Just In
- 2 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 3 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 4 hrs ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
- 18 hrs ago ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে চালের জল, কীভাবে দেখুন
সাবধান:ভারতে ক্রমাগত বাড়ছে ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কঘটিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা!
গতকাল ল্যান্সেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো ব্রেন ডিজিজে আক্রান্তের সংখ্যা
গতকাল ল্যান্সেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো ব্রেন ডিজিজে আক্রান্তের সংখ্যা, যা বেজায় চিন্তার বিষয়।
ল্যান্সেট নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই রিপোর্ট অনুসারে গত ২৬ বছরে ভারতে প্রায় ২.৯ মিলিয়ান মানুষ ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ১.৪ লক্ষ মানুষ মারা গেছেন এই রোগের কারণে। তবে শুধু এদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এমন মস্তিষ্কঘটিত রোগের প্রকোপ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯০ সালে যেখানে সারা বিশ্বে ২০.২ মিলিয়ান মানুষ এমন রোগের শিকার ছিল, সেখানে সংখ্যাটা বেড়ে দাড়ঁয়েছে প্রায় ৪৩.৮ মিলিয়ানে, যাদের মধ্যে ২৭ মিলিয়ান মহিলা এবং ১৬.৮ মিলিয়ান পুরুষ।
একথা যেখানে জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে যে প্রতি বছর ডিমেনশিয়ার মতো রোগের প্রকোপ ক্রমাগত বাড়ছে ভারতীয়দের মধ্যে, সেখানে নিজেকে এমন ভয়ঙ্কর রোগের খপ্পর থেকে বাঁচিয়ে রাখতে সময় থাকতে থাকতে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন ককরতে হবে। না হলে যে ভিষণ বিপদ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এখন প্রশ্ন হল, কীভাবে সম্ভব ডিমেনশিয়ার খপ্পর থেকে বেঁচে থাকা? এক্ষেত্রে নিয়মিত মস্তিষ্কের ব্যায়াম করাটা যেমন জরুরি, তেমনি এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলিকেও রোজের ডায়েটে আন্তর্ভুক্ত করতে হবে, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! আসলে এই খাবারগুলিতে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপদান, বিশেষত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ব্রেন সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি মস্তিষ্কের সার্বিক ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে কোনও ছোট-বড় কোনও ধরনের ব্রেন ডিজিজই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই তো বলি বন্ধু, মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলে ডিমেনশিয়ার মতো রোগকে যদি ডজন খানেক গোল দিতে চান, তাহলে যে যে খাবারগুলিকে খাওয়া শুরু করতে হবে, সেগুলি হল...
১. বিনস:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে রোজের ডায়েটে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে জায়গা করে দিলে শরীরে ফাইবারের পাশাপাশি প্রোটিনের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যে কারণে ব্রেন সেলের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। আর মস্তিষ্কের ক্ষমতা একবার বেড়ে গেলে অ্যালঝাইমারসের মতো রোগ যে ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
২. কুমড়ো, টমাটো এবং গাজর:
এই সবজিগুলির কোনও এটি বা সবকটিই যদি নিয়মিত সেদ্ধ করে খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে ভিটামিন এ, ফলেট এবং আয়রনের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। ফলে ব্রেন পাওয়ার তো বৃদ্ধি পায়ই, সেই সঙ্গে ব্রেন সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে। আর ব্রেন সেল যখন চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তখন মস্তিষ্ক নিয়ে আর ভয় কি বলুন!
৩. নারকেল তেল:
চুলের পরিচর্যায় কাজে লাগানো হলেও দক্ষিণ ভারতীয় ছাড়া আর কেউ সাধারণত নারকেলে তেলকে রান্নার কাজে লাগান না। কিন্তু যদি লাগাতে পারেন, তাহলে কেল্লাফতে! কারণ নারকেল তেলে উপস্থিত নিউরনের ক্ষমতা বাড়য়ে তোলে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকারক উপাদান যাতে মস্তিষ্কের অন্দরে কোনও ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান আরও দ্রুত গতিতে হতে থাকে। ফলে যে কোনও কাজ নিমেষে সম্পন্ন করতে কোনও কষ্টই করতে হয় না।
৪. অলিভ অয়েল:
দক্ষিন এশিয়ায় সাধারণত রান্না করতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু যদি করা হয়, তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে এই তেলটিতে রয়েছে পলিফনল নামে একটি উপাদান, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি চলাকালীন বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।
৫.ডিম:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারি কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেন পাওয়া বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন সেলের যাতে কোনও ভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
৬. ব্রকলি:
সালফারাফেন নামক একটি উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ব্রেন সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে।
৭. হলুদ:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! এই প্রকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আসলে হলুদে উপস্থিত বেশি কিছু কার্যকরি উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের অন্দরে প্রদাহ কমায়, তেমনি অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রায় ৩০০০ বছর পুরানো একটি আয়ুর্বেদিক পুঁথির খোঁজ মিলেছে, তাতেও ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে হলুদ কিভাবে কাজে আসে, সে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
৮. পালং শাক:
বাঙালিদের এই শাকটির প্রতি একটু আলাদা রকমের একটা দুর্বলতা রয়েছে। যে কারণে দেখবেন বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দেওয়ার প্রয়োজন পরে এমন কাজে বাঙালিরা সবসমই এগিয়ে। আর কেন থাকবে নাই বা বলুন! পালং শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইন ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিক ভাবেই ব্রেন পাওয়ার চোখ পরার মতো বৃদ্ধি পায়।
৯. আখরোট:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রা ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সবদিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।
১০. জাম:
এই ফলটিতে উপস্থতি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্রেন সেল যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে ব্রেনের অন্দরে প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে অ্যালঝাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি প্রতিদিন জাম খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।
১১. মাছ:
বেশি তেল রয়েছে এমন মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুন কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি ব্রেন সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আঁধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।