Just In
গরম পড়লেই গায়ের দুর্গন্ধ? ঘামের সমস্যা থেকে বাঁচার রাস্তা
ঘামের সমস্যা থেকে মুক্তি একান্তই প্রয়োজন এখনের জীবনে, আর সে নিয়েই এই লেখা।
আমাদের শরীরের তাপমাত্রা দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম থাকে। এই বিভিন্ন তাপমাত্রার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে ঘামের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ঘামের মাধ্যমে শরীর অতিরিক্ত তাপ বর্জন করে দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য ঠিকঠাক রাখে। কিন্তু এই ঘামই আবার বিভিন্ন সময়ে হয়ে ওঠে লজ্জার কারণ।
কোনও অনুষ্ঠানে বা কর্মক্ষেত্রে যখন লোকের সঙ্গে মেলামেশা করার প্রয়োজন পড়ে, ঘাম ও ঘামের দুর্গন্ধ আপনাকে অপ্রস্তুত করে তোলে। ফলে ঘামের সমস্যা থেকে মুক্তি একান্তই প্রয়োজন এখনের জীবনে, আর সে নিয়েই এই লেখা।
১। মশলাদার খাবার বন্ধ:
ঘাম তো যে কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীদেরই হয়, কিন্তু দুর্গন্ধের কারণ কী? আসলে আমাদের ত্বকের উপরিভাগে রোমকূপে থাকে একধরনের ব্যাক্টিরিয়া, যা ঘাম থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে। ঘাম হওয়া আটকাতে গেলে প্রথমেই যেদিকে নজর দেওয়া উচিত তা হল খাদ্যাভ্যাস। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যত কম পরিমাণে ফাস্টফুড, মশলাদার খাবার ও তেলের খাবার রাখা যায় ততই ভালো। এধরনের খাবার পেটে ঢুকলেই প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন করতে থাকে যা কমাতে শরীর ঘাম উৎপন্ন করে। তাই প্রথমেই এড়াতে হবে এই ধরনের খাবার। প্রোটিন জাতীয় খাবার শরীরে যথেষ্ট তাপ উৎপন্ন করে। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোটিন খাদ্য বাদ রাখুন তালিকা থেকে। বাদ দিতে হবে ক্যাফাইন জাতীয় খাবার কফিও যা প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন করে। বরং খাদ্যতালিকায় রাখুন ফল ও শাকসবজি যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। জলীয় খাবার ও বিশেষত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জল রোজ খান, এতে শরীর সহজে গরম হবে না, ফলে ঘামও হবে না।
২। হালকা রঙের জামা পরুন:
গাঢ় রঙের জামা যত বেশি পরবেন, আপনার শরীর আশেপাশের তাপ আরও বেশি শোষণ করবে। ফলে ঘামও নিশ্চিত। তাই চেষ্টা করুন দিনের বেলা হালকা রঙের জামা পরতে। হালকা রঙের জামা যে কোনও রকমের তাপ প্রতিফলিত করে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি একান্তই অনুষ্ঠানে যেতে ট্রেন্ডি জামা পরতে হয় যা হালকা রঙের নয়, তবে ভিতরে পরুন একটি অন্তর্বাস। এটি আপনার ঘাম শুষে নেবে ও বাইরে আসতে দেবে না।
৩। রোদে বেরোবেন না:
রোদ কেন, প্রয়োজন না থাকলে কোনও বেশি তাপমাত্রার এলাকাতেই যাবেন না। চেষ্টা করুন ছায়া আছে এমন এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় থাকার। জানালার পর্দা টেনে রাখুন যাতে বাইরের তাপ ঘরে এসে ঘরকে বেশি উত্তপ্ত করতে না পারে। আপনার শরীরকে যত বেশি তাপের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন, ততই আপনার ঘাম কম হবে।
৪। চাপ নেবেন না:
প্রতিদিনের রুটিনে কতরকম কাজ থাকে, ঠিকঠাকভাবে সাফল্যের সঙ্গে তা হবে কি না তা নিয়েও চিন্তা কম নয়। চাপ নেবেন না। আপনি যত চাপ নেবেন ততই শরীরে বাড়বে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ যা আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘাম অবশ্যসম্ভাবী। প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম, চাপের থেকে মুক্তি পাওয়ার এক দারুণ উপায়। ব্যায়াম করলে ঘাম ঝলে, এ থেকে মনে হতেই পারে কী করে এটা ঘাম কমাবে? আসলে নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার সব চিন্তা ও চাপ নিজে থেকেই দূর হয়ে যাবে। ফলে আপনার মাথা সারাদিন চিন্তামুক্ত থাকবে। স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমলে কমবে শরীরের ঘাম উৎপাদনও।
৫। অ্যান্টিপারস্পিরান্ট ব্যবহার করুন:
ঘাম হওয়া আটকাতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যান্টিপারস্পিরান্ট। কিন্তু সবাই যে ভুল করে তা আপনি করবেন না। এটি সকালে স্নান করে বগলে গলায় বুকে দেবেন না, বরং দিন রাতে শুতে যাওয়ার সময়। লোমকূপে গিয়ে এর কাজ করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে, তাছাড়া রাতে উষ্ণতা কম থাকায় এটি ব্যবহার করে ভালো ফল মেলে। শোওয়ার আগে তাই এটি শরীরের যে অংশে বেশি ঘাম হয় সেখানে দিয়ে শুতে যান। বেশকিছু রাত এমন অভ্যাস করলে দেখবেন আপনার ঘাম হওয়া আগের থেকে অনেক কমে গেছে।