Just In
প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে ১ টা করে ডিম খেলে কী হতে পারে জানেন?
সস্তায় পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় সেই কোন যুগ থেকে প্রথম স্থানটা ডিমের দখলেই রয়েছে। আর কেন থাকেব নাই বা বলুন! মাত্র ৫ টাকা খরচ করে প্রোটিনের চাহিদা তো মেটেই। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের হাতে থেকেও নিস্তার পাওয়া যায়। তাই তো ব্রেকফাস্টের মেনুতে ডিমের জায়গা আজও যে কোনও খাবারের থেকে আগে। কিন্তু প্রশ্নটা হল আপনি কী অজুহাতে ডিন খাবেন?
একটা ডিমে কম করে ৭০ ক্যালরি থাকে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এখানেই শেষ নয়। মাত্র ৫ টাকা খরচ করে আরও অনেক উপকার মেলে। যেমন ধরুন...
১. বহুক্ষণ পেট ভর্তি রাখে:
ব্রেকফাস্টে ১ টা করে ডিম খেলে শরীরে প্রোটিন এবং উপকারি ফ্যাটের ঘাটতি দূর হয়। ফলে এনার্জি লেভেল বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বহুক্ষণ পর্যন্ত পেটও ভরা থাকে। ফলে ক্ষিদের চোটে মুখ চালাতে চালাতে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কমে।
২. অ্যামাইনো অ্যাসিডে পরিপূর্ন:
শরীরের সচলতা বজায় রাখতে নিয়মিত যে যে উপদানগুলির প্রয়োজন পরে অ্যামাইনো অ্যাসিড তার মধ্য়ে অন্য়তম। আর ডিমে এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে আছে। তাই তো ব্রেকফাস্টের মেনুতে যদি ডিমের অন্তর্ভুক্তি ঘটে তাহলে শরীরের সুস্থতা নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকে না।
৩. ওজন হ্রাস পায়:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! ডিম খেলে ওজন বাড়ে না, বরং কমে। কীভাবে এমনটা হয় জানেন? সকাল সকাল ডিম খাওয়া মাত্র পেট ভরে যায় এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত ক্ষিদেই পায় না। ফলে চিপস, ভাজাভুজি খেয়ে পেট ভরানোর প্রয়োজন পরে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা সকাল সকাল শরীরের ক্যালরির চাহিদা পূরণ করে দেয়, তাদের সারা দিনে বেশি বেশি করে ক্যালরি সমৃদ্ধি খাওয়ার ইচ্ছা থাকে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর একথা তো সকলেই জানেন যে ডিমে য়ে পরিমাণ ক্যালরি থাকে তা শরীরের প্রয়োজন মিটিয়ে দেয়। ফলে দেহে চর্বি জমার সুযোগই তাকে না। তাই অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি আপনি চিন্তায় থাকেন, তাহলে কাল সকাল থেকেই একটা করে ডিম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
ডিমে উপস্থিত সেলেনিয়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারীতাকে তো বাড়াই, সেই সঙ্গে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ যাতে টিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে সংক্রমণ এবং থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
মস্তিষ্কের দেখভাল করে:
ডিমে কোলিন নামে একটি এসেনশিয়াল নিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার মস্তিষ্ক বেশি বেশি করে কাজ করা শুরু করলে একদিকে যেমন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, তেমনি মনোযোগ এবং বুদ্ধির ধারও বাড়তে শুরু করে। এক কথায় মস্তিষ্ক কত সুন্দরভাবে কাজ করবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে কোলিনের উপর। সেই কারণেই তো এই উপাদনটির ঘাটতি দেখা দিলে ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারস সহ একাধিক ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কমায়:
ডিমে উপস্থিত প্রায় ৯ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে সেরাটোনিন নামক বিশেষ এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোনটি স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কমিয়ে নিমেষে মন ভাল করে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে:
অনেকেরই মনে করেন বেশি ডিম খেলে নাকি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ধরণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ডিমে উপস্থিত ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল আসলে ভাল কোলেস্টেরলের পর্যাযে পরে। ফলে এটি শরীরের কোনও ক্ষতি তো করেই না, বরং উপকারে লাগে। তাই তো প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে ১ টা করে ডিম খেলে শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে থাকে, ফলে কমতে থাকে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়:
ডিমে রয়েছে লুয়েটিন এবং জিয়াক্সেনথিন নামে দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আলট্রাভায়োলেট রশ্মির থেকে চোখকে রক্ষা করে। সেই সঙ্গে রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়ায়। ফলে ছানি সহ একাধিক চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পেতে শুরু করে।
ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়:
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, স্কিন এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে ডিমে। তাই একথা বলা যেতেই পারে যে প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত উপকার পাওয়া যায়। এই পরিমাণ উপকারিতা আর কোনও খাবার থেকে পাওয়া যায় বলে তো মনে হয় না।
হাড় এবং দাঁতকে শক্তপোক্ত করে:
ভিটামিন ডি-তে পরিপূর্ণ হওয়ার কারণে নিয়মিত ডিম খেলে হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হয় না। সেই সঙ্গে এই উপাদানটি হজম ক্ষমতা এবং হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সার্বিকভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে:
ডিমের কুসুমে উপস্থিত কোলিন নামে একটি উপাদান লিভার ফাংশনের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়।