Just In
- 59 min ago কর্মক্ষেত্রে সমস্যা মকরের, ব্যাবসায় আর্থিক লাভ মীনের, কেমন যাবে আজকের দিন? দেখুন রাশিফল
- 17 hrs ago অসহ্য গরমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ঘরেই বানান ডিটক্স ওয়াটার
- 17 hrs ago গরমে ট্যানিংয়ের সমস্যা? আর নয়, ব্যবহার করুন এই ঘরোয়া প্যাকগুলি
- 21 hrs ago ভ্যাপসা গরমে আপনাকে তৃপ্তি দেবে এক গ্লাস গোলাপ শরবত!
অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করেন? সাবধান! আক্রান্ত হতে পারেন 'স্মার্টফোন পিঙ্কি সিনড্রোমে'
করোনা প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। তাই গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে সকল মানুষের। ফলে, স্বাভাবিক রুটিনে দেখা দিচ্ছে প্রচুর পরিবর্তন। একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠতে বেশিরভাগই টিভি, মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর সময় ব্যয় করছেন। তবে অনেক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাড়ির অন্যান্য কাজের পরিবর্তে মোবাইলের প্রতি আসক্তি বাড়ছে প্রত্যেকের মধ্যে। সময় অতিবাহিত করতে একমাত্র পন্থা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন মোবাইল ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার আধুনিক বিশ্বে প্রায় সকলেরই জীবনের একটি অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক, সবার হাতেই রয়েছে স্মার্ট ফোন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, একজন মানুষ দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি ফোন ব্যবহার করেন। কিন্তু লকডাউন এর ফলে, এই ৫ ঘন্টা বেড়ে দ্বিগুণ বা তার বেশি সময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অত্যাধিক ফোন ব্যবহারের ফলে দেখা দিচ্ছে এক ভয়ঙ্কর অসুখ। যার নাম 'স্মার্টফোন পিঙ্কি সিনড্রোম'। শুনে অবাক হলেন নিশ্চয়ই? চলুন জেনে নেওয়া যাক এটি আসলে কী।
'স্মার্টফোন পিঙ্কি সিনড্রোম' কী?
স্মার্টফোনগুলো আকারে বড় ও ভারী হয় এবং তা হাতে থাকাকালীন আঙুলগুলির উপর ভর দিয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। তাই ফোনের বেশিরভাগ ওজনই হাতের আঙুলের উপর থাকে। এর ফলে আঙ্গুলের জয়েন্টে ও থাম্ব (বুড়ো আঙ্গুল) এর উপরে চাপ পড়ে এবং জন্ম নেয় ব্যাথার। পরবর্তীকালে এই ব্যথা থেকে আর্থারাইটিস বা বাত দেখা দেয়। একেই বলে 'স্মার্টফোন পিঙ্কি সিনড্রোম '। যারা স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করেন তাদের মধ্যে এই অসুখটি দেখা দেয়।
আরও পড়ুন : 'কনজাঙ্কটিভাইটিস' হতে পারে করোনা ভাইরাসের নতুন উপসর্গ, দেখুন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
