Just In
নটি গ্রহের প্রভাবে আমাদের জীবনে কেমন পরিবর্তন হয় সে বিষয়ে জানা আছে কি?
আমাদের জীবনে ভাল-মন্দের টিকিটা বাঁধা রয়েছে মহাকাশে ঘুর্নিয়মান বেশ কিছু গ্রহ-নক্ষত্রের সঙ্গে। তাই তো এদের গতিপথের সামান্য পরিবর্তনে বদলে যায় আমাদের জীবনের ভারসাম্য।
যারা জ্যোতিষশাস্ত্র সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর রাখেন, তারা জানবেন, আমাদের জীবনে ভাল-মন্দের টিকিটা বাঁধা রয়েছে মহাকাশে ঘুর্নিয়মান বেশ কিছু গ্রহ-নক্ষত্রের সঙ্গে। তাই তো এদের গতিপথের সামান্য পরিবর্তনে বদলে যায় আমাদের জীবনের ভারসাম্য। এই যেমন ধরুন না জ্যোতিষরা বলছেন গত ৩১ জানুয়ারি চন্দ্র গ্রহণের পর অনেকের জীবনেই যেমন পৌষ মাসের আগমণ ঘটেছে, তেমনি কারও কারও বেজায় সর্বনাশও ঘঠেছে। তাই তো সুখে থাকতে গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে অল্প হলেও জ্ঞান থাকাটা জরুরি।
বাস্তবের সঙ্গে দূর দূর পর্যন্ত এর কোনও সম্পর্ক না থাকলেও হিন্দু শাস্ত্র মতে নটি গ্রহের পুজো করা উচিত। শুধু তাই নয়, জন্মের সময় এই গ্রহদের অবস্থান কেমন ছিল, তার উপর নাকি প্রতিটি মানুষেরই বর্তমান এবং ভবিষ্যত নির্ভর করে থাকে। সেই কারণেই তো জ্যোতিষশাস্ত্রে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান বিশ্লেষণ করে কুষ্টি তৈরি করা হয়ে থাকে। আর সেই কুষ্টি মতেই কেউ হয় ধনুরাশির জাতক, তো কেউ সিংহরাশির।
বাস্তবিকই কি নবগ্রহের প্রভাবে আমাদের জীবনের দিশা নির্ধারিত হয়ে থাকে? যদি বিজ্ঞান ভিত্তিক উত্তর চান, তাহলে বলবো এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক প্রাচীন গ্রন্থে এমনটা উল্লেখ রয়েছে যে নানা সময় এইসব গ্রহ নক্ষত্ররা নানাভাবে আমাদের জীবনের উপর প্রভাব ফেলে থাকে। যেমন ধরুন...
১. সূর্য:
শাস্ত্র মতে সূর্য কোনও মানুষের ব্যক্তিত্ব কেমন হবে, তা যেমন নির্ধারণ করে থাকে, তেমনি মনবল বাড়াতে, এনার্জির ঘাটতি দূর করতে এবং ভাগ্যের চাকাকে ঘোরাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো যাদের জন্ম ছকে সূর্যের অবস্থান খুব ভাল হয়, তারা জীবনে খুব উন্নতি করে থাকেন। সেই সঙ্গে নাম-যশের অধিকারি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
২. চন্দ্র:
জীবন কতটা সুখে-শান্তিতে কাটবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে চন্দ্রের অবস্থানের উপর। কারণ পৃথিবীর এই উপগ্রহটি রিলেশনশিপ এবং মানসিক শান্তিকে নির্ধারণ করে থাকে। তাই তো যাদের চন্দ্র খুব ভাল হয়, তাদের ব্যক্তিগত জীবন খুব সুখে কাটে। সেই সঙ্গে জীবনে চলার পথে বাঁধার সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তাই একবার কুষ্টিটা খুলে দেখুন তো আপনার চন্দ্রের আবস্থান ঠিক আছে কিনা। যদি না থাকে, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে যত শীঘ্র সম্ভব কোনও উপায় বার করে নিতে ভুলবেন না যেন!
