For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

বাঙালিরা মাছ কেন এত ভালোবাসে

By Tulika Ghoshal
|

পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলের খাদ্য নির্ভর করে, সেই অঞ্চলে, তা প্রচুর পরিমাণে লভ্যতার উপর| উপকূলবর্তী সম্প্রদায় হোক বা অন্তর্দেশীয় মরুভূমি, সে অঞ্চলের রন্ধনপ্রণালী আশেপাশে কী পাওয়া যায় তার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে|

ঐতিহাসিকভাবে মানুষ উর্বর ভূমি, খাদ্য ও জলের অভিগম্যতার কারণে নদীর পার্শবর্তী এলাকায় বসতি স্থাপন করে| বাংলায় জলাশয়ের প্রাচুর্য বরাবরের-তা সে নদী হোক, হ্রদ কিংবা পুকুর| আর সমুদ্রের অবস্থান তো অস্বীকার করাই যায় না| পুরোনো দিন থেকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকা বাংলার মানুষকে কেউ মাছের আরাধনার থেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি| এই কারণে বাংলার জনগণ মাছ খাওয়া শুরু করে, পাশাপাশি মাছ ধরা একটি পেশা হিসেবেও গণ্য হয়| এবং এই পেশার স্বার্থেই ছোট নৌকো, ডিঙি নৌকো শুধুমাত্র বাঙালি দ্বারাই উদ্ভাবিত হয়েছে|

সমাজবিজ্ঞান এবং সামাজিক মনোবিজ্ঞানে এটা বলা হয়ে থাকে যে, অভ্যাস ঐতিহ্য এবং ঐতিহ্য সংস্কৃতিতে পরিণত হয় যা সামগ্রিকভাবে সমাজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে| অতএব কালক্রমে বাঙালিদের মাছ খাওয়া অনিবার্য্য হয়ে ওঠে এবং ক্রমশ এটি সমাজের সংস্কৃতি হিসেবে পরিপূর্ণতা পায়|

বাংলায় নানা ধরণের মাছ, সেইসঙ্গে সামুদ্রিক খাদ্য প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায় তা সে বাংলার আবহাওয়া মনোরম হোক বা ঝোড়ো| বর্ষাকালে যখন চারিদিক বন্যায় ভেসে যায়, আনাজের হাহাকার পরে যায়, মাছের যোগানে কিন্তু কোনও হ্রাস থাকে না|

বাঙালি মাছ কেন এত ভালোবাসে এই প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ একটি মহাকাব্য রচনা হয়ে যেতে পারে| বোল্ডস্কাইয়ের মাধ্যমে, বাঙালিদের মাছের ওপর অগাধ প্রেমের কিছু বিষয়ে আসুন আলোকপাত করি|

বাঙালিরা মাছ কেন এত ভালোবাসে

মাছের বাজার
এটা সহজলভ্য এবং সুবিধে মত কিনতে পাওয়া যায় | আর তাই হয়তো বাংলায় প্রতি এক কিলোমিটার ব্যবধানে একটি করে মাছের বাজার দেখতে পাওয়া যায়| সেই সব বাজারে কত ধরণের মাছের যোগান থাকে-জনপ্রিয় সামুদ্রিক মাছ যেমন ভেটকি, পমফ্রেট, চিংড়ি, ভোলা, পাবদা, আর, চিতলের পাশাপাশি নদী বা পুকুরের মাছ যেমন রুই কাতলা, কৈ, তেলাপিয়া, শিঙি, মাগুর, পার্শে এবং ছোট মাছ যেমন ট্যাংরা, কাজুলি, মৌরলা, পুটি মাছও দেখতে পাওয়া যায়| কিন্তু বাঙালি আর ইলিশ একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক| তাদের ইলিশ ও চিংড়ির মজাদার টানাপোড়েন সর্বজন বিধিত|

মাছের বিভিন্ন পদ
একই মাছ কয়েক ডজন উপায়ে রান্না করা যায় যেমন ভাপা, শুকনো, ভাজা, সেঁকা বা সহজ ঝোল এবং মাছের শরীরের বিভিন্ন অংশ বাঙালি রন্ধনপ্রণালীতে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করে থাকে| উদাহরণস্বরূপ, মাছের মাথাটি বিভিন্ন রেসিপির দ্বারা আলাদাভাবে রান্না করা হয়| আবার এমনও দেখা যায় যে একই বাঙালি বাড়িতে দুই তিন রকমের মাছের পদ রান্না হয়ে থাকে কারণ পরিবারের সকল সদস্যের একই মাছ পছন্দ নয়|

মাছের উপকারিতা
মাছ প্রোটিনের একটি উৎস এবং এটি বলা হয়ে থাকে বাঙালিদের বুদ্ধির উৎসও বটে| মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল কারণ এতে ভিটামিন ডি আছে এবং এটি একটি প্রাকৃতিক এন্টি- ডিপ্রেসেন্ট| এছাড়াও মাছে ওমেগা-৩এর মত ফ্যাট আছে যা ত্বক ও চুল ভাল রাখে|

বাঙালি অনুষ্ঠানে
বাঙালি বিয়ের অনুষ্ঠানে মাছ, শুভ ও অভ্যর্থনার চিহ্ন হিসেবে গণ্য করা হয়, আর তাই উভয় বধূ এবং বরের একে অন্যের বাড়িতে উপহার হিসাবে মাছ পাঠানো হয়| যদি একটি সংস্কৃতিতে, নববিবাহিত বধূকে তার নতুন বাড়িতে প্রবেশের সময়, মাটিতে না ফেলে, হাতে একটি পিচ্ছিল মাছ ধরে রাখতে হয়, এটা প্রমাণ করার জন্য যে তিনি ভবিষ্যতে পরিবারকে একসাথে রাখতে পারবেন, অনুমান করা যেতে পারে এই সংস্কৃতির লোকজনেরা মাছ নিয়ে কতটা আন্তরিক|

এমনকি যে সব বাঙালি বাংলার বাইরে আছেন তারাও মাছের আস্বাদনের আশায় অসাধ্য সাধন করে বাংলার বাইরে মাছের হদিস নিয়ে থাকেন| বলা বাহুল্য বাঙালির মাছের প্রেম বড় নিবিড়|

English summary

বাঙালিরা মাছ কেন এত ভালোবাসে | বাঙালিদের মাছ প্রীতি | বাঙালিদের কাছে মাছের গুরুত্ব

why bengalis love fish with
Story first published: Friday, December 9, 2016, 12:31 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion