Just In
কার্গিল যুদ্ধ থেকে ভারতের বিখ্যাত ব্লেড রানার, সফরটা কম কঠিন ছিল না কিন্তু!
মেজার দেভেন্দার পাল সিং। নামটার সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত নন। কিন্তু তিনি হলেন সেই ব্যক্তি যাঁকে এক সময় মৃত ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ তিনি ভারতের অন্যতম সেরা ব্লেড রানার।
১৯৯৯ সাল। দিনটা ১৫ জুলাই। জোর কদমে চলেছে কার্গিল যুদ্ধ। সে সময় মর্টারের আঘাতে প্রায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে লড়তে মেজার সিংকে এনে ভর্তি করা হয় আর্মি হাসপাতালে। সে সময় শার্পনেলে ক্ষত বিক্ষত তার শরীরের অবস্থা দেখে চিকিৎসকেরা আশাই ছেড়েই দিয়েছিল। একজন তো তাঁকে মৃত ঘোষণাও করে দেন। কেন করবে নাই বা বলুন! সারা শরীরে শার্পনেলের কারণে বিষ ছড়িয়ে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে একাধিক হাড় প্রায় গুঁড়ো গুঁড়ে হয়ে গিয়েছিল, আর ক্ষুদ্রান্তের অবস্থা ছিল একেবারে ছিন্নবিন্ন। এমন অবস্থায় কারও পক্ষেই বাঁচা সম্ভব ছিল না।
তারপর...
সে সময় আর্মি হাসপাতালে উপস্থিত ডাক্তারের ২৬ বছর বয়সি এই সেনা অফিসারকে মৃত ঘোষণা করে দিলেও একজন সিনিয়ার ডাক্তারের কেন জানি না মনে হয়েছিল দেভেন্দার পাল সিং-এর শরীরে তখনও প্রাণ রয়েছে। তিনি অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিলেন। শুরু হল মৃত্যুর সঙ্গে এক অসম লড়াই। শরীরের বাকি অংশে যাতে বিষ ছড়িয়ে পরতে না পারে তার জন্য দেভেন্দারের ডান পা টা প্রথমেই কেটে বাদ দিয়ে দিন চিকিৎসক। তারপর একে একে বাকি ক্ষতের অপারেশন শুরু হয়। কয়েক ঘন্টা ধরে চলা সেই অপারেশনের পর...
"আমি
শুধু
হাঁটবো
না
দৌড়াবো":
মিরাকেল
সত্যিই
ঘটে।
তাই
তো
সেদিন
অপারেশন
টেবিলে
মারা
না
গিয়ে
নিশ্চিত
মৃত্যুর
মুখ
থেকে
ফিরে
এসেছিলেন
মেজার
দেভেন্দার
পাল
সিং।
সফল
অপারেশনের
পরেও
আরও
এক
বছর
হাসপাতালে
চিকিৎসা
চলেছিল
তাঁর।
যখন
ধীরে
ধীরে
শরীরে
জোর
ফিরে
পাচ্ছেলেন
তখন
সবাই
চিন্তিত
ছিল
এর
পরে
কী
হবে
দেভেন্দারের।
সে
তো
কোনও
দিনই
আর
হাঁটতে
পারবে
না।
তাহলে?
যখন
সবাই
এই
চিন্তায়
ব্যস্ত,
তখন
মেজার
সাহেব
ঠিক
করে
ফেললেন
তাকে
কী
করতে
হবে।
পরিবারকে
সে
সম্পঙ্গে
জানালেনও।
কী
ছিল
তাঁর
সিদ্ধান্ত
জানেন?
তিনি
সিদ্ধান্ত
নেন
এই
ভাবে
পঙ্গুর
মতো
জীবন
তিনি
কাটাবেন
না।
পরিবর্তে
তিনি
দৌড়াবেন।
কিন্তু
কীভাবে?
শুরু
হল
মেজার
দেভেন্দার
পাল
সিং-এর
দ্বিতীয়
জীবন।
ইন্ডিয়ান
ব্লেড
রানার:
দেভেন্দার
আগে
কখনও
দৌড়াননি।
তার
উপর
নকল
পায়ে
দৌড়ানো!
প্রথমটায়
সত্যিই
সম্ভব
ছিল
না।
কিন্তু
হার
মানেননি
একবারও।
অসম্ভব
যন্ত্রণাকে
অগ্রাহ্য
করে
দিনের
পর
দিন
ট্রেনিং
করে
গিয়েছিলেন।
সময়ের
সঙ্গে
সঙ্গে
ধীরে
ধীরে
জোর
বাড়তে
শুরু
করেছিল
তার
পায়ে।
এর
পরই
আমেরিকায়
যান
তিনি।
সেখানে
আধুনিক
প্রস্থেটিক
লিম্ব
লাগানো
হয়
দেভেন্দারের
ডান
পায়ে।
সেই
শুরু
তাঁর
দৌড়,
যা
আজও
থামেনি।
এখন
তো
তিনি
ভারতের
অন্যতম
বিখ্যাত
ব্লেড
রানার।
রেকর্ডের
পর
রেকর্ড:
২৬
বছরের
সেই
যুবক
আজ
৪৩
বছরে
এসে
পৌঁছেছেন।
ইতিমধ্যে
২০
বেশি
ম্যারাথনে
দৌড়ে
ফেলেছেন
দেভেন্দার।
একবার
এই
প্রহঙ্গে
বলতে
গিয়ে
তিনি
বলেছিল,
"আমাদের
মতো
মানুষদের
সবাই
ফিজিকালি
চ্যালেঞ্জড
বলে
বিবেচিত
করে
থাকেন।
এই
ধরণা
বদলে
দেওয়াই
ছিল
আমার
একমাত্র
লক্ষ।"
সত্যিই
মানুষ
চাইলে
যে
কোনও
বাঁধাকেই
যে
পেরিয়ে
যাওয়া
সম্ভব,
তা
আরেকবার
প্রমাণ
করে
দিয়েছেন
মেজার
দেভেন্দার
পাল
সিং।
আজ
তিনি
হাজারো
ফিজিকালি
চ্যালেঞ্জড
মানুষের
কাছে
রোল
মডেল।
জীবনের
বেঁচে
থাকার
একমাত্র
আশাও
বটে!