Just In
আজ শনি জয়ন্তী: জানেন কি আজকের দিনে শনি দেবের পুজো করলে কী কী উপকার পাওয়া যায়?
আজকের দিনে শনি দেবের জন্ম হয়েছিল। তাই তো শনি জয়েন্তীর দিন এক মনে শনি দেবের পুজো করলে জীবনে কখনও কঠিন সময়ের সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। সেই সঙ্গে সামাজিক সম্মানও বৃদ্ধি পায় চাখে পরার মতো।
আজকের দিনে শনি দেবের জন্ম হয়েছিল। তাই তো শনি জয়েন্তীর দিন এক মনে শনি দেবের পুজো করলে জীবনে কখনও কঠিন সময়ের সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। সেই সঙ্গে সামাজিক সম্মানও বৃদ্ধি পায় চাখে পরার মতো। তবে এখানেই শেষ নয়, শাস্ত্র মতে এই বিশেষ দিনে সবথেকে শক্তিশালী গ্রহ, শনির আরাধনা করলে মেলে দারুন সব উপকার, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
সূর্য দেব এবং তাঁর স্ত্রী ছায়ার সন্তান হলেন শনি দেব। যিনি বৈশাখ মাসের অমাবস্যার দিনে জন্ম গ্রহন করেছিলেন এবং শনিদেব জন্মের পর যখন প্রথম চোখ খুলেছিলেন, তখন তাঁর ক্ষমতার বিচ্ছুরণ এত মাত্রায় ঘটেছিল যে সূর্যেদেব গ্রহণ আড়ালে চলে গিয়েছিল। তাই তো এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শনি জয়ন্তীর দিনে দেবের আরাধনা করলে তুমুল শক্তির অধিকারি হয়ে ওঠা যায়। ফলে জীবনের ছবিটা বদলে যেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, যারা শনির সাড়ে সাতির খপ্পরে পরেছেন, তারা যদি একটু সময় বার করে আজ পুজো করতে পারেন, তাহলে কিন্তু শনির প্রকাপ কমে যেতে সময় লাগে না।
আচ্ছা জানেন কি শনির সাড়ে সাতি কাকে বলে? জন্ম কুষ্টির বিশেষ ঘরে শনি গ্রহের প্রবেশ ঘটলে অলসতা এবং কমফোর্ট জোন থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে এনে জীবনের সব থেকে কঠিন সময়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন শনি দেব। সেই সঙ্গে প্রতিদিন যেন নরক সমান আগুনের আঁচে জ্বলতে থাকে জীবন। এই কারণেই তো সবাই মনে মনে প্রার্থনা করেন যে এ জীবনে যেন শনির দৃষ্টি না পরে। কারণ একবার যদি দেবের বক্র দৃষ্টি কারও উপর পরে যায়, তাহলে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। কিন্তু শত চেষ্টার পরেও কী সর্বশক্তিমানের প্রকোপ থেকে বেঁচে থাকা যায়? মনে তো হয় না! তাই তো আজ যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে চাইলে শনি দেবের পুজো করতে ভুলবেন না যেন। প্রসঙ্গত, শনি জয়েন্তীর লগ্ন কেটে যাবে আজ বিকাল ৫:১৭ মিনিটে। তাই তার আগে দেবের পুজো দিতে হবে।
এখন প্রশ্ন হল, শনি জয়েন্তীর দিন দেবের আরাধনা করলে কী কী উপকার মিলতে পারে? এক্ষেত্রে এই প্রবন্ধে আলোচিত মন্ত্রগুলি পাঠ করার মধ্যে দিয়ে শনি দেবের পুজো করতে হবে। তাহলেই দেখবেন শনির সাড়ে সাতি কেটে যাবে, সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের কষ্ট কমতেও সময় লাগবে না। শুধু কি তাই, মিলবে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন-
১. যে কোনও দুঃখ দূর করতে শনি বেজ মন্ত্র:
নানাবিধ দুঃখের মারে কি জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে? তাহলে আজকের দিনে শনি দেবের আরাধনা করুন। এমনটা করলে দেখবেন ফল মিলতে সময় লাগবে না। এক্ষেত্রে স্নান সরে পরিষ্কার জামাকাপড় পরে শনি বেজ মন্ত্র জপ করতে হবে। তাহলেই একের পর এক দুঃখের পাহাড় সরে যেতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে খারাপ দৃষ্টির প্রভাবে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যাবে কমে। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল- "আম প্রাণ প্রেম প্রান সে শনৈশ্চরায় নমঃ"।
২. সফলতার চুড়ায় ওঠা সম্ভব হবে:
শাস্ত্র মতে আজ "ওম শাম শনৈশ্চরায় নমঃ", এই মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করলে জীবন পথে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানাবিধ বাঁধার পাহাড় সরে যায়। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে চরম সফলতা লাভের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। এখানেই শেষ নয়, এই মন্ত্রটিকে সমৃদ্ধির মন্ত্রও বলা হয়। তাই তো নিয়ম করে এই মন্ত্রটি পাঠ করলে এবং শনি দেবের আরাধনা করলে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতে সময় লাগে না।
৩. শনি গায়েত্রী মন্ত্র:
মনের জোর বাড়াতে এবং অর্থনৈতিক উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত করতে এই মন্ত্রটি জপ করা যেতে পেরে। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে এই মন্ত্রটি নিয়মিত পাঠ করলে কর্মক্ষত্রে পদন্নতি লাভের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে সকাল সকাল উঠে স্নান সরে এক মনে ১০৮ বার মন্ত্রটি জপ করতে হবে। তাহলেই ধীরে ধীরে সুফল মিলতে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল: "আম শনৈশ্চরায় ভিদ মাহে ছায়াপুত্রায়া ধিমাহে তার মান্দঃ প্রচোদয়াৎ"।
৪. সুখ সমৃদ্ধির ছোঁয়া পেতে:
লক্ষ জন্ম পেরিয়ে পাওয়া এই মানব জন্মে অপার সুখের সন্ধান পেতে কে না চায় বলুন! কিন্তু কীভাবে সুখের সন্ধান মিলতে পারে, সে বিষয়ে আনেকেই জানেন না। তাই তো আজ আপনাদের এমন একটি শনি মন্ত্রের সম্পর্কে জানাতে চলেছি, যা নিয়মিত ১০৮ বার পাঠ করলে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া পেতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে আজ শনি দেবের সামনে বসে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে "শাজায়াম চ ভার্তিশানইয়াকতাম ভাহানিনা ইয়াজিতাম মায়া দীপাম গ্রিহান দেবাশন ত্রিলোকিয়া তিমিরা পাহাম!", এই মন্ত্রটি জপ করতে হবে। প্রসঙ্গত, পর পর চারটি শনিবার যদি এই ভাবে শনি দেবের আরাধনা করতে পারেন, তাহলে ব্যাপক লুফল মেলে।
৫. শনির দোষ কেটে যায়:
"ওম ত্রয়ম্বকম ইজামাহে সুগন্ধম পুষ্টি-বার্ধানাম উর্বারুকা মিভা বন্ধনাম মৃত্যুর মুকশো মামরাত...", এই মন্ত্রটি ১০৮ বার পাঠ করলে শনির দোষ কেটে যেতে সময় লাগে না। ফলে দীর্ঘ সাত বছর শনি দেবের প্রকোপ সহ্য় করতে আর হয় না। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে শনির সাড়ে সাতি কেটে গেলে জীবনের প্রতিটি বাঁকে সফলতার স্বাদ মেলে। শুধু তাই নয়, শাস্ত্র মতে এই শনি মন্ত্রটি জপ করা শুরু করলে আশেপাশে পজেটিভ শক্তির প্রভাব এতটা বেড়ে যায় যে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও যায় কমে।