Just In
- 10 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 12 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 14 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 16 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
পিত্র দোষ: একবার এর খপ্পরে পরলে কিন্তু মহা বিপদ! তাই সাবধান বন্ধু সাধধান...!
এই শব্দবন্ধটির সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত নন। কিন্তু এ সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ বিপদ থেকে তখনই বাঁচা সম্ভব, যখন বিপদের গভীরতা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে। কি তাই না!
এই শব্দবন্ধটির সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত নন। কিন্তু এ সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ বিপদ থেকে তখনই বাঁচা সম্ভব, যখন বিপদের গভীরতা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে। আর শনির সাড়ে সাতির পর আর যে কারণে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে, তা হল এই পিত্র দোষ। তাই এ সম্পর্কে জেনে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বৈকি! কিন্তু কী এই পিত্র দোষ?
সংস্কৃতে "পিত্র" শব্দটির অর্থ হল পূর্বপুরুষ। অর্থাৎ যে প্রিয়জনেরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। সেই পূর্বপুরুষেরা আমাদের উপর যেমন আশীর্বাদের হাত রাখেন, তেমনি কোনও কোনও সময় তাঁদের অভিষাপে আমাদের জীবনে একের পর এক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। আর এই যে এই অভিষাপ তাকেই মূলত শাস্ত্রে পিত্র দোষ বলা হয়ে থাকে।
এমনটা বিশ্বাস কর হয় যে পরলোকে অনেক সময় আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঠিক মতো খেতে পান না। তাই তো বছরের কোনও নির্দিষ্ট সময়ে তাদের পিন্ড এবং জল দান করা উচিত। কিন্তু এমনটা যদি কেউ না করেন অথবা শ্রদ্ধা সহকারে করতে না চান, তাহলে পিত্র দোষে দুষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
এখন প্রশ্ন হল কেউ যে পিত্র দোষের খপ্পরে পরেছেন, তা বোঝা যাবে কীভাবে? জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ কিছু ঘটনা ঘটতে শুরু করে, যা দেখে সহজেই বুঝে যাওয়া সম্ভব হয় যে কারও উপর পিত্র দোষের প্রভাব প্রগাঢ় হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে ঘটনাগুলি ঘটার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলি হল- বাবা মা হওয়ার ক্ষেত্রে বারে বারে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়, পরিবারের অন্দরে কলহ এবং অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়, কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ বাঁধা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, হাজারো চেষ্টার পরেও বিয়ে হয় না অথবা বৈবাবিহক জীবন একেবারেই শান্তিতে কাটে না, বাড়িতে থাকা সব গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে শুরু করে, সম্মানহানীর আশঙ্কা বাড়ে, পরিবারের প্রতিটি সদস্য কোনও না কোনও রোগে সারাক্ষণ ভুগতে থাকবেন, বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে, বাচ্চাদের শরীর ভাঙতে শুরু করবে, রক্ত সম্পর্কিত নানা রোগের প্রকোপ বাড়বে, বাচ্চাদের পড়াশোনা ঠিক মতো হবে না এবং হঠাৎ করে কোনও দুর্ঘটনার কবলে পরার সম্ভাবনা বাড়বে।
এত দূর পড়ার পর নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন পিত্র দোষে আক্রান্ত হলে সব দিক থেকে জীবন এতটাই দুঃখময় হয়ে ওঠে যে প্রতিটি দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। তবে শাস্ত্রে এমন কিছু উপায়ের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, যা পিত্র দোষের প্রভাব কাটাতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তি ফেরাতেও নানভাবে সাবায়্য় করে থাকে। তাই তো বলি বন্ধু, পিত্র দোষের খপ্পরে পরে জীবন একটু একটু করে শেষ হয়ে যাক, এমনটা যদি না চান, তাহলে যে যে নিয়মগুলি মেনে চলটা জরুরি, সেগুলি হল...
১. পূর্বপুরুষদের নাম নিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে:
কোনও এক বিশেষ দিনে একজন বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে পূর্ব পুরুষদের ছবির সামনে উপস্থিত হতে হবে গোটা পরিবারকে। তারপর শ্রাদ্ধ অনুষ্টানের মধ্যে দিয়ে ১৪ পুরুষকে পিন্ড এবং জল দান করে পাঠ করতে হবে পিতৃ গায়ত্রী মন্ত্র। এরপর এক মনে পূর্ব পুরুষদের নাম নিতে নিতে তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন ধীরে ধীরে সব সমস্যাই মিটে যেতে শুরু করেছে।
২. পিতৃ পক্ষের সময় বিশেষ পুজোর আয়োজন করতে হবে:
প্রতি বছর দশ দিনের একটা বিশেষ সময়কে হিন্দু শাস্ত্রে পিতৃ পক্ষ হিসেবে বিবেচিত করা হয়ে থাকে। এই সময় পূর্বপুরুষদের নামে বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে দোষ কেটে যেতে শুরু করে, এমনকী পিত্র দোষের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে পিতৃ পক্ষ চলাকালীন যে প্রিয়জনেরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের নামে জল দান করার পাশাপাশি যদি নতুন জাম-কাপড় দান করা যায়, তাহলেও নাকি দারুন সব উপকার মেলে।
৩. অশ্বত্থ গাছে জল দান করতে ভুলবেন না:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত অশ্বত্থ গাছে জল দান করলে পিত্র দোষ কেটে যেতে সময় লাগে না। কারণ শাস্ত্র মতে এমন করলে পূর্বপুরুষেরা যেমন খুশি হন, তেমনি ভগবান ব্রহ্মাও বেজায় সন্তুষ্ট হন। ফলে তাঁদের আশীর্বাদে জীবনে পুনরায় খুশির আগমন ঘটতে সময় লাগে না।
৪. অমাবস্যায় বিশেষ পুজো:
কোনও প্রিয়জন মারা যাওয়ার পর যেমন শ্রাদ্ধ অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়, তেমনি যদি প্রতি অমাবস্যার সময় করা যায়, তাহলে নাকি পিত্র দোষের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমনও বিশ্বাস রয়েছে যে অমাবস্যার সময় বিশেষ পিতৃ পুজো করলেও সমান উপকার মেলে।
৫. একাদশি এবং অমাবস্যার সময় আমিষ খাবার নৈব নৈব চ:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই দুই দিনে অমিষ খাবার খেলে পূর্বপুরুষেরা বেজায় অসন্তুষ্ট হন। তাই তো বলি বন্ধু, পিতৃদোষের খপ্পরে যদি পরতে না চান, তাহলে এই নিয়মটি মেনে চলতে ভুলবেন না যেন!
৬. মন খুলে দান করুন:
শুনতে হয়তো আজব লাগতে পারে। কিন্তু এমনটা করলে নাকি পূর্বপুরুষেরা বেজায় খুশি হন। ফলে পিতৃ দোষের ফাঁদে পরার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এখন প্রশ্ন হল কোন দিন দান-ধ্যান করতে হবে? আপনার পূর্বপুরুষদের জীবনে যে যে দিনগুলি বিশেষ গুরুত্ব রাখে, তেমন দিনে জামাকাপড় অথবা খাবার সামগ্রী গরীবদের দান করলে দেখবেন সুফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে!