For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

Independence Day: জেনে নিন স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশিষ্ট কিছু নারী মুক্তিযোদ্ধার সম্পর্কে

|

এই বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৫ অগস্ট ইংরেজ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে ভারত স্বাধীন হওয়ার ৭৬ বছর পূর্ণ হল। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসন কর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সেই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছিল ভারত। আজ তাঁদের জন্যই আমরা স্বাধীনতার নিঃশ্বাস নিতে পারি।

Prominent Women Freedom Fighters Of India

স্বাধীনতার লড়াই অত সহজ ছিল না, শত শত মায়ের কোল খালি হয়েছে, শত পিতার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। দেশের মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার জন্য সমস্ত কিছু ত্যাগ করেছেন। এমন অনেক বিপ্লবী আছেন যাঁরা স্বাধীন ভারতের উদীয়মান সূর্যও দেখতে পারেননি। শতকোটি বীর সন্তানের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর স্বাধীনতার মুখ দেখেছিল ভারত। আজ স্বাধীনতার এই ৭৬তম বর্ষে দাঁড়িয়ে আমরা সেই সব বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কে বলব, যাঁদের বীরত্ব চিরকাল তুলনাহীন।

১) কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়

১) কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়

কমলাদেবী ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন উল্লেখযোগ্য নেত্রী, যিনি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা ভেবেছিলেন। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে তিনি থিয়েটার, হ্যান্ডলুম, হ্যান্ডিক্র্যাফ্টকে হাতিয়ার করেছিলেন। তিনি বহু নারীকে শুধুমাত্র দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করতেই নয় বরং অসহযোগ আন্দোলনেও অবদান রাখতে তাঁর দলে যোগদানের জন্য প্ররোচিত করেছিলেন। আবার ব্রিটিশ সরকারের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম ভারতীয় মহিলাও তিনিই।

২) তারা রানি শ্রীবাস্তব

২) তারা রানি শ্রীবাস্তব

এই সাহসী নারী স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিহারের সিওয়ান থানার সামনে এক ব্রিটিশরাজ বিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। ঔই মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ হন ও দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। নিজের জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর পরও থেমে থাকেননি এই মহিয়সী নারী, বরং তাঁকে স্বাধীনতার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে। ভারতের স্বাধীনতা লাভ করার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন ব্রিটিশের বিরুদ্ধে।

৩) মাতঙ্গিনী হাজরা

৩) মাতঙ্গিনী হাজরা

মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক মহান বিপ্লবী নেত্রী। তিনি 'গান্ধীবুড়ি' নামেও পরিচিত ছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে ভারত ছাড়ো আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। তাঁর নেতৃত্বে মেদিনীপুরে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একটি মিছিল চলাকালীন ব্রিটিশ পুলিশের গুলি এসে লাগে তাঁর দেহে। পুলিশ তাঁকে তিনবার গুলি করে। তবুও তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন। এরপরেও বারংবার তাঁর ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। দেশের পতাকা মুঠোর মধ্যে শক্ত করে উঁচিয়ে ধরে 'বন্দেমাতরম' ধ্বনি উচ্চারণ করতে করতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

৪) বেগম হজরত মহল

৪) বেগম হজরত মহল

বেগম হজরত মহল ছিলেন আওয়াধের বেগম। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন বেগম হজরত মহল। আওয়াধের নবাবকে ইংরেজরা নির্বাসিত করলে তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে আওয়াধবাসী ইংরেজ শাসিত লখনউ শহর অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পরে অবশ্য তাঁকে পিছু হঠতে হয়। শেষ পর্যন্ত বেগম হজরত আশ্রয় নিতে বাধ্য হন নেপালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

৫) ভিকাজি কামা

৫) ভিকাজি কামা

ভিকাজি কামা কেবলমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামীই ছিলেন না, পাশাপাশি তিনি লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার লড়াইও চালিয়ে গিয়েছেন সারা জীবন ধরে। ১৯০৭ সালে তিনি জার্মানির স্টুটগার্ট-এ ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কনফারেন্সে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এমনকী মৃত্যুর পর তাঁর যাবতীয় সঞ্চয় তিনি দান করে যান মেয়েদের জন্য তৈরি এক অনাথ আশ্রমে।

৬) পার্বতী গিরি

৬) পার্বতী গিরি

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে পার্বতী গিরি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি পশ্চিম ওড়িশার মাদার টেরেসা নামেও পরিচিত। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়, তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রচারের জন্য স্কুল ছেড়ে দেন। তিনি কংগ্রেসের পক্ষেও প্রচার করেছিলেন। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ব্রিটিশ পুলিশের দ্বারা গ্রেপ্তার হন। দুই বছর পরে তাঁকে জামিন দেওয়া হলেও তিনি দেশের জন্য কাজ করেছেন। তিনি মহিলাদের উন্নয়নে এবং অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠার জন্যও কাজ করেছিলেন।

৭) অরুণা আসাফ আলি

৭) অরুণা আসাফ আলি

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী ও একজন সমাজকর্মী ছিলেন অরুণা আসফ আলি। মহাত্মা গান্ধীর সহযোদ্ধা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। তাঁকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কয়েকবার জেলেও যেতে হয়েছিল। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বম্বের গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে তেরঙা পতাকা তুলেছিলেন এই বীরাঙ্গনা।

৮) রানি লক্ষ্মী বাঈ

৮) রানি লক্ষ্মী বাঈ

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যাঁর নাম একেবারেই ভোলার নয়, তিনি হলেন রানি লক্ষ্মী বাঈ। তিনি ঝাঁসীর রানি বা ঝাঁসী কি রানি হিসেবে জনসাধারণের কাছে সর্বাধিক পরিচিত। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের অন্যতম প্রতিমূর্তি ও পথিকৃৎ হয়ে রয়েছেন তিনি। লক্ষ্মী বাঈ ব্রিটিশদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং তাঁর মাতৃভূমি থেকে বিদেশী শাসনকে উৎখাত করার জন্য বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ করেছিলেন। ১৮৫৮ সালে রানি লক্ষ্মী বাঈ তাঁর সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গোয়ালিয়র কেল্লা দখল করেছিলেন রানি এবং তাঁতিয়া তোপি-র সম্মিলিত বাহিনী। ১৭ জুন, ১৮৫৮ সালে ফুল বাগ এলাকার কাছাকাছি কোটাহ-কি সেরাইয়ে রাজকীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে শহীদ হন রানি।

৯) সরোজিনী নায়ডু

৯) সরোজিনী নায়ডু

সরোজিনী নায়ডু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তিনি যোগ দেন ডান্ডি পদযাত্রায়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যোগ দেন স্বাধীনতা আন্দোলনে। তিনি চম্পারণে নীলচাষীদের হয়েও আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ১৯২৫ সালে তিনি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি। গান্ধীজি অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করলে সরোজিনী নায়ডু এই আন্দোলনে যোগ দেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি কয়েকবার কারারুদ্ধও হয়েছেন।

১০) কমলা নেহেরু

১০) কমলা নেহেরু

কমলা নেহেরু ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং জওহরলাল নেহেরুর স্ত্রী। ১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলনের সময় তিনি এলাহাবাদ এর নারীদের সংগঠিত করেন এবং দোকানে বিদেশী কাপড় ও বিদেশী পানীয় বিক্রয় এর বিরুদ্ধে পিকেটিং শুরু করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্য তিনি গ্রেপ্তারও হন।

ছবি সৌজন্যে

১১) কনকলতা বড়ুয়া

১১) কনকলতা বড়ুয়া

কনকলতা বড়ুয়া ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে আসামের প্রথম নারী শহীদ। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তিনি সগর্বে জাতীয় পতাকা বহন করেছিলেন। সেই জন্য তাঁকে গুলি করা হয়।

English summary

Independence Day: Prominent Women Freedom Fighters Of India

Independence Day: Prominent Women Freedom Fighters Of India.
X
Desktop Bottom Promotion