Just In
ডিমের কুসুম কি সত্যিই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক?
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ডিমে উপস্থিত কোলেস্টরল এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের খারাপ করে না, বরং উপকারে লাগে।
এতদিন পর্যন্ত জানতাম শরীরকে সুস্থ রাখতে ডিমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কিন্তু হঠাৎই একদল বিতর্কের ধোঁয়া তুলছেন যে ডিম খেলে শুধু খেতে হবে সাদা অংশ, ভুলেও কুসুম খাওয়া চলবে না। কারণ এমনটা না করলে নাকি কোলেস্টেরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।
একথা কি সত্যি যে ডিমের কুসুম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা থাকে? এই বিষয়টির উপর অবশ্য়ই আলোকপাত করা হবে, তবে তার আগে জেনে রাখা ভাল যে ডিমের কুসুমে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে রয়েছে। রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও। এই সবকটি উপাদানই শরীরের গঠনের বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। তাই যদি ধরেও নেওয়া হয় যে ডিমের কুসুম খাওয়ার কোনও ক্ষতিকারক দিক রয়েছে, তাহলে বলতে হয় যে এই বিশেষ খাবারটি খেলে এতটাই উপকার পাওয়া যায় যে খারাপ দিকটাকে সহজেই উপেক্ষা করা যেতে পারে।
তাহলে কি কুসুম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা থাকে না?
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ডিমে উপস্থিত কোলেস্টরল এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের খারাপ করে না, বরং উপকারে লাগে। যেমন ধরুন কোলেস্টরল শরীরের অন্দরে জালের মতো বিছিয়ে থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এক্ষেত্রে কোলেস্টেরল সারা মস্তিষ্কজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নিউরনসের মধ্যে যোগাযোগের উন্নতি ঘটায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি এবং নতুন কিছু শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কোলেস্টেরল সমৃদ্ধি খাবার খেলে কী কোলেস্টেরল বাড়ে?
একটা ডিমের কুসুমে প্রায় ২১০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞের মনে হয় কুসুম খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছুই হয় না।
ডিম খেলে হার্ট অ্যাটাক হয় না:
আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে ডিম খাওয়ার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের কোনও যোগ নেই। বরং শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে ডিমের কুসুম বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সম্প্রতি প্রাকাশিত আরেকটি গবেষণা পত্র অনুসারে ডিমে যে কোলেস্টেরল থাকে তা শরীরে এই ডি এল বা ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, খারাপ কোলেস্টরলের নয়। প্রসঙ্গত, এইচ ডি এল বা ভাল কোলেস্টরল হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। সেই সঙ্গে শরীরকে আরও নানাভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
কী কী পুষ্টিকর উপাদান থাকে ডিমের কুসুমে:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন। এই উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে শারীরিক প্রদাহ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, আরও বেশ কিছু উপাদানের খোঁজ পাওয়া যায় ডিমের কুসুমের অন্দরে। যেমন লুটেইন এবং জিয়েক্সানথিন। এই দুটি উপাদান রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আর নিশ্চয় মনে কোনও প্রশ্ন নেই যে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে ডিমের কুসুমের সত্যিই কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর যদি ক্ষতির কথা বলেন তাহলে বলতে হয়, ডিমের কুসুম কোনও দিক থেকেই ক্ষতিকর নয়। তবে উপকারি খাবারও বেশি মাত্রায় খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে, এই কথাটা ভুলে না গেলেই মঙ্গল।