Just In
ধূমপান ছাড়তে চান? সাহায্য নিন এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলির!
যারা স্মোকিং ছাড়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর, তাদের সাহায্য করতে আজ এই প্রবন্ধে এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা বাস্তবিকই ধূমপানের নেশাকে ছাড়াতে দারুন কাজে আসে।
প্রতি বছর সারা বিশ্বে ধূমপায়ীদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই এই মারণ অভ্যাসকে ত্যাগ করতে চাইছে এমন লোকের সংখ্যাটাও কিন্তু অগুনতি। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। বাজার চলতি নেশা ছাড়ানোর পদ্ধতিগুলির বেশিরভাগই সেভাবে কোনও কাজে আসে না। সেই সঙ্গে যোগ হয়, নেশার প্রতি প্রবল আকর্ষণ। তাই তো যত জন ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বিপ্লব ঘোষণা করেন, শেষে গিয়ে আদতে কাজটা করতে পারেন খুবই কম লোকই। তাই তো যারা স্মোকিং ছাড়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর, তাদের সাহায্য করতে আজ এই প্রবন্ধে এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা বাস্তবিকই ধূমপানের নেশাকে ছাড়াতে দারুন কাজে আসে। শুধু একটাই কথা, ধৈর্য ধরে এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগিয়ে যেতে হবে, তাহলেই দেখবেন ফল মিলতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, ধূমপানের নেশা ছাড়াতে সাধারণত যে যে ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি দারুন কাজে আসে, সেগুলি হল...
১. লঙ্কা গুঁড়ো:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নানাভাবে যদি নিয়মিত লঙ্কা গুঁড়ো খাওয়া যায়, তাহলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্মোকিং-এর কারণে লাং-এর যে ক্ষতি হয়েছে, তাও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শুধু তাই নয়, ধূমপান করার ইচ্ছাও কমে। ফলে নেশার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক গ্লাস জলে অল্প পরিমাণে লঙ্কা গুঁড়ো ফেলে সেই জলটি পান করা যায়, তাহলে এক্ষেত্রে দারুন উপকার মেলে।
২. মুলেঠি:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে ধূমপানের নেশা ছাড়াতে এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে যখনই স্মোকিং করার ইচ্ছা জাগবে, তখনই যদি মুলেঠি চিবানো যায়, তাহলে নেশার প্রকোপ কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো নিয়মিত মুলেঠি চিবানো শুরু করলে একদিকে যেমন স্মোকিং-এর ইচ্ছা কমে, তেমনি নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়।
৩. জল:
দীর্ঘদিন ধরে সিগারেট খেলে আমাদের শরীরে একেবারে ভিতর পর্যন্ত চলে যায় নিকোটিন। যে কারণে ধূমপান ছাড়তে এতটা কষ্ট হয়। এক্ষেত্রে জল দারুন কাজে আসে। কীভাবে? আসলে শরীরে টক্সিন হিসেবে জমতে থাকা নিকোটিনকে ধুয়ে বার করে দিতে জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, তামাক এবং নিকোটিনের নানা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে বাঁচাতেও জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. মূলো:
১ গ্লাস মূলোর রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দুবার করে খেলে ধূমপানের ইচ্ছা একেবারে কমে যায়। তাই তো এমন কু-অভ্য়াস ছাড়াতে আজও মূলোর উপর ভরসা রাখেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
৫. আঙুরের রস:
নিকোটিনের কারণে শরীরের ভিতরে জমতে থাকা টক্সিন বেরিয়ে যেতে শুরু করলে একদিকে যেমন ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে আঙুরের রস। কারণ এতে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান এবং স্বাস্থ্যকর অ্যাসিড শরীরতে ডিটক্সিফাই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা বাকি ময়লাদেরও বাইরে বের করে আনে। ফলে শরীর রোগ মুক্তির পথে শরীর আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়।
৬. আদা:
আপনি কি ধূমপান ছাড়তে চান? তাহলে আজ থেকেই আদার সাহায্য নিন। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান নানাভাবে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ধূমপান ছাডা়র কারণে যেসব উইথড্রল সিম্পটন দেখা দেয়, সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাটাই চলে যায়। এক্ষেত্রে আদা চা বা কাঁচা আদা খেতে হবে। তবেই মিলবে উপকার।
৭. মধু:
এতে উপস্থিত বেশ কিছু ভিটামিন, এনজাইম এবং প্রোটিন শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ধূমপান ছাড়তে কোনও অসুবিধাই হয় না।
৮.ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার:
নিকোটিনের মতো টক্সিনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিজের সঙ্গে শক্তিশালী কাউকে না রাখলে কিন্তু এই অসম যুদ্ধে জেতা সম্ভব নয়। আর এক্ষেত্রে আপনার পাশে দাঁড়াতে পারে ভিটামিন। প্রতিদিন ভিটামিন- এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ ক্যাপসুল অথবা খাবার খেলে সিগারেটের নেশা একেবারে চলে য়ায়। সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ রোগে প্রকোপও কমে। প্রসঙ্গত, ভিটামিন আমাদের শরীরকে এতটাই চাঙ্গা করে দেয় যে সিগারেট ছাড়ার পর যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায়, সেগুলি আর কোনও ভাবেই শরীর এবং মনকে কাবু করতে পারে না।
৯. ওটস:
সিগারেটের নেশা ছাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বহুকাল আগে থেকেই ধূমপানের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলচে তাতে সামিল করা হয়েছে এই উপাদানটিকে। ২ কাপ ফোটানো জলের সঙ্গে ১ চামচ ওটস মিশিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে জলটি পুনরায় ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে প্রতিটি খাবারের পর অল্প করে খেতে থাকুন। এমনটা করলে দেখবেন শরীর থেকে নিকোটিন বেরিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে কমে যাবে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাও।