Just In
হ্যাপি পঞ্চমী: দূগ্গা মায়ের আশীর্বাদ পেতে উপোস করছেন তো এবারও?
একদিন খাবার না খেয়ে যদি সারা দিন ধরে বারে বারে ডাবের জল বা হার্বাল টি খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের কোণায় কোণায় জমে থাকা বিষ, প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।
নবরাত্রির প্রথম দিন থেকে দশমীর শেষ লগ্ন পর্যন্ত বাঙালি-অবাঙালি থেকে ঘটি-বাঙাল, সব বাড়িতেই উপসের রেওয়াজ রয়েছে সেই বহুকাল ধরে। কেউ করে অষ্টমিতে, তো কেউ ষষ্ঠীতে। অনেকে আবার ক্যালেন্ডারে দিন তারিখ না দেখে কোনও একটা দিন এমনি এমনিই করে ফেলে উপোস। আসলে মায়ের পায়ে পেন্নাম ঠুকে একদিন অন্ন-জলকে টাটা বাই বাই করলেই নাকি মা দুগ্গা ঝলি ভরে দেন, এমন স্বপ্ন দেখে পেটে কাপড় বেঁধে উপোস করলে আদৌ মনস্কামনা পূরণ হয় কিনা জানা নেই! তবে শরীরের যে অনেক উপকার হয়, সে বিষযে কোনও সন্দেহ নেই।
বলেন কী দাদা উপোস করেও শরীরের ভাল হয়? একেবারেই বন্ধু! তাই না কলম তুলে এই প্রবন্ধ লেখা। আজ আপনাদের সামনে উপোসের উপকারিতা সম্পর্কে এমন সব তথ্য তুলে ধরবো, যা পড়ে ফেলার পর আপনার মন এমন বদলাবে যে এই অষ্টমিতে আলবাত কোচি পাঁঠা ভুলে আপনিও উপোস করবেন, তাও আবার মন থেকে!
বেশ কিছু গবেষণার পর যখন এই তথ্য উঠে এসেছিল তখন চিকিৎসকেরাও কম অবাক হননি। তবে সব দিক জানার পর তারাও এখন নিশ্চত হয়েছেন যে উপোস করলে বাস্তবিকই শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারও। যেমন...
১. শরীর থেকে সব বিষ বেরিয়ে যায়:
চিকিৎসকেদের মতে একদিন খাবার না খেয়ে যদি সারা দিন ধরে বারে বারে ডাবের জল বা হার্বাল টি খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের কোণায় কোণায় জমে থাকা বিষ, প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর হয়ে ওঠে বিষ মুক্ত, সঙ্গে রোগ মুক্তিও ঘটে। আসলে এই সব টক্সিক উপাদান শরীরের কোনও উপকারে লাগে না। বরং ধীরে ধীরে ভাইটাল অর্গানদের নষ্ট করে দেয়। তাই তো কয়েক মাস অন্তর একদিন উপোস করা মাস্ট!
২. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
সারা দিন পেটে দানা-পানি না দিলে শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরোমনগুলি কী করে জানেন? যত ক্ষরিত হতে থাকে, তত হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। তাই তো উপোস করার পর দিন থেকে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল সব দূরে পালায়।
৩. ওজন কমে:
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে উপোস করার সময় শরীর কিটোসিস স্টেজে চলে যায়। অর্থাৎ এই সময় ওজন কমার প্রক্রিয়াটি বেশ জোর কদমে চলতে থাকে। ফলে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট ঝরতে শুরু করে। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমে। প্রসঙ্গত, আপনার শরীরের ওজন অনুযায়ী কত দিন অন্তর অন্তর উপোস করলে ভাল ফল মিলতে পারে, সে বিষয়ে একবার চিকিৎসেকের থেকে জেনে নিতে ভুলবেন না। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!
৪. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘঠে:
চিকিৎসকদের মতে উপোস করার সময় আমাদের রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তচাপও স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। ফলে স্বাভিবিকভাবেই হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৫. রক্তচাপ কমে:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে উপোস করার সময় রক্তচাপ একেবারে স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। আসলে উপোস করার সময় শরীরে নুনের পরিমাণ কমে যেতে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে রক্তে নুনের পরিমাণ কমলে রক্তচাপও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সেই কারণেই তো ব্লাড প্রেসারে ভোগা রোগীদের কম নুন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তাশালী হয়:
কম্পিউটার বা ফোন হ্যাং হয়ে গেলে কী করেন? কী আবার রিস্টার্ট করি! উপোস হল শরীরে সেই রিস্টার্ট বটন। যখনই আমরা খাবার-জল ছেড়ে দি, তখনই পুরানো ইমিউন সেলের জায়গা নেয় সবে জন্ম নেওয়া তরতাজা কোষেরা। আর্থাৎ পুরো সিস্টেমটা একবার রি-বুট হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইমিউনিটি তো বাড়েই। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।