Just In
Don't Miss
Droupadi Murmu : ইতিহাস গড়লেন দ্রৌপদী মুর্মু, প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি পেল ভারত
স্বাধীন ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে হারিয়ে দ্রৌপদীই হলেন ভারতের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি। ২৪ জুলাই শেষ হচ্ছে দেশের ১৪তম রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ। এর পরে ২৫ জুলাই শপথ নেবেন দ্রৌপদী।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভোটমূল্য ছিল ৫,৪০,৯৯৬। দ্রৌপদী তৃতীয় রাউন্ড গণনার পরেই পেয়ে যান ৫,৭৭,৭৭৭ মূল্যের ভোট। সেই সময় বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিন্হার প্রাপ্তি ছিল ২,৬১,০৬২ মূল্যের ভোট। সব রাউন্ড গণনার পর দ্রৌপদী পেয়েছেন ৬,৭৩,৮০৩ মূল্যের ভোট, আর যশবন্ত পেয়েছেন ৩,৮০,১৭৭ মূল্যের ভোট। গণনা শেষে দেখা গেল, দেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন দ্রৌপদী।
ওড়িশায় জন্ম নেওয়া দ্রৌপদী শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন, তারপর মন্ত্রী হন। পরবর্তী কালে রাজ্যপাল। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ জোটের প্রার্থী। রাজনৈতিক ভাবে সফল দ্রৌপদীর ব্যক্তিগত জীবনে বেদনার অন্ত নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক, তাঁর জীবনের কিছু অজানা কথা -
দ্রৌপদী মুর্মু কে?
১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে এক সাঁওতাল পরিবারে জন্ম দ্রৌপদীর। ভুবনেশ্বরের রামাদেবী ওমেনস কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একটি স্কুলে শিক্ষিকার কাজ করতেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রীঅরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষকতা করেছেন দ্রৌপদী। ওড়িশা সরকারের সেচ বিভাগে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
শ্যামচরণ মুর্মুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দ্রৌপদী। দুই পুত্র ও কন্যা নিয়েই ছিল মুর্মু দম্পতির পরিবার। কিন্তু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন শ্যামচরণ। এর পর তিনি তাঁর দুই পুত্রকেও হারিয়েছেন।
দ্রৌপদীর এক মাত্র কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী। গণেশ হেমব্রম নামে এক রাগবি খেলোয়াড়কে বিয়ে করছেন তিনি, তাঁদের এক কন্যাও রয়েছে।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৯৭ সালে প্রথম নির্বাচনে লড়েন এবং জিতেওছিলেন। ওড়িশার রায়রংপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন দ্রৌপদী। ২০০০-২০০৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তিনি নবীন পট্টনায়কের নেতৃত্বাধীন বিজেডি-বিজেপি সরকারে মন্ত্রী হন। ২০০০ সালের মার্চ থেকে ২০০২ সালের অগষ্ট পর্যন্ত, তিনি বাণিজ্য ও পরিবহন দপ্তরে ছিলেন। ২০০২ সালের অগষ্ট থেকে ২০০৪ সালের মে মাস পর্যন্ত, তিনি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় সামলেছেন। ২০০৯ সালে বিজেডির সঙ্গে বিজেপির জোট ছিন্ন হয়ে গেলেও তিনি বিধানসভা ভোটে জিতে যান। দ্রৌপদী বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার ভাইস-প্রেসিডেন্টও ছিলেন।
২০১৫ সালে ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নেন দ্রৌপদী মুর্মু। দ্রৌপদীই ঝাড়খণ্ডের প্রথম রাজ্যপাল যিনি পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন। তিনি ওড়িশার প্রথম মহিলা এবং উপজাতীয় নেত্রী ছিলেন যিনি ভারতীয় রাজ্যের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন।
২০১৭ সালেও রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নাম উঠছিল দ্রৌপদী মুর্মু-র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিহারের তৎকালীন রাজ্যপাল রামনাথ কোবিন্দকেই বেছে নেয় কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন জোট।