গেম খেলা, পছন্দসই কিছু শেয়ার করা, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার, ভিডিয়ো দেখা, ইমেল, ভিডিয়ো কল, ভয়েস কল করা, ইত্যাদি কাজ আমরা ফোনের মাধ্যমেই করে থাকি। আর এগুলি করার ক্ষেত্রে ফোনটিকে হাতের উপর ভর দিয়েই করি। ফলে আপনি লক্ষ্য করবেন, কিছুক্ষণ ব্যবহারের পর আপনার হাতের আঙুলগুলি ব্যথা হতে শুরু করে। আঙুলে চাপ পড়ার ফলে অস্টিওআর্থারাইটিস এর ঝুঁকি বাড়ে এবং জয়েন্টগুলিতে অতিরিক্ত হাড় বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, আঙুলের জয়েন্টগুলির মধ্যে কার্টিলেজ হ্রাস পেতে শুরু করে। ফোন ব্যবহারের নেশায় আপনি হয়তো এই ব্যথাটিকে উপেক্ষা করে যান, কিন্তু এভাবে গুরুত্ব না দেওয়ার ফলে পরবর্তীকালে দেখা দেয় এই অসুখটি। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ লোক আঙুলের এই জাতীয় রোগে ভুগেছেন। মোবাইল ফোনের পাশাপাশি যারা কম্পিউটার ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রেও দেখা দিচ্ছে এই রোগ।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ লোক অনলাইন ব্যাংকিংয়ের জন্য ফোন ব্যবহার করেন, ৮৮ শতাংশ লোক অনলাইনে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদানের অনুসন্ধান করেন, ৪৩ শতাংশ মানুষ চাকরির তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহার করেন, ৩০ শতাংশ মানুষ শিক্ষাগত সামগ্রী পেতে বা ক্লাস নিতে ব্যবহার করেন। এই সবকিছু বাদ দিয়ে সর্বাধিক যে কাজের জন্য মানুষ স্মার্টফোনে বেশি সময় ব্যয় করছেন তা হল টেক্সট মেসেজিং, ভয়েস এবং ভিডিয়ো কলিং, ইমেইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া'।
রোগের লক্ষণ
১) ছোট আঙ্গুল (কনিষ্ঠা) এবং থাম্ব (বুড়ে আঙুল) ব্যথা হতে থাকে।
২) অসাড়তা দেখা যায়।
৩) আঙুলের জয়েন্টে অত্যাধিক ব্যথা অনুভব হয়।
কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই জাতীয় সমস্যা কেবলমাত্র অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলেই দেখা দিচ্ছে না, বরং পরিবারের কারুর এই রোগ থাকলে বা জিনগত, সঠিক ডায়েটের অভাব এবং অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলেও দেখা দিচ্ছে। যেহেতু ফোন ব্যবহারের ফলে 'স্মার্টফোন পিঙ্কি সিনড্রোম' বেশি মাত্রায় দেখা দিচ্ছে তাই এই অসুখটি থেকে দূরে থাকতে সজাগ হতে হবে আমাদের। দেখে নিন এর থেকে দূরে থাকার কিছু টিপস্ -
প্রতিরোধের উপায়
১) স্মার্টফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, কেবলমাত্র প্রয়োজন ছাড়া ব্যবহার করবেন না।
২) অবসর সময়ে টেক্সট, গেম এবং ভিডিয়ো দেখার ক্ষেত্রে অল্প সময় নির্ধারন করুন।
৩) ফোন ব্যবহারের সময় টানা ব্যবহার না করে মাঝে বিরতি নিন।
আরও পড়ুন : পায়ের লালচেভাব বা ক্ষত কী কোভিড-১৯ এর নতুন উপসর্গ? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত
৪) ব্যবহারের মাঝে বিরতি নেওয়ার সময় আঙুলগুলি প্রসারিত করুন এবং হাত ও আঙুলের এক্সারসাইজ করুন।
৫) টাইপ না করে ফোনের স্পিচ ব্যবহার করুন।
৬) হাত পরিবর্তন করুন, যাতে দীর্ঘ সময় ধরে একহাতে ফোনটি না থাকে।
৭) ফিল্ম বা যেকোনও ধরনের ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে স্ট্যান্ড ব্যবহার করুন।
৮) ভিডিয়ো কলিং এর ক্ষেত্রে ফোনটিকে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় রেখে কথা বলুন।
৯) ভয়েস কলিং এর ক্ষেত্রে লাউড স্পিকার দিয়ে কথা বলুন অথবা এয়ারফোন ব্যবহার করুন। এগুলি ব্যবহার করতে না চাইলে টানা ৫-৭ মিনিটের বেশি কানে দিয়ে কথা বলবেন না।
১০) আঙুলে ব্যথা বা ফোলা ভাব দেখা দিলে তা থেকে বাঁচার জন্য কিছু পেইন রিলিভার লাগান।