Just In
মৌমাছি হুল ফোটালে কী করবেন? জেনে নিন কিছু সহজ ঘরোয়া টোটকা
কম-বেশি আমরা প্রায় প্রত্যেকেই একবার না একবার মৌমাছির কামড়ের শিকার হয়েছি। মৌমাছি একবার হুল ফোটালে সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গাটা লাল হয়ে ফুলে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ তীব্রভাবে জ্বালা-ব্যথা করতে থাকে। বিশেষ করে মধু চাষীদের ক্ষেত্রে, মৌমাছির দংশনের ঘটনা খুবই সাধারণ ব্যাপার। এটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। তাই মৌমাছি দেখা মাত্রই আমরা সতর্ক হয়ে যাই।
কিছু কিছু মৌমাছির বিষ অত্যন্ত বিপজ্জনক। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৌমাছির দংশন খুব বিপজ্জনক না হলেও, কারও কারও ক্ষেত্রে এটি থেকে অ্যালার্জি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। মৌমাছি কামড়ালে, ফুলে লাল হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি-ব্যথার মতো বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়া খুবই সাধারণ। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় প্রয়োগে এই সমস্যা থেকে স্বস্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে জেনে নিন, মৌমাছি কামড়ালে সেই জ্বালা-ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন।
১) মধু
মৌমাছির দংশনের ক্ষেত্রে, এটি একটি কার্যকর প্রতিকার। মধু ক্ষত নিরাময়, প্রদাহ এবং চুলকানি দূর করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। মধুতে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান। মৌমাছি কামড়ালে, প্রথমে সেই স্থানে সামান্য পরিমাণে মধু লাগিয়ে হালকা ঘষে নিন। তারপর একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে আলগাভাবে ক্ষত স্থানটি এক ঘণ্টার মতো বেঁধে রাখুন।
২) বেকিং সোডা
বেকিং সোডা একটি অত্যন্ত কার্যকর জীবাণুনাশক। এটি মৌমাছি দংশনের ফলে হওয়া ব্যথা, চুলকানি এবং ফোলা ভাব কমাতে দুর্দান্ত সহায়ক। বেকিং সোডা এবং জলের একটি পেস্ট তৈরি করে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এভাবে ১৫ মিনিট রেখে দিন। প্রয়োজন অনুসারে প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করা যেতে পারে।
৩) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মৌমাছির দংশনের ফলে হওয়া চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এতে অ্যান্টি-ইচিং গুণ রয়েছে। এর জন্য, অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের সাথে সামান্য জল মিশিয়ে সেটা ক্ষতস্থানে দিয়ে রাখুন। এছাড়াও, এক টুকরো পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়েও ক্ষতস্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪) এসেনশিয়াল অয়েল
এসেনশিয়াল অয়েলও মৌমাছি দংশনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।
টি ট্রি অয়েল - এটি দংশনের জ্বালা যন্ত্রণা, লালচে ভাব এবং চুলকানি প্রশমিত করতে দুর্দান্ত কার্যকর।
ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল - এটি ক্ষতকে জীবাণুমুক্ত করার সাথে সাথে, ব্যথা-জ্বালা কমাতেও সহায়তা করে।
Witch Hazel - এটি একটি শক্তিশালী অ্যাস্ট্রিনজেন্ট, কারণ এর পাতায় ট্যানিনের উচ্চ উপাদান রয়েছে। এটি ত্বকের ব্যাকটেরিয়া বিশোধিত করতে পারে এবং প্রদাহকে শান্ত করতে পারে।
ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল শুধুই ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি প্রয়োগ করলে জ্বালা এবং দংশনের প্রভাব দূর করতে পারে। জল মিশ্রিত টি ট্রি অয়েলকে অলিভ বা নারকেল তেলের মতো যেকোনও ক্যারিয়ার অয়েলের সাথে মিশিয়ে ক্ষত স্থানে লাগান। আর, Witch Hazel আপনি সরাসরি ক্ষত এলাকায় লাগাতে পারেন।
৫) পেঁপে
পেঁপেতে পাপাইন নামক এনজাইম বর্তমান, যা চুলকানি এবং ব্যথা কমাতে পারে। এর জন্য ক্ষত স্থানে, এক টুকরো পেঁপে ঘষে, কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মতো রেখে দিন। ফল হাতেনাতে পাবেন!
৬) অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরাতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং বেদনানাশক ক্ষমতা বর্তমান, যা ক্ষত স্থানের চুলকানি ও জ্বালাভাবকে প্রশমিত করতে সহায়তা করে। ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে সরাসরি ক্ষত স্থানে লাগিয়ে রেখে দিন বেশ কিছুক্ষণ।
৭) বরফ
চোখ, মুখ, ঠোঁট কিংবা হাতে মৌমাছি দংশন করলে, কয়েক টুকরো বরফ পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে নিয়ে ক্ষত স্থানে বেঁধে রাখুন। প্রায় ১০-১৫ মিনিট এভাবেই রাখুন। ফোলাভাব এবং ব্যথা না কমা পর্যন্ত এটি নিয়মিত পুনরায় প্রয়োগ করতে পারেন।