Just In
Don't Miss
দীপাবলি ২০১৯ : এই দীপাবলিতে কী করবেন আর কী করবেন না জেনে নিন
আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠেছে গোটা দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী একযোগে পালিত হয় এই খুশির উৎসব। এই দিওয়ালিতে পশ্চিমবাংলার বিশেষ আকর্ষণ কালীপুজো। বাচ্চা থেকে শুরু করে মাঝবয়সী, সবার কাছে এই উৎসবের আলাদা গুরুত্ব দেখা যায়। বাড়ির মেয়ে, বউরা যেমন বাড়ির চারপাশে প্রদীপ বা মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলেন, তেমনই বাড়ির তরুণ থেকে কচিকাঁচা সকলেই আতশবাজি নিয়ে মেতে থাকেন এই উৎসবে। কিন্তু বাজি ফাটানোর সময় একটু সতর্ক না থাকলে এই আনন্দ হয়তো খুব সহজেই নিরানন্দে পরিণত হতে পারে।
নানা উৎসবেই আমরা বাজি পোড়াই। যার মধ্যে বিশেষত আলোর উৎসব দিওয়ালির কথা সবার আগে বলতে হয়।পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি এই বাজি থেকে বিপত্তি মূলত তিনভাবে হতে পারে। বাজি ফাটানোর সময় কানের ক্ষতি ,চোখের ক্ষতি এবং আগুনের ফুলকি লেগে শরীরের নানা অংশে ক্ষতি হতে পারে।
শব্দের তীব্রতা ৮৫ ডেসিবেল পর্যন্ত আমরা সহ্য করতে পারি, এর বেশি হলে নানান ক্ষতি হয়। যেমন ধীরে ধীরে শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়া, হার্টের গতি ও রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া, নানা মানসিক বৈকল্য ইত্যাদি। বাজি ফাটানোর সময় হঠাৎ কানের সামনে চকলেট বোমা ফাটলো এবং সেই বিকট আওয়াজ একেবারে লাগলো আপনার কানের পর্দায়। এর ফলে কিছুক্ষণের জন্য কানে শুনতে পাওয়া যায় না, কেউ কেউ অজ্ঞানও হয়ে যায়। আবার ১৬০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ হলে কানের পর্দা সরাসরি ফেটে যেতে পারে। ফলে চিরতরে বধির হয়ে যেতে পারেন।
হঠাৎ করে আগুনের ফুলকি কিংবা বাজির অন্যতম উপাদান সালফারের গুঁড়ো চোখে এসে পড়তে পারে। আগুনের ফুলকিতে চোখের কর্নিয়া পুড়ে যেতে পারে। ফলে আপনার দৃষ্টি শক্তি চলে যেতে পারে।
বাজি পোড়ানো মানেই আগুন নিয়ে খেলা করা। কাজেই আগুনের ছেঁকা, ফোস্কা এমনকি আগুনে পুড়ে জীবন সংশয়ও হতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই বিপত্তি বেশি ঘটে।
বিপত্তি হতে পারে জেনেও হয়তো বাজি পোড়ানো থেকে ক্ষান্ত থাকবেন না কেউই। তবে সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সুতরাং বাজি ফাটানোর সময়ে যাতে বিপত্তি না ঘটে তার জন্য আপনাদের কী কী করণীয় তা জেনে নিন আগে থেকে।
১. জনবহুল পরিবেশে বাজি ফাটাবেন না। বাজি ফাটান ফাঁকা জায়গায়, বাড়ির খোলা ছাদে ও বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায়।
২. যেখানে বাজি ফাটাবেন সেই জায়গা থেকে অনেকটা দূরে অন্য বাজিগুলি মজুত করুন। সেখান থেকে নিয়ে এসে এক এক করে ফাটান।
৩. শব্দ বাজি না ফাটিয়ে আলোর বাজি ফাটান। আলোর বাজি দিয়েই উপভোগ করুন দিওয়ালি।
৪. শব্দবাজির মুখোমুখি পড়ে গেলে হাতে কান চাপা দিয়ে, চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
৫. সিন্থেটিক ও ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন না। পায়ে জুতো ও মোজা পরুন এবং বাড়ির সকলকেও তাই পরান।
৬. চোখে চশমা বা সানগ্লাস পরে বাজি ফাটান। লক্ষ্য রাখবেন যাতে বারুদ ছিটকে না পড়ে। চোখে গেলে 'কনজাংটিভাইটিস' হতে পারে।
৭. যেখানে বাজি ফাটাবেন তার কাছেই খানিকটা জল ও একটি মোটা কম্বল রেখে দিন। আধপোড়া বাজিতে জল ঢেলে দেবেন।
৮. বাচ্চাদের বাজি ফাটানোর স্থানে রাখবেন না। এমনকি, তাদের কাছে মজুত করা বাজিও রাখবেন না।
৯. শিশুরা যাতে রকেট জাতীয় বাজি না ফাটায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর বড়রা এই জাতীয় বাজি ফাটালে একটা লম্বা বোতলে খাড়া করে তার পর আগুন দেবেন। যেন উল্টোপাল্টা জায়গায় না লাগে।
১০. ড্যাম্প লাগা বাজি পোড়াবেন বা। পোড়ানোর আগে ভালো করে দেখে নেবেন।
১১. পকেটে বাজি ও দেশলাই বা লাইটারের মতো জিনিস একসঙ্গে রাখবেন না।
১২. হাতে নিয়ে শব্দবাজি ফাটাতে যাবেন না। শব্দবাজি ফাটানোর সময় দেশলাই বা লাইটার দিয়ে ধরাবেন না, এতে বাজি হঠাৎ করে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনার দেখাদেখি ছোটোরা তা করলে প্রাণঘাতী হতে পারে। একটি বড় স্টিকের সঙ্গে মোমবাতি লাগিয়ে দূর থেকে আগুন দিন।
মনে রাখবেন উৎসব মানেই আমার আপনার সকলের। আপনার করা আনন্দ যেন অপরের ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। এই দিওয়ালিতে একটু সাবধানতা অবলম্বন করে ও সংযত হয়ে বাজি পোড়ান। দেখবেন এই উৎসব আরও বর্ণময় ও মনোগ্রাহী হয়ে উঠবে।