Just In
World No Tobacco Day 2021 : শত চেষ্টা করেও ধূমপান ছাড়তে পারছেন না? সাহায্য নিন এই ৮টি ঘরোয়া পদ্ধতির
প্রতি বছর ৩১ মে 'বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস' পালন করা হয়। বিশ্বজুড়ে তামাক সেবনের সমস্ত প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দিবসটি প্রচলিত হয়েছে। এছাড়াও দিবসটির উদ্দেশ্য হল, তামাক ব্যবহারের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থ্যের উপর এর নেতিবাচক প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানো, যা বর্তমানে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর নানান প্রতিপাদ্য থাকে এই দিবসে, এই বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য হল 'Commit to Quit'। তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে ভারতে প্রতিবছর ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে।
প্রতি বছর সারা বিশ্বে তামাকের প্রতি আসক্তির সংখ্যাটা যেমন বেড়েই চলেছে, তেমনই এই মারণ অভ্যাসকে ত্যাগ করতে চাইছে এমন লোকের সংখ্যাও অনেক। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। বাজার চলতি নেশা ছাড়ানোর পদ্ধতিগুলির বেশিরভাগই সেভাবে কোনও কাজে আসে না। সেই সঙ্গে যোগ হয়, নেশার প্রতি প্রবল আকর্ষণ। ফলে বছরের শুরুতে যত জন ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে বিপ্লব ঘোষণা করেন, শেষে গিয়ে আদতে কাজটা করতে পারেন খুবই কম লোক। তাই, আজ আমরা এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের জানাব, যা বাস্তবিকই ধূমপানের নেশাকে ছাড়াতে দারুন কাজে আসে। শুধু একটাই কথা, ধৈর্য ধরে এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগিয়ে যেতে হবে, তাহলেই মিলবে নেশা থেকে মুক্তি। দেখে নিন সেগুলি কী কী -
১. জল:
দীর্ঘদিন ধরে সিগারেট খেলে আমাদের শরীরে একেবারে ভিতর পর্যন্ত চলে যায় নিকোটিন। যে কারণে ধূমপান ছাড়তে এতটা কষ্ট হয়। এক্ষেত্রে জল দারুন কাজে আসে। কীভাবে? আসলে শরীরে টক্সিন হিসেবে জমতে থাকা নিকোটিনকে ধুয়ে বার করে দিতে জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, তামাক এবং নিকোটিনের নানা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে বাঁচাতেও জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. আদা:
আপনি কি ধূমপান ছাড়তে চান? তাহলে আজ থেকেই আদার সাহায্য নিন। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান নানাভাবে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ধূমপান ছাডা়র কারণে যেসব উইথড্রল সিম্পটন দেখা দেয়, সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাটাই চলে যায়। এক্ষেত্রে আদা চা বা কাঁচা আদা খেতে হবে। তবেই মিলবে উপকার।
৩.ভিটামিন:
নিকোটিনের মতো টক্সিনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিজের সঙ্গে শক্তিশালী কাউকে না রাখলে কিন্তু এই অসম যুদ্ধে জেতা সম্ভব নয়। আর এক্ষেত্রে আপনার পাশে দাঁড়াতে পারে ভিটামিন। প্রতিদিন ভিটামিন- এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ ক্যাপসুল অথবা খাবার খেলে সিগারেটের নেশা একেবারে চলে য়ায়। সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ রোগে প্রকোপও কমে। প্রসঙ্গত, ভিটামিন আমাদের শরীরকে এতটাই চাঙ্গা করে দেয় যে সিগারেট ছাড়ার পর যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায়, সেগুলি আর কোনও ভাবেই শরীর এবং মনকে কাবু করতে পারে না।
৪. জিনসেং:
ধূমপান বন্ধে কর দিতে কিন্তু তেমন কোনও কষ্ট হয় না। আসল লড়তে হয় সিগার খাওয়ার ইচ্ছার সঙ্গে। এই বিষাক্ত ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি দারুন উপকারে লাগে। এক চামচ জিনসেং পাউডার, জুসে বা সুপে মিশিয়ে প্রকিদিন সকালে খেলে সারা দিনের জন্য সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। ফলে নেশার ফাঁস ধীরে ধীরে আলগা হতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, যদি দেখেন এক চামচে কাজ হচ্ছে না, তাহলে একটু বেশি করেও খেতে পারেন।
৫. আঙুরের রস:
নিকোটিনের কারণে শরীরের ভিতরে জমতে থাকা টক্সিন বেরিয়ে যেতে শুরু করলে একদিকে যেমন ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে আঙুরের রস। কারণ এতে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান এবং স্বাস্থ্যকর অ্যাসিড শরীরতে ডিটক্সিফাই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা বাকি ময়লাদেরও বাইরে বের করে আনে। ফলে শরীর রোগ মুক্তির পথে শরীর আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়।
৬. ওটস:
সিগারেটের নেশা ছাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বহুকাল আগে থেকেই ধূমপানের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলচে তাতে সামিল করা হয়েছে এই উপাদানটিকে। ২ কাপ ফোটানো জলের সঙ্গে ১ চামচ ওটস মিশিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে জলটি পুনরায় ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে প্রতিটি খাবারের পর অল্প করে খেতে থাকুন। এমনটা করলে দেখবেন শরীর থেকে নিকোটিন বেরিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে কমে যাবে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাও।
৭. মূলো:
১ গ্লাস মূলোর রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দুবার করে খেলে ধূমপানের ইচ্ছা একেবারে কমে যায়। তাই তো এমন কু-অভ্য়াস ছাড়াতে আজও মূলোর উপর ভরসা রাখেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
৮. মধু:
এতে উপস্থিত বেশ কিছু ভিটামিন, এনজাইম এবং প্রোটিন শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ধূমপান ছাড়তে কোনও অসুবিধাই হয় না।