Just In
- 10 hrs ago রোদে বের হলেই মাথা যন্ত্রণা কাবু করে? মাইগ্রেন নয় তো!
- 11 hrs ago শুধু ফ্যাশন নয়, প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে পরুন সানগ্লাস!
- 13 hrs ago অসহ্য গরমে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন? এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি ট্রাই করুন
- 16 hrs ago কর্মক্ষেত্রে সমস্যা মকরের, ব্যাবসায় আর্থিক লাভ মীনের, কেমন যাবে আজকের দিন? দেখুন রাশিফল
Independence day: কেন ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়? জানুন এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য
"কত বিপ্লবি বন্ধুর রক্তে রাঙা, বন্দিশালার ওই শিকল ভাঙা..." - স্বাধীনতা দিবস প্রকৃত অর্থে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় দিবস। এই প্রজাতন্ত্রের স্বাধীনতাকে ব্রিটিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে প্রাণ গেছে বহু বীর-বিপ্লবীর। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম। যার ফলেই ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে ভারত।
ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল, মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা এরকম শত সহস্র বিপ্লবীদের প্রাণের উৎসর্গে ভারত পেয়েছিল পূর্ণ স্বাধীনতা। ভারতের ইতিহাসে এই ১৫ অগস্ট দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। তারপর থেকেই এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।
এবছর ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতিবছরই দেশজুড়ে মহা ধুমধামের সহিত স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। দিল্লি থেকে শুরু করে প্রত্যেক রাজ্যেই চলছে এই বিশেষ দিন উদযাপন।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেই থেকেই প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি জাতীয় চ্যানেল দূরদর্শনের সাহায্যে সারা দেশে সম্প্রচারিত হয়। রাজ্য রাজধানীগুলিতেও পতাকা উত্তোলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাগুলিও পতাকা উত্তোলন করে। এদিন সমস্ত স্কুল-কলেজেও পতাকা উত্তোলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সব জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়। আকাশে বাতাসে ফুটে ওঠে আনন্দের ছটা। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা এই উপলক্ষ্যে বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাজপোষাক পরে শোভাযাত্রা করে।
স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বর্তমান দিনে প্রায় অনেকেরই অজানা। এই দিনের বিশেষ অনুষ্ঠান দেখার জন্য মানুষ মুখিয়ে থাকে টিভির পর্দায়। কিন্তু, এর আসল ইতিহাস সম্পর্কে হয়তো অবগত নন অনেকেই। কেন ১৫ অগস্ট পালন করা হয় স্বাধীনতা দিবস? এ নিয়ে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস।
১৯৪৬ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ব্রিটেনের রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় ব্রিটেনের পক্ষে অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোনওরকম সাহায্য লাভ অসম্ভব হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার বুঝতে পারে সেই পরিস্থিতে ভারতে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সামাল দেওয়ার ক্ষমতা বা অর্থবল ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হারিয়ে ফেলেছে। তাঁরা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪৭ সালের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করেন, ১৯৪৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ভারতের শাসনক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
স্বাধীনতা ঘোষণার সময় যত এগিয়ে আসতে থাকে, ততই হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। দাঙ্গা রোধে ব্রিটিশ বাহিনীর অক্ষমতার কথা মাথায় রেখে ভারতের তদনীন্তন ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন ক্ষমতা হস্তান্তরের দিনটি সাত মাস এগিয়ে আনেন। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে জওহরলাল নেহেরু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, মহম্মদ আলি জিন্নাহ, ভীমরাও রামজী আম্বেদকর প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দ ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের প্রস্তাব মেনে নেন। হিন্দু ও শিখ সংখ্যাগুরু অঞ্চলগুলি ভারতে ও মুসলমান সংখ্যাগুরু অঞ্চলগুলি নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানে যুক্ত হয়; পাঞ্জাব ও বাংলা প্রদেশ দ্বিখণ্ডিত হয়।
লক্ষাধিক মুসলমান, শিখ ও হিন্দু শরণার্থী র্যাডক্লিফ লাইন পেরিয়ে নিরাপদ দেশে আশ্রয় নেন। পাঞ্জাবে শিখ অঞ্চলগুলি দ্বিখণ্ডিত হওয়ায় রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়। বাংলা ও বিহারে মহাত্মা গান্ধীর উপস্থিতি দাঙ্গার প্রকোপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করেছিল। তা সত্ত্বেও প্রচুর মানুষ সীমান্তের দুই পারের দাঙ্গায় হতাহত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট নতুন পাকিস্তান অধিরাজ্য জন্ম নেয়। করাচিতে মহম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর-জেনারেল হিসেবে শপথ নেন।
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট সূচিত হলে জওহরলাল নেহেরু তাঁর ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। নতুন ভারতীয় ইউনিয়নের জন্ম হয়। নতুন দিল্লিতে জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী রূপে কার্যভার গ্রহণ করেন। মাউন্টব্যাটেন হন স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর-জেনারেল।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৩ বছর পরেও এই একবিংশ শতাব্দিতে আদতেই কি স্বাধীনতার মর্যাদা গণতন্ত্রে পূর্ণতা পাচ্ছে? এই বর্তমান সামাজিক পটভূমিতে হাজারও প্রশ্ন উঠে আসে। কেননা,হিংসা,বিভেদ,চক্রান্তমূলক রাজনীতি স্বাধীন ভারতের পরাধীন মনস্কতার পরিচায়ক হয়ে দাঁড়়িয়েছে। সেই রক্তে রাঙা পূর্ণ স্বাধীনতার বীজ বহন করতে স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারত বিভিন্ন সময়ে অক্ষম হয়ে পড়েছে।
১৫ ই আগস্ট-কে শুধুমাত্র একটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালন না করে এর যথাযথ তাৎপর্য উপলব্ধি করা প্রয়োজন। আমাদের দেশকে হিংসা এবং হানাহানি থেকে মুক্ত করার জন্য নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।