Just In
- 15 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 16 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 20 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 21 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
সদ্যোজাত শিশুর দেখভালের সময়ে এই ১০টি ব্যাপারে অবশ্যই নজর রাখুন
শিশুর দেখভাল খুব সহজ কাজ নয়। আপনার বাড়িতে যখন প্রথম সন্তানের আগমন ঘটে, তখন যেমন সবাই আনন্দে-আহলাদে আটখানা হয়ে পড়ে, তেমনই তা কিছুটা চিন্তার উদ্রেকও ঘটায়। বিশেষ করে বাড়িতে যদি মা-ঠাকুমার মতো সদ্যোজাতকে সামলানোর মতো অভিজ্ঞ লোক না থাকে, তবে উদ্বেগ আরও বাড়ে।
প্রথমবার মা-বাবা হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের পক্ষে অতটুকু বাচ্চাকে সামলাতে প্রথমদিকে অসুবিধা হয় বইকি। কিভাবে ধরব; কোলে নেব; ঘাড়টা শক্ত না হওয়া অবধি কী করে বিছানা থেকে তুলব, যদি বেকায়দায় লেগে যায় বা কেন এত কাঁদছে, ওর কি কিছু শারীরিক সমস্যা হয়েছে -- এরকম নানা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে।
কিন্তু ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সঠিক পরামর্শ পেলে সদ্যোজাতকে সামলানোটা খুব অসুবিধাজনক কিছু নয়। যদি আপনার সন্তানকে দেখাশোনার কাজটি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়, তো প্রথম দিন থেকেই চ্যালেঞ্জটিকে গ্রহণ করুন। দেখবেন, খুব তাড়াতাড়িই আপনি হয়ে উঠেছেন ওর শ্রেষ্ঠ বন্ধু। যতই হোক, দিনের শেষে ওতো আপনারই সন্তান।
নিজের সদ্যোজাতকে সামলানোর কয়েকটি টিপস নিচে দেওয়া হল। এগুলিকে ঠিকঠাক মেনে চললে দেখবেন কিছুই আর কঠিন লাগছে না।
পরামর্শ #১
বাচ্চার কান্না থামাতে সর্বশক্তিদিয়ে কখনও তাকে ঝাঁকাবেন না। বাচ্চাদের ছোট্ট দেহের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুবই সংবেদনশীল হয়। জোরে ঝাঁকুনির ফলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সদ্যোজাতকের কান্না থামাতে তাকে সবসময় হালকা করে দোলান। তাতেই কাজ হবে।
পরামর্শ #২
মনে রাখবেন, আপনার শিশুর জীবনের প্রথম এবং সেরা খাদ্য তার মায়ের বুকের দুধ। সুতরাং, কোনও অবস্থাতেই তা বন্ধ করে সন্তানকে তার প্রাথমিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না। তাতে জরুরি পুষ্টির অভাবে ভুগে ভবিষ্যতে তার শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। অনেক মায়ের বুকে যথেষ্ট পরিমানে দুধের উৎপাদন হয় না শারীরিক কারণে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন আর যতটুকু ফর্মুলা মিল্ক বা কৌটোর দুধ প্রয়োজন, ঠিক ততটাই বাচ্চাকে দিন।
পরামর্শ #৩
কখনও বাচ্চাকে ফ্যানের তলায় বা খোলা জানালা-দরজা বা ঠান্ডা হাওয়ায় খালি গায়ে বা পাতলা জামা পরিয়ে আনবেন না। শিশুরা খুব অল্পেই সংক্রমণের শিকার হয়ে পড়ে আর সর্দিকাশি একবার লাগলে প্রচণ্ড কষ্ট পায়। মনে রাখবেন, আমাদের নাক সর্দিতে বন্ধ হয়ে গেলে আমরা মুখ দিয়ে নিঃশেষ নিতে পারি, বাচ্চারা সেটা পারে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ওদের নাক বন্ধ হয়ে গেলে ওরা কতটা কষ্ট পায়। খাওয়া-ঘুম ব্যাহত হওয়ার ফলে অন্যান্য দিক দিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
পরামর্শ #৪
ভুল করেও বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে তার মুখের মধ্যে ফিডিং বোতল রেখে দেবেন না কখনও। তাতে বাচ্চার দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পরে তাকে বারপ করানো অতি আবশ্যক। খাওয়ানোর পর তাকে সোজা করে ধরে কাঁধের কাছে রেখে পিঠে আস্তে আস্তে চাপড় দিন। একবার ঢেকুরের আওয়াজ পেলেই বুঝবেন তার খাওয়া দুধটা নেমে গিয়েছে। তা আর উঠে আসবে না মুখ দিয়ে। মুখ দিয়ে অনেকটা দুধ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাকে সোজা করে ধরুন। না হলে সে বিষম খেতে পারে। আর হ্যাঁ, দুধ খাওয়ানোর পর বাচ্চাকে বেশি ঝাঁকাঝাঁকি করবেন না।
পরামর্শ#৫
ছ'মাস বয়স হওয়ার আগে শিশুকে জল খাওয়াবেন না, তাতে তার শারীরিকভাবে ক্ষতি হতে পারে। ততদিন অবধি ক্ষুধা এবং পিপাসা মেটাতে মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্কই যথেষ্ট।
পরামর্শ #৬
বাচ্চাকে কখনও পেটের উপর ভর দিয়ে বা পাশ ফিরিয়ে শোয়াবেন না, তাতে তাদের শরীরে বায়ু চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চিৎ করে রাখলেই শিশুরা খুশি। কিছু কিছু ব্যায়ামের জন্যে শিশুকে উল্টো করে শোয়ানোর দরকার হতে পারে, কিন্তু তার জন্যে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
পরামর্শ #৭
সদ্যোজাতকে সবসময়ে সমান জায়গাতে শোয়াবেন। বালিশ বা উঁচুনিচু কিছুতে নয়। তাতে তাদের ঘাড়ে বা কোমল মেরুদণ্ডে আঘাত লাগতে পারে।
পরামর্শ #৮
শিশুকে কোলে নেওয়ার সময়ে ঘাড়ের কাছে আগে ধরুন। ওদের ঘাড় শক্ত হতে হতে তিন মাস মতো লেগে যায়। ততদিন খুব সাবধানে ধরুন।
পরামর্শ #৯
বাচ্চা যদি অস্বাভাবিকরকম কাঁদে, তাহলে অবশ্যই শিশুবিশেষজ্ঞকে দেখান। শুধু 'খিদে পেয়েছে বলে কাঁদছে' বলে উপেক্ষা করবেন না। শিশুরা যেহেতু কথা বলতে পারে না, তাই ওদের একমাত্র পথ কেঁদে আপনাকে ওর অসুবিধার কথা জানানো। বোঝার চেষ্টা করুন ও কী বলতে চাইছে।
পরামর্শ #১০
বাচ্চাকে স্নান করানোর সময়ে বিশেষ খেয়াল রাখবেন বাথটাবে কতটা জল নিচ্ছেন। জলের পরিমান যেন খুব গভীর না হয় যাতে আপনার শিশু তাতে পুরো ডুবে যেতে পারে। যদিও আপনি শিশুর স্নানের সময়ে উপস্থিত থাকেন, তবুও সাবধানের মার নেই।
এই দশটি পরামর্শ মেনে চলুন, আপনার শিশুর দেখভাল নিয়ে বিশেষ অসুবিধা হবে না আপনার। আর তো কয়েকটা মাসের ব্যাপার। তারপরে একবার আপনার সোনামনি বড় হয়ে গেলে তো আর কথাই নেই।