৩. মঙ্গল:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই গ্রহ আমাদের চরিত্রকে নানাভাবে প্রভাবিত করে থাকে। বিশেষত যাদের কুষ্টিতে মঙ্গলের অবস্থান খুব ভাল হয়, তারা চারিত্রিক দিক থেকে খুব এগ্রেসিভ হন। শুধু তাই নয়, কোনও কিছুতেই মাথা নেওয়াতে এরা প্রস্থুত থাকেন না। প্রসঙ্গত, এমনও দেখা গেছে যে যাদের উপর মঙ্গলের প্রভাব বেশি থাকে, তারা খুব স্বাধীনচেতা হন।
৪. বুধ:
মস্তিষ্কের ক্ষমতা কার কেমন হবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে এই গ্রহটির অবস্থানের উপর। যাদের জন্ম কুষ্টিতে বুধের অবস্থান খুব ভাল হয়, তারা যেমন বুদ্ধিমান হন, তেমনি বহুবিধ গুণের অধিকারিও হয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, যে কোনও বিষয়ের গভীরে গিয়ে সে সম্পর্কে জানার আগ্রহও খুব বেশি থাকে এমন মানুষদের। এরা স্বপ্নের জগতে বাঁচতে একেবারেই পছন্দ করেন না, বরং প্র্যাকটিকাল ভাবনা-চিন্তা করতেই এরা বেশি ভালবাসেন।
৫. জুপিটার বা বৃহস্পতি:
যাদের কুষ্টিতে এই গ্রহটির অবস্থান খুব ভাল হয়, তাদের জীবনে কখনও পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। নাম,যশ, প্রতিপত্তি এদের চির সঙ্গী হয়। কারণ এই গ্রহটির সঙ্গে ভাগ্য, সাফল্য এবং অর্থনৈতিক উন্নতির গভীর যোগ রয়েছে। তাই খেয়াল করে দেখবেন প্রতিটি সফল মানুষেরই বৃহস্পতি খুব চাঙ্গা থাকে। তাই তো তারা এত দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারেন।
৬. শুক্র:
ভালবাসা, রোমেন্স, লাক্সারি, ফুড এবং অর্থ, জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরগুলির সবকটাই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে এই গ্রহটি দ্বারা। তাই সাবধান! কখনও যেন শুক্রর সঙ্গে লড়াই বাঁধাবেন না যেন! তাহলে কিন্তু জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। এখন প্রশ্ন হল যাদের কুষ্টিতে শুক্রর আবস্থান একেবারেই ভাল নয়, তারা কী করবেন? এক্ষেত্রে একজন শিক্ষিত জ্যোতিষির পরামর্শ নিলে উপকার মিলতে পারে।
৭. শনি:
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে এই গ্রহটি বেজায় ভয়ঙ্কর। তাই তো কেউই চান না কারও কুষ্টিতে এই গ্রহটির আগমণ ঘটুক। কারণ শনির প্রভাবে জীবনে সবথেকে কঠিন সময়ের সম্মুখিন হতে হয়। এই সময় মন-মেজাজ যেমন ঠিক থাকে না, তেমনি কাজ-কর্মেও মন বসতে চায় না। ফলে ধিমে তালে হতে থাকে উন্নতি। কোনও কোনও সময় তো উন্নতির রথ একেবারে আটকে যায়। প্রসঙ্গত, সাধারণত শনির প্রভাব সাড়ে সাত বছর ধরে থাকে। আর এই সময় খুব সাবধানে থাকতে হয়। কারণ কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা এই নির্দিষ্ট পিরিয়োডে খুব বেড়ে যায়।
৮. রাহু:
কেউ কতটা উন্নতি করবেন বা ক্ষতির সম্মুখিন হবেন, তা রাহু নির্ধারণ করে থাকে। সহজ কথায় এটি আপনার সাফল্যকে যেমন গ্রাস করতে পারে, তেমনি উন্নতির একের পর এক দরজাও খুলে দিতে পারে। এই কারণেই তো রাহুকে অনেক জ্যোতিষি ড্রাগন হেড নামেও ডেকে থাকেন।
৯. কেতু:
হিন্দু ধর্মের উপর লেখা একাধিক গ্রন্থ অনুসারে কেতুর পিছনে একটি লেজ রয়েছে এবং এদের শরীর হয় অনেকটা ডিমের মতো। এমন আজব দেখতে হলেও এর প্রভাবে কিন্তু আমাদের জীবনে নানা ভাল-মন্দ ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে কেউ জীবনে কতটা উন্নতি করবে, তা কেতুর অবস্থানের উপর নির্ভর করে। তাই তো কেতুর লেজ ছাড়তে মানা করা হয়!