Just In
গর্ভাবস্থায় এই পাঁচ সবজি ডায়েটে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন
প্রত্যেক মহিলার জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হল গর্ভাবস্থা। প্রেগনেন্সি কিটে দুটি লাইন দেখার সাথে সাথেই হবু মায়ের মন আনন্দে ভরে উঠে। তবে আনন্দের মাঝে মায়েদের মনে ঘুরপাক খায় কীভাবে নিজে সুস্থ থাকবেন এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানকে সুস্থ রাখবেন। কারণ, গর্ভস্থ সন্তান পুষ্টি পায় তার মায়ের কাছ থেকেই। চিকিৎসকদের মতে, মাতৃত্ব অনুভব করা যতটা আনন্দদায়ক, তেমনি এই সময়টা নিজেকে সুস্থ রেখে সন্তান জন্ম দেওয়া ততটাই কষ্টকর। প্রায় ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে সন্তান ধারণ করে চলা সহজ কথা নয়। সামান্য অসতর্কতা হলেই ঘটতে পারে বিপদ। একজন সুস্থ মা-ই পারেন সুস্থ-সবল সন্তানের জন্ম দিতে। ঠিক এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মায়েদের তাদের ডায়েটের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বার বার বলে থাকেন।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, মায়েদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতির কারণে নবজাতক সন্তানও নানবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। কখনও কখনও প্রিম্যাচিওর বেবিও জন্মগ্রহণ করে। তাই সকল হবু মায়ের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সঠিক ডায়েট গ্রহণ করা। তাই চলুন গর্ভাবস্থায় আপনার কোন কোন সবজিগুলি ডায়েটে অবশ্যই রাখা উচিত তা জেনে নিন।
১) বিট
বিট গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুব উপকারি একটি সবজি। এটি ভিটামিন-সি ও ফাইবারের দুর্দান্ত উৎস। যে কারণে বিট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে, অ্যানিমিয়া ও অস্টিওপোরোসিস-এর ঝুঁকি কমায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও ভ্রুণের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
২) মটরশুঁটি
মটরশুঁটি ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার। পাশাপাশি এতে উচ্চ পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামও রয়েছে। তাই এটি গর্ভবতী মায়েদের ডায়েটের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়েদের সবচেয়ে বড় সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এটি।
৩) ব্রকোলি
গর্ভাবস্থায় ডায়েটে ব্রকোলির ভূমিকা অতুলনীয়। এটি পটাশিয়াম, ফোটেল, লোহা, ভিটামিন-এ, সি এবং কে দ্বারা সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মা এবং সন্তানের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সহায়ক।
৪) টমেটো
টমেটো কার্বোহাইড্রেট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বায়োটিন, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে ইত্যাদির দুর্দান্ত উৎস, যা গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের স্বাস্থ্যকর বিকাশে সহায়তা করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা, রক্ত ক্ষয় রোধ করা, হজম শক্তি উন্নত করা, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখা, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করা, ইউটিআই প্রতিরোধ করা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে কতটা পরিমাণ খাওয়া উচিত তা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই খাবেন। কারণ এটি বেশি খেলে শরীরের পক্ষে ভালো নয়।
৫) পালং শাক
গর্ভাবস্থায় ডায়েটে পালং শাক রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এতে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলি শিশুর জ্ঞানীয় বিকাশ ও গর্ভবতী মায়েদের মেজাজ ভালো রাখতে এবং গর্ভপাত রোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, ভ্রুণের হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধিতে সহায়তা করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করা ও ত্বককে ঠিক রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।
তবে এক্ষেত্রে একটি সপ্তাহে কতটা পরিমাণ খাবেন, তা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই ডায়েটে রাখবেন।
আরও পড়ুন : গর্ভাবস্থায় অ্যানিমিয়া আটকাতে খান তুলসী পাতা, জানুন এর অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা