ করা প্রয়োজন।
৬) এনার্জি কমে যাওয়া
এনার্জি কমে যাওয়া, আয়রনের ঘাটতির দিকে ইঙ্গিত করে। এর ফলে ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব, ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তির মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় বাদাম, খেজুর, বীজ জাতীয় খাবার, ড্রাই ফ্রুটস এবং মাংস, এই ধরনের খাবার দিন, যা তাদের শরীরে আয়রনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
৭) হাড়ে ব্যথা হওয়া
ভিটামিন-ডি এর অভাবে হাড়ের ব্যথা, বাচ্চার বিকাশে বাধা, পেশীতে টান ধরা এবং হাড় নরম হয়ে যাওয়ার মতো নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্য এবং শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
৮) দেরিতে মুখে কথা ফোটা
অনেক বাচ্চার দেরিতে মুখে কথা ফুটতে দেখা যায়। এটি ভিটামিন বি১২ এর অভাবে হতে পারে। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করুন, যেমন - অর্গ্যান মিট, মুরগীর মাংস, মাছ, শেলফিশ, ডিম, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাদ্য।
৯) ঘনঘন অসুস্থ হয়ে পড়া
অপুষ্টির কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে বাচ্চাদের মধ্যে ঘনঘন সর্দি-কাশি, জ্বর বা বিভিন্ন অসুস্থতা লক্ষ্য করা যায়। তাই বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে, খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করুন।