Just In
ওয়ার্ল্ড ব্লাড ডোনেশন ডে: ব্লাড ডোনেট করলে ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না!
কিং জর্জ মেডিকাল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে ব্লাড ডোনেট করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে
বেশ কয়েক মাস আগে কিং জর্জ মেডিকাল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে যে ব্লাড ডোনেট করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। তাই আমাদের মতো দেশে যেখানে ডায়াবেটিসের আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, অন্যদিকে কমছে রক্তের ভান্ডার, সেখানে এই আবিষ্কার যে নতুন পথ দেখাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষজ্ঞদের মতে মানুষের মধ্যে যদি এই সচেতনতার বিকাশ ঘটে যে রক্ত দান করলে ব্লাড সুগারের মতো রোগ দূরে থাকবে, তাহলে আরও বেশি মাত্রায় ব্লাড ডোনেট করবে জনসাধারণ, ফলে রক্তের চাহিদা পূরণ হতে যেমন কোনও সমস্যা হবে না, তেমনি ডায়াবেটিস ক্যাপিটালের তামকাও ঝেরে ফেলতে পারবে আমাদের দেশে।
গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে বুঝতে অসুবিধা হবে না যে কী হারে এদেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, ভয়ের বিষয়টা হল কম বয়সিদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে চোখে পরার মতো। যে কারণে ভারতের কম বয়সী জনগনের একটা বড় অংশের গড় আয়ু কমেছে বেশ লাফিয়ে লাফিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে রক্ত দান করার পাশাপাশি যদি এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়া না যায়, তাহলে কিন্তু বেজয় বিপদ! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলির শরীরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে তো নিয়ন্ত্রণে রাখেই, সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এতদূর পড়ার পর নিশ্চয় সেই সব খাবারগুলি সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করছে, যা ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে? তাহলে আর অপেক্ষা কেন চলুন চোখ রাখা যাক বাকি প্রবন্ধে...
১. গাজর:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! এই সবজিটির অন্দরে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে শরীরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেরই কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
২. আপেল:
প্রতিদিন একটা করে আপেল খেলে শরীর তো চাঙ্গা হয়ে ওঠেই, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের মতো রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আসলে এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত ফাইবার এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো বলি বন্ধু, পরিবারে যদি এই মারণ রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে প্রতিদিনের ডায়েটে আপেলের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতে ভুলবেন না যেন!
৩. জাম:
আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে নিয়মিত এই ফলটি খেলে একদিকে যেমন সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে, তেমনি শরীরে উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, জামের শরীরে থাকা ফাইবার হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. বিনস:
নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে শরীরে একদিকে যেমন ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তেমনি পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর হয়। এই দুটি উপাদান একসঙ্গে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সই সঙ্গে কমে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।
৫. ওটস:
বিনসের মতো এই খাবারটির অন্দরেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরে সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। প্রসঙ্গত, নিয়মিত ওটস খেলে আরও কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমন এই খাবারটি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৬. দুগ্ধজাত খাবার:
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন দুধ, দই এবং পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবার খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. খেজুর:
ফাইবার এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এই ফলটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীর ভিতর থেকে এতটাই শক্তিশালী হয় ওঠে যে শুধু ডায়াবেটিস নয়, কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই ডায়াবেটিস রোগকে যদি দূরে রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত এই মরু ফলটি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৭. মাছ:
হে মাছে-ভাতে বাঙালি ভুলেও আধুনিকতার চক্করে রোজের ডায়েট থেকে মাছকে বাদ দেবেন না যেন! কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত মাছ খেলে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই উপাদানটি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, ওজন হ্রাসে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. সবুজ শাক সবজি:
ডায়াবেটিসের পাশাপাশি ছোট-বড় যে কোনও রোগ থেকে দূরে থাকতে চাইলে রোজের ডায়েটে সবুজ শাকসবজির অন্তর্ভুক্তি মাস্ট! কারণ এমন ধরনের খাবারে এত মাত্রায় ভিটামিন এবং উপকারি খনিজ থাকে যে দেহের অন্দরের সব ঘাটতি পূরণ হয়। ফলে শরীর ভিতর-বাইরে থেকে এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে কোনও রোগই সেইভাবে কামড় বসানোর সুযোগ পায় না।