Just In
১৫০ বছর পর আবার চাঁদ হতে চলেছে রক্তাত্ব!
আগামী ৩১ জানুয়ারি চাঁদ নিজেকে বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই যারা মহাকাশ সম্পর্কে আগ্রহ রাখেন, তাদের কাছে আগামীর এই লুনার ইক্লিপস যে অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা হতে চলেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই!
চাঁদ...রক্তাত্ব। মানে! আরে আরে ঘাবড়ে যাচ্ছেন কেন বন্ধু! আসল ঘটনাটা হল নতুন বছরে আশ্চর্য এক চন্দ্রগ্রহণ হতে চলেছে আর কয়েক দিনেই। আর সেই দিনই চাঁদ নিজের শরীরের রংকে বদলে ফলতে চলেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এবারের চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের শরীর রক্তের রং নেবে, যা প্রায় ১৫০ বছর পর হতে চলেছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানি মহল।
আগামী ৩১ জানুয়ারি চাঁদ নিজেকে বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই যারা মহাকাশ সম্পর্কে আগ্রহ রাখেন, তাদের কাছে আগামীর এই লুনার ইক্লিপস যে অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা হতে চলেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! তাই আর অপেক্ষা নয়, যত শীঘ্র সম্ভব এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিন। আর একাজে আপনাকে সাহায্য করতেই তো আজ বোল্ডস্কাই বাংলা তাদের পাঠকের জন্য় মাস শেষের এই সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে আকর্ষণীয় সব তথ্য পরিবেশন করতে চলেছে এই প্রবন্ধে।
দ্বিতীয় দফায় ঘটতে চলেছে এই বিরল ঘটনা:
জানুয়ারি মাসে ইতিমধ্যেই একবার ফুল মুন বা পূর্ণিমার দর্শন পেয়েছে ভারতবাসী। এবার সেই একই ঘটনা ঘটতে চলেছে দ্বিতীয় দফায়। তবে এবারের ফুল মুন যারপরনাই "স্পেশাল"! কারণ এবারের পূর্ণিমায় সূর্যকে গিলতে চলেছে চন্দ্র। কিন্তু এবারের এই গ্রহণকে কেন্দ্র করে এত উন্মাদনা কেন? কারণ এবার সূর্যের তেজে পুড়ে নিজের শরীরকেই বদলে ফেলবে চাঁদ। নিজের চিরাচরিত চাঁদনিকে ভুলে রক্তিম বর্ণ ধারণ করবে পৃথিবীর এই উপগ্রহ। তাই তো শুধু বিজ্ঞানি মহলে নয়, আমজনতাও আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছে এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য।
এই চন্দ্রগ্রহণকে "বিরল" আখ্যা দেওয়া হচ্ছে কেন?
আগামী ৩১ তারিখ হতে চলা এই গ্রহণ এর আগে ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে। তাই মহাকাশ যাদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, তাদের কাছে এই চন্দ্রগ্রহণ যে "ওয়ান্স ইন আ লাইফ টাইম চান্স", তা নিশ্চয় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর শুধু তাই নয়, যদি একটু মনে করার চেষ্টা করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন বাকি চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের গায়ের রং এভাবে কখনই বদলে যায় না, যা এবার ঘটতে চলেছে এবং পূর্ণিমা হওয়ার কারণে ব্যাপক স্পষ্টভাবে তা দেখা যাবে। বিজ্ঞানীরা তো মজা করে বলছেন এবারের গ্রহণটি দেখার সময় মনে হবে যেন ৭০ এম এম স্ক্রিনের সামনে বসে সমগ্র ঘঠনাটি উপভোগ করছেন।
সারা বিশ্বের মানুষই কি এই গ্রহণ দেখতে পাবেন?
না একেবারেই নয়। মহাকাশের এই ট্রিট এবার শুধু ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশের নাগরিকদের জন্য। আর বাকি বিশ্বকে এবারের মতো শুধু খবরের কাগজে ছাপা ছবি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। আসলে এমনটা হওয়ার পিছনে বেশ কিছু ভৌগলিক কারও দায়ি। বিজ্ঞানিদের মতে ৩১ তারিখ পৃথিবীর অবস্থান এমন হবে যে প্রশান্ত মহাসাগর চাঁদের দিকে মুখ করে থাকবে এবং গ্রহণটি হবে সন্ধ্যার পর। যে কারণে মধ্য এবং পূর্ব এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দারা সুন্দরভাবে এই সূর্যগ্রহণ দেখার সুযোগ পাবেন এবং পুরো ঘটনাই ঘটবে সান্ধ্যকালীন সময়ে। প্রসঙ্গত, আলাস্কা, হাওয়াই এবং উত্তর-পশ্চিম কানাডার বাসিন্দারও একেবারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই বিরলতম চন্দ্রগ্রহণটি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। প্রসঙ্গত ভারতের আকাশ এই বিরল ঘটনা ঘটতে শুরু করবে সন্ধ্যা ৬:২১ মিনিটে। আর চলবে রাত ৭:৩৭ পর্যন্ত।
কতক্ষণ ধরে চাঁদ রক্তিম বর্ণ ধারণ করবে?
বিজ্ঞানিরা জানাচ্ছেন পুরো ঘটনাটি ঘটবে ৭৭ মিনিট ধরে। পৃথিবীর দক্ষিণ চায়াবৃত্ত থেকে চাঁদ ধীরে ধীরে নিজের স্থান পরিবর্তন করতে শুরু করবে এবং এক সময়ে গিয়ে গিলে ফেলবে সূর্যকে। আর যখনই এমনটা হবে, তখন সূর্যের প্রভাবে বদলে যাবে চাঁদ! শুধু তাই নয়, গ্রহণের সময় চাঁদের নিচের অংশ বেশি উজ্জ্বল দেখাবে উপরের অংশের তুলনায়। তাই আপনি যদি এই বিরল মুহূর্তের ছবি তুলে রাখতে চান, তাহলে চাঁদের নিচের অংশে ফোকাস করতে ভুলবেন না যেন!
এমন ঘটনা আবার কবে ঘটবে?
এবছর এই শেষ গ্রহণ। এমন ঘটনা পুনরায় হবে আবার ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৮ সালে। অর্থাৎ আজ থেকে ঠিক ১০ বছর পরে। আর তার পরে আবার ঘটবে ৩১ জানুয়ারি, ২০৩৭ সালে। মানে আবার প্রায় ৯ বছর পরে।
এর আগে শেষবার চাঁদের এমন রক্তিম বর্ণ ধারণ করার ঘটনা কবে ঘটেছিল?
বৈজ্ঞানিক নথি ঘেঁটে যা জানতে পারা যায় এমন বিরল চন্দ্রগ্রহণ শেষবার হয়েছিল ৩১ মার্চ, ১৮৬৬ সালে। তাই বন্ধুরা এমন এক বিরল মুহূর্তকে যদি মিস করতে না চান, তাহলে আজই ক্যালেন্ডারে ডেটটা মার্ক করে রাখুন। কারণ আপনার জীবনকালে এমন ঘটনার সাক্ষী যে আপনি আর হবেন না, তা হলফ করে বলতে পারি।