Just In
কনস্টিপেশনের মতো পেটের রোগকে দূরে রাখতে এই খাবারগুলি মোটেও খাওয়া চলবে না কিন্তু!
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বাঙালিদের পছন্দের বেশ কিছু খাবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের খপ্পর পরতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি কনস্টিপেশনের মতো রোগের পথকে প্রশস্ত করে, সেগুলি হল...
খাদ্যরসিক বাঙালি কুলের প্লেটে তাই থাকে, যা তার জিভ সম্মতি দেয়। আর জিভ যে একেবারে পুষ্টিকর খাবারের পক্ষে সাওয়াল করবে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে। তাই তো বাঙালিদের শরীরে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ বাসা বাঁধতে সময় নেয় না। তবে এই সব মারকাটারি রোগের পাশাপাশি আরও একটি রোগ আছে, যা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা এবং ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া না করার কারণে প্রায় সিংহভাগ বাঙালিকেই ভুগিয়ে থাকে। কী সেই রোগ জানা আছে?
রোগটির নাম কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বাঙালিদের পছন্দের বেশ কিছু খাবারের কারণে এই রোগটির খপ্পর পরতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি কনস্টিপেশনের মতো রোগের পথকে প্রশস্ত করে, সেগুলি হল...
১. কাঁচা কলা:
শুনতে আজব লাগলেও একথা সত্যি যে কাঁচা কলা খাওয়া শুরু করলে বাস্তবিকই কনস্টিপেশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। আসলে কাঁচা কলায় রয়েছে স্টার্চ, যা সহজে হজম হতে চায় না। ফল স্বরুপ সকালে কষ্ট সহ্য করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন, তা হল কাঁচা কলার পরিবর্তে যদি পাকা কলা খাওয়া শুরু করেন, তাহলে কিন্তু নানা উপকার পাওয়া যায়, এমনকী কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগও দূরে পালায়।
২. চুইং গাম:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে চুইং গাম খেলে শরীরের যেমন নানা ক্ষতি হয়, তেমনি ভুল করে যদি সেটি গিলে ফেলেন, তাহলে তো আরও কেলো! কারণ সেক্ষেত্রে কনস্টিপেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়। তাই বন্ধু সাবধান! প্রথমত শরীরকে চাঙ্গা রাখতে চুইং গাম খাওয়া তো কমান। আর যদি মাঝে-সাঝে খেতেই হয়, তাহলে ঠিক সময়ে সেটি ফেলে দিতে ভুলবেন না যেন!
৩. কফি:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! দিনে ২-৩ কাপের বেশি কফি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে শুধু কনস্টিপেশন নয়, আরও নানাবিধ পেটের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, হজমের সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
৪. পাঁঠার মাংস:
বেশি মাত্রায় এমন মাংস খাওয়া শুরু করলে শরীরে ফ্যাট, প্রোটিন ফাইবার এবং আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগে আক্রান্ত হতে সময় লাগে না। তবে সপ্তাহে ১-২ দিন পাঁঠার মাংস খেলে যদিও এমনটা হয় না।
এই খাবারগুলি এড়িয়ে চলার পরেও যদি এমন রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেন, তাহলেও কোনও চিন্তা নেই! কেন এমন কথা বলছি, তাই ভাবছেন নিশ্চয়? আসলে এই প্রবন্ধে এমন কিছু ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপকে নিমেষে কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ধরুন...
১. মৌরি:
একথা তো সবাই জানেন যে পেট টান্ডা করতে মৌরির কোনও বিকল্প হয় না। কিন্তু একথা কি জানা ছিল যে বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখতেও এটি সাহায্য করে। আসলে ডায়জেস্টিভ ট্র্যাকের যে পেশি রয়েছে তার সঞ্চালন যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে মৌরি। ফলে বদ-হজম, পেট গোলানো, কনস্টিপেশন এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমের মতো নানাবিধ রোগ একেবারে সেরে যায়। এক্ষেত্রে এক কাপ মৌরি নিয়ে ভাল করে ভেজে ফেলতে হবে। তারপর ভাজা মৌরিগুলি গুঁড়ো করে নিয়ে একটা শিশিতে স্টোর করে রাখবেন। প্রতিদিন এই গুঁড়ো মৌরি হাফ চামত করে গরম জলে গুলে খেলে নিমেষে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
২. তিসি:
এতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে ফাইবার এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা পেট পরিষ্কার রাখতে নানাদিক থেকে সাহায্য করে। তাই পটি পরিষ্কার হোক, বা না হোক, প্রতিদিন তিসি বীজ জলে গুলে পান করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন। প্রসঙ্গত, এক গ্লাস জলে ১ চামচ তিসি বীজ গুলে কম করে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিন। রাতে শুতে য়াওয়ার আগে পান করুন সেই জল। দেখবেন সকালে উঠে পেট পরিষ্কার করে পটি হয়ে যাবে।
৩. মধু:
প্রতিদিন মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলেই দেখবেন কনস্টিপেশন এবং পটি পরিষ্কার না হাওয়ার মতো সমস্যা একেবারে কমে যাবে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে এমন কিছু রয়েছে, যা জোলাপের মতো কাজ করে। ফলে মধু খাওয়া মাত্র পটি পরিষ্কার হতে শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে দিনে ৩ বার, এক গ্লাস গরম জলে ১ চামচ করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে।
৪. ঘি:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে পরিমাণ মতো ঘি মিশিয়ে যদি খাওয়া যায়, তাহলে কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটার কারণে নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমে নিমেষে।
৫. পালং শাক:
প্রতিদিন এই শাকটি খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তাই যদি কনস্টিপেশনের সমস্যা থাকে তাহলে হয় রান্না করে, নয়তো কাঁচা অবস্থাতেই পালং শাক খাওয়া শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই কষ্ট কমে যাবে। প্রসঙ্গত, আরেক ভাবে পালং শাককে কাজে লাগানো যেতে পারে। এক গ্লাস জলের সঙ্গে ১ গ্লাস পালং শকের রস দিনে দুবার করে খেলে কনিস্টেপেশনের কোনও নাম গন্ধই থাকে না।
৬.আঙুর:
এতে উপস্থিত অদ্রবণীয় ফাইবার, পটি পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। তাই বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক না হলেই দিনে হাফ বাটি কাঁচা আঙুর অথবা আঙুরের রস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলেই দেখবেন সকালগুলো সুন্দর হয়ে উঠবে।
৭.লেবু:
এতে উপস্থিত লেমোনাস, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতে দারুন কাজে আসে। তাই কখনও যদি দেখেন ১-২ দিন ধরে পটি ঠিক মতো হচ্ছে না তাহলে ঝটপট কয়েক গ্লাস লেবুর রস খেয়ে নেবেন। দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে ফল পাবেন। প্রসঙ্গত, গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন।