Just In
- 2 hrs ago রাতে খারাপ এবং ভয়ের স্বপ্ন আসে? সহজ জ্যোতিষী সমাধান স্বস্তি দেবে
- 4 hrs ago আপনি কি সেলফি তুলতে পছন্দ করেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেলফি স্বাস্থ্যকর
- 4 hrs ago হিন্দু নববর্ষের ৩ দিন আগেই গ্রহ পরিবর্তন, শনির প্রভাবে অর্থ-বৃষ্টির সম্ভাবনা এই রাশিগুলিতে
- 22 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
জানেন কি কোন খাবার খেলে বাড়ে ব্লাড প্রেসারের সম্ভাবনা?
দৈনন্দিন ব্যস্ততার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে আমাদের শারীরিক অসুস্থতাও। দিনরাত একভাবে কাজ করা বা না করা- দুটোই আমাদের শরীরকে শেষ করে দিচ্ছে। ফলে, আমাদের সুন্দর জীবনে থাবা বসাচ্ছে নানারকম মারণরোগ। যার মধ্যে রয়েছে ব্লাড প্রেসার। যদিও, শুধুমাত্র কাজের চাপ বা অনিয়মিত জীবনযাত্রা নয়, ব্লাড প্রেসারের মতো শারীরিক সমস্যা বাসা বাঁধার জন্য আমাদের খাদ্যাভ্যাসও অনেকাংশে দায়ী। আমাদের অনেকেরই ধারণা, সময়মতো পেট ভরে খেলেই আমরা সুস্থ থাকবো। যদিও, সবসময় তা কিন্তু ঠিক নয়। কারণ অতিরিক্ত নুন বা নোনতা খাবার এবং ধূমপান থেকেও ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
ব্লাড প্রেসারের অন্যতম কারণ হল শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম জমা হওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে, তারা অনায়াসেই সেই সমস্যা দূর করতে পারেন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অর্থাৎ প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রোটিন, খাদ্যশস্য, কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্য, ফল এবং শাক সবজি খেতে হবে। পাশাপাশি এমন বহু খাবার আছে, যা আপনার ব্লাড প্রেসার দিনে দিনে বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ থাকতে হলে এই সব খাবার যে কোনও মূল্যে বাদ দিতে হবে রোজের ডায়েট থেকে।
হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে টেনে যায়। এমনকি হৃদরোগের মতো সমস্যাকেও কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় ব্লাড প্রেসারের সমস্যা আন্দাজ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে চিকিৎসা শুরু করতেও অনেক ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যায়।
তবে রোগের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার আগেই রোগ প্রতিরোধ কিভাবে করা যায়, তারই হদিশ দেব বোল্ডস্কাই-এর এই নিবন্ধে। তো দেখা যাক, কি ধরনের খাবার বাদ দিলে আপনি ব্লাড প্রেসার সহ নানান রোগের হাত থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
১. সোডা:
পার্টি হোক বা শুধুই পিপাসা নিবারণ, রাস্তার ধার থেকে বড়সড় রেস্তোরা সব জায়গাতে সহজেই মিলে যায় কোল্ড ড্রিঙ্ক বা সোডা ওয়াটার। এই কোল্ড ড্রিঙ্ক বা সোডা ওয়াটার আমাদের হাইপার টেনশনের মাত্রা অনেক গুনে বাড়িয়ে দেয়। ফলে, বেড়ে যায় হাই ব্লাড প্রেসারের সম্ভাবনাও। এক্ষেত্রে, কোল্ড ড্রিঙ্ক বা সোডা ওয়াটার না পান করে সেল্টজার জাতীয় জলে লেবু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
২. টেবিল সল্ট:
আমরা অনেকেই খাবারের সঙ্গে কাঁচা নুন খেয়ে থাকি, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। "ব্লাড প্রেসার অ্যান্ড ডায়েটারি সল্ট ইন হিউম্যান পপুলেশনস" নামক গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা নুনে অতিরিক্ত পরিমাণ সোডিয়াম থাকায় হৃদযন্ত্র এবং ধমনী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আসলে যখনই আমরা কাঁচা নুন খাই তখনই আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়। ফলে, ব্লাড প্রেসারের সমস্যা বেড়ে যায়। একইসঙ্গে কিডনি, ধমনী, মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্রেও চাপ সৃষ্টি করে কাঁচা নুন। তাই অতিরিক্ত নুন খাওয়া শরীরের পক্ষে একদমই ভালো নয়।
৩. ফ্রেঞ্চ ফ্রাই:
বর্তমান যুগে ফাস্ট ফুড খাওয়া অনেকের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। এগ রোল, মটন রোল, মোগলাই তো ছিলই, জেনারেশন এক্সের কাছে এখন খুব প্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্রেঞ্চফ্রাই। প্রথমত, দিনের পর দিন একই তেলে ভাজা আলু খেতে খতে স্বাদের কাছে হার মানার সঙ্গে সঙ্গে হার মানছি রোগের কাছেও। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছি, কি সর্বনাশ ডেকে আনছি? ফ্রেঞ্চফ্রাইতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম এবং ফ্যাট থাকে। খুব কম পরিমাণ ফ্রেঞ্চফ্রাইতেও ২৭০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম এবং ১৯ গ্রাম ফ্যাট থাকে, যা হাই ব্লাড প্রেসার তৈরি করতে পারে।
৪. অ্যালকোহল বা মদ্যপান:
অতিরিক্ত মদ্যপান শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। মদ্যপান হাই ব্লাডপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা তৈরি করে এবং দিনে দিনে তা আরও ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি করে। অ্যালকোহল আমাদের রক্তনালীগুলিকে দুর্বল করে দেয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও আরও বহু ধরনের শারীরিক সমস্যা ঘিরে ধরে।
৫. রেড মিট:
"রিলেশন অফ ভেজিটেবলস, ফ্রট অ্যান্ড মিট ইনটেক টু সেভেন ইয়ার ব্লাড প্রেসার চেঞ্জ ইন মিডল এজেড মেন" নামক গবেষণায় দেখা গেছে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় রেড মিট বর্জন একান্তভাবে জরুরি। একই সঙ্গে ফাস্ট ফুড, তেল এবং চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়াও বন্ধ করা উচিৎ। মূলত, এই ধরনের খাবারগুলি হাই ব্লাড প্রেসার সৃষ্টি করে।
৬. প্রসেসড ফুড:
চটজলদি খাবার বানানোর জন্য আমরা অনেক সময়ই প্যাকেটজাত খাবার কিনে আনি। যেমন- চিকেন বা মটন নাগেটস, সসেজ, হট ডগস ইত্যাদি। যদিও এইসব প্যাকেটজাত এবং প্রসেসড ফুডগুলির মধ্যেই সবথেকে বেশী উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিকারক উপাদান থাকে।
৭. আচার:
ভারতবর্ষের মতো দেশে আচার খায় না, এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যদিও চিকিৎসকদের মতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকার ফলে আঁচার একদমই শরীরের জন্য ভালো নয়। প্রতিদিন যে পরিমাণ সোডিয়াম আমাদের খাওয়া উচিৎ তার এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ সোডিয়াম আচারে থাকে।
৮. চিনি:
অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি আমাদের শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। অতিরিক্ত মিষ্টি আমাদের শরীরে মেদ জমতে সাহায্য করে এবং এর ফলে শরীর মোটা এবং ওজন বৃদ্ধি পায়। এমন অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
৯. ডোনাট:
উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাঁচতে চাইলে বাদ দিতে হবে ডোনাটের মতো অতিরিক্ত মিষ্টি খাবারকে। এক প্যাকেট ডোনাটে ১২ গ্রাম ফ্যাট এবং ২০০ গ্রাম ক্যালোরি থাকে।
১০. ক্যান বন্দী বিস্কুট:
তাড়াহুড়োর সময় লাঞ্চ বক্স আর কে টানে? সবথেকে ভালো একটা ছোট সাইজের বিস্কুটের প্যাকেট, তাই না! তবে কী জানেন বিস্কুটের প্রতিটি কণায় রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করার মারণবিষ। এই ধরনের খাবার মধ্যবয়স্কা মহিলাদের মধ্যে হাইপার টেনশন সৃষ্টি করে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। এছাড়াও, আমরা অনেকেই ব্রেড বা পাউরুটি খেতে ভালোবাসি। সেক্ষেত্রে সাদা পাউরুটির থেকে শস্য দানাযুক্ত পাউরুটি খাওয়া বেশী ভালো।
১১. ঘন দুধ:
দুধ খাওয়া শরীরের পক্ষে খুবই ভালো। তবে, ঘন দুধ আমাদের শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। এক কাপ ঘন দুধে ৮ গ্রাম ফ্যাট থাকে। যা আমাদের শরীরের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশী এবং অতিরিক্ত ফ্যাট উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে।
১২. বরফে জমানো খাবার:
বরফে জমানো খাবারে অতিরিক্ত মাত্রায় সংরক্ষক উপাদান বা প্রিজারভেটিভ দেওয়া হয়, যা উচ্চ রক্ত চাপ সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
১৩. এনার্জি ড্রিঙ্ক:
আজকাল দোকান বাজারে সর্বত্রই পাওয়া যায় নানা রকমের এনার্জি ড্রিঙ্ক। বহু মানুষ আছেন যারা নিত্যনৈমেত্তিক পান করে থাকেন এই ধরনের পানীয়। ফলে নিজেদের অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছেন তারা। এনার্জি ড্রিঙ্ক শরীরের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ একটি জিনিস, যা উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে।