Just In
ওয়ার্ল্ড আর্থ্রাইটিস ডে: বায়ু দূষণের কারণে মরচে ধরতে থাকা হাড়েদের বাঁচাবেন কিভাবে জানা আছে?
সম্প্রতি "এইমস"হাসপাতালের একদল চিকিৎসক একটি গবেষাণা চালিয়েছিলেন, তাতে দেখা গেছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে ধীরে ধীরে শরীরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা এতটা বাড়ছে।
যত দিন যাচ্ছে আক্সিজেনের সঙ্গী হচ্ছে ক্ষতিকর সব গ্রিন হাইজ গ্য়াস। আর এদের প্রভাবে ফুসফুস তো ঝাজরা হচ্ছেই, সেই সঙ্গে সারা শরীরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ২০৬ টা হাড়ও মরতে বসেছে।
সম্প্রতি "এইমস"হাসপাতালের একদল চিকিৎসক একটি গবেষাণা চালিয়েছিলেন, তাতে দেখা গেছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে ধীরে ধীরে শরীরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা এতটা বাড়ছে যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অন্যান্য বোন ডিজিজে হওয়ার সম্ভাবনাও।
গত কয়েক বছর ধরে দিল্লির পাশাপাশি দেশের বড় বড় শহর থেকে সংগ্রহ করা ডেটা বিশ্লেষণ করে চিকিৎসকেরা একটা বিষয়ে এক মত হয়েছেন যে দূষিত বায়ু এবং পলিউশানের কারণে বাতাসে এমনসব ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বাড়ছে, যাদের প্রভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শুধু দুর্বল হয়ে যাচ্ছে না, সেই সঙ্গে ইমিউন সিস্টেমে এমন কিছু পরিবর্তন হচ্ছে, যার প্রভাবে খারাপ উপাদানকে নষ্ট করার জায়গায় শরীরকেই আক্রমণ করে ফেলছে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা। ফলে হাড়ের ক্ষয় চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখা দিচ্ছে আরও অনেক রোগ।
এখন প্রশ্ন হল এমন পরিস্থিতিতে হাড়ের স্বাস্থ্য ধরার রাখার উপায় কী? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়। ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, যে যে খাবার এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. দই:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং সার্বিকভাবে দেহের সচলতা বৃদ্ধিতেও দইয়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার আগে বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে দই মজুত করে রাখতে ভুলবেন না যেন!
২. দুধ:
নিয়মিত এক গ্লাস করে দুধ খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়। আর একথা কে না জানে বলুন যে হাড়ের গঠনে এই উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হলে আর্থ্রাইটিস শুধু নয়, আরও নানা সব হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৩.পনির:
দই-দুধের পরে যে দুগ্ধজাত প্রডাক্টটি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেটি হল পনির। তাই তো যাদের দই আর দুধ খেতে ভাল লাগে না, তারা পনিরের নানা পদ খেতে পারেন। এমনটা করলেও শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড়েদের নিয়ে চিন্তা দূর হয়।
৪.মাছ:
এতে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তপোক্ত করে তোলার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে বায়ু দূষণের খারাপ প্রভাব শরীরের অন্দরে তেমন একটা ক্ষতি করার সুযোগই পায় না।
৫. ডিম:
প্রোটিনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি দৈনিক ভিটামিন ডি-এর চাহিদা মেটাতেও ডিমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর ভিটামিন ডি যখন একবার শরীরে প্রচুর মাত্রা মজুত হয়ে যায়, তখন হাড়ের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে হার্ট থেকে কিডনি, শরীরের প্রতিটি অঙ্গ এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ জীবন পাওয়ার স্বপ্ন একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে।
৬. পালং শাক:
বাঙালির পছন্দের শাকগুলির মধ্যে অন্যতম এই শাকটির অন্দের উপস্থিত রয়েছে প্রচুর মাত্রয় ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের খেয়াল রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো প্রতিদিন এক কাপ করে সেদ্ধ পালং শাক খেলে বোন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ভয় আর থাকে না। প্রসঙ্গত, সবুজ এই শাকটির শরীরে ক্যালসিয়াম ছাড়াও রয়েছে ফাইবার, আয়রন এবং ভিটামিন এ। এই উপাদানগুলি রক্তাঅল্পতা দূর করার পাশাপাশি পেটের রোগের উপশেম সাহায্য করে থাকে।
৭. কমলা লেবুর রস:
এক গ্লাস তাজা কমলা লেবুর রসে এত পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে যে তা হাড়ের রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। তাই তো বায়ু দূষণের হাত থেকে যদি ২০৬ টি হাড়কে সামলে রাখতে চান, তাহলে প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে এক গ্লাস করে কমলা লেবুর রস খেতে ভুলবেন না যেন!
৮. সবুজ শাক-সবিজ:
শরীরকে সুস্থ রাখতে সবুজ শাকসবজির যেমন কোনও বিকল্প হয় না, তেমনি বায়ু দূষণের খারাপ প্রভাব থেকে বাঁচাতে এবং অটোইমিউন ডিজিজের আশঙ্কা কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো চিকিৎসকেরা প্রতিদিন অন্তত একবেলা করে শাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।