Just In
খেলতে খেলতে চোট লেগেছে? এই পদ্ধতি প্রয়োগে নিমেষেই কমবে ব্যথা!
খেলতে খেলতে চোট লাগা খুব স্বাভাবিক। আপনি যে খেলার সঙ্গেই যুক্ত থাকুন না কেন, যতই নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টা করুন, আর যত বড় খেলোয়াড়ই হন, চোট থেকে বাঁচতে পারবেন না। আর খেলতে গিয়ে চোট লাগা যেমন যন্ত্রণার তেমনি সহজে ভালো হতে চায় না। কিছু সাধারণ স্পোর্টস ইনজুরি হল - পা মচকে যাওয়া, হাঁটুতে আঘাত, পেশী ফোলা, পিঠে ব্যথা, কোথাও কেটে যাওয়া। বেশিরভাগ লোক চোট লাগলে ব্যথানাশক ঔষধ খেয়ে নেন, এতে ব্যাথা থেকে সাময়িক মুক্তি হতে পারে, কিন্তু চোট একদম ভালো হয় না! অনেক ক্ষেত্রেই পরে সমস্যা দেখা দেয়। তাই পেনকিলারের সঙ্গে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চোট সারানোর চেষ্টা করুন। এতে কাজ যেমন ভালো হবে তেমনি কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও নেই। জেনে নিন ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি।
১) চোট লাগলে প্রথমে কী করবেন
চোট লাগলে প্রথম কয়েক ঘণ্টা প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। পেশিতে আঘাত লাগলে প্রথম কয়েক ঘণ্টা অনেককিছু হতে পারে। যন্ত্রণার সঙ্গে ফুলে যাওয়া, ক্ষত দেখা যেতে পারে। নড়াচড়া করতে গেলে বা চোটের জায়গায় হাত দিলেও লাগতে পারে। হাত বা পায়ে চোট লাগলে প্রথম কয়েক ঘণ্টা নাড়াতে পারবেন না। এরকম পরিস্থিতি হলে যা করবেন -
ক) বিশ্রাম
বিশ্রাম আপনার নিরাময়ের প্রক্রিয়া শুরু করার অন্যতম কার্যকর উপায়। চোট লাগার পর আপনার আহত পেশী দুর্বল হবে এবং আরও আঘাতের ঝুঁকি থাকে, বিশেষত প্রথম কয়েক ঘণ্টা। তাই এই সময় নড়াচড়া না করে চুপ করে বসে থাকাই ভালো।
খ) বরফ
চোট লাগার পর বরফ লাগালে ভালো কাজ হবে। চোট লাগার পর দু'দিন পর্যন্ত বরফ লাগাতে পারেন। আইস ব্যাগ বা আইস প্যাক নিয়ে চোটের জায়গায় রাখুন। এটা যন্ত্রণা কমাতে ও ফোলা কমাতে সাহায্য করবে দ্রূত। সেই সঙ্গে চোটের জায়গায় রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখবে বরফ। তবে কখনই সরাসরি বরফ লাগাবেন না। আইস ব্যাগ না থাকলে একটা কাপড়ে বা তোয়ালেতে বরফ মুড়ে আঘাতের জায়গায় লাগান। প্রতিবার ১৫-২০ মিনিটের বেশি লাগাবেন না।
গ) ব্যান্ডেজ
চোটের জায়গায় ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ লাগালে তরল তৈরি হওয়া রোধ করে ফোলা হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। ব্যান্ডেজ করলে সেই জায়গাটা যেহেতু নড়াচড়া করা যায় না তাই ব্যাথাও কমতে পারে ধীরে ধীরে। তবে খুব শক্ত করে ব্যান্ডেজ করবেন না এতে আরও লাগতে পারে।
ঘ) পা ওপরে তুলে রাখুন
পায়ের পেশিতে যদি চোট লাগে তাহলে প্রথমে সোজা করে মেলে দিন পা। এরপর আস্তে আস্তে ওপরের দিকে পা তোলার চেষ্টা করুন। এতে চোটের জায়গা থেকে ফ্লুইড বেরিয়ে যাবে, ফলে ফোলা ভাব কমবে। আপনার বুকের লেভেলে পা রাখার চেষ্টা করুন, না পারলে যতটা ওপরে পারেন পা তুলে রাখুন। পায়ের নীচে বালিশ দিয়ে রাখতে পারেন। নিতম্ব বা পিছনে যদি চোট লাগে তাহলে কোমরের নীচে বালিশ রেখে পিছনের অংশ তোলার চেষ্টা করুন।
২) চোট লাগার পরের দিন কী করবেন
চোট লাগলে একদিনে ঠিক হয় না। সেক্ষেত্রে চোট লাগার পরের দিন ব্যাথা বাড়তে পারে বা দেখলেন আরও ফুলে গেছে। সেক্ষেত্রে প্রথম দিনের চিকিৎসা পদ্ধতি চলবে। তার সঙ্গে ব্যথানাশক কিছু খেতে পারেন। প্রথম তিন দিন কোনওরকম গরম জিনিস চোটের জায়গায় লাগাবেন না।
ঘন ঘন কটন বাড ব্যবহার করেন কানে? সাবধান! শ্রবণশক্তি হারাতে পারেন
৩) কী করবেন
সাধারণত তিন দিন পর থেকে চোট ঠিক হতে শুরু করে। ৭২ ঘণ্টা পর থেকে আপনার ব্যথা, ফোলাভাব এবং ক্ষত সম্ভবত কমতে শুরু করবে। চোটের কারণে রক্ত জমে গেলে তিন দিন পর থেকে জমা রক্ত আলগা হতে শুরু করবে।
ফোলা ভাব কমে গেলে বরফের সঙ্গে গরম সেঁক দেওয়া শুরু করতে পারেন। চোটের জায়গায় রক্ত সঞ্চালন ঠিক করতে গরম সেঁক কাজে দেবে। চোটের জায়গায় অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে নিরাময় করতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে ব্যাথাও কমবে ঠান্ডা-গরম সেঁক দিলে।
ফোলা একদম কমে গেলে ব্যান্ডেজ খুলে ফেলতে পারেন। তারপর হালকা এক্সারসাইজ শুরু করুন। প্রথমে হালকা নড়াচড়া করুন, জোর দেবেন না চোটের জায়গায়। দেখবেন আস্তে আস্তে স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারছেন। অনেকদিন চোট থাকলে সেই জায়গা শক্ত হয়ে যায়, শক্তি কমে যায়। তাই ধীরে ধীরে হাঁটাচলা বা নড়াচড়া করতে হবে।
৪) এক মাস পর
চোট লাগার পর প্রথম কয়েক দিন যন্ত্রণা বেশি হয়। তারপর ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগে। ব্যাথা থাকলে আইস বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন। ক্রিম লাগালেও ব্যাথা কমবে। পুরোপুরি নিরাময় হলে তবেই ওয়ার্ক আউট শুরু করবেন।
৫) কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
অতিরিক্ত ফুলে গেলে বা যন্ত্রণা হলে
চোটের জায়গা নড়াচড়া করলে যদি শব্দ হয়
আহত জায়গায় চাপ দিলে সমস্যা
লাগা হাত দিয়ে কিছু ভারী তুলতে না পারলে
শ্বাসকষ্ট হলে
জয়েন্ট-এ সমস্যা হলে
মাথা ঘোরা
জ্বর
এছাড়া ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করে যদি দেখেন অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার।