Just In
৬-টা যোগাসন যা কর্মস্থলে পালন করা যায়
যোগব্যায়াম এক অতি প্রাচীন হিন্দুদের অভ্যাস ও অনুশীলন বিধি যার অন্তর্গত হল মন ও শরীরের ওপর নিয়ণ্ত্রণ। এই নিয়ণ্ত্রণের মাধ্যম ধ্যান,জোরে নিশ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া ও বিশেষ কিছু শারীরিক মুদ্রার অভ্যাস যাকে আমরা “আসন” বলে থাকি।যোগব্যায়াম নিজের মন ও শরীরকে নিজের আয়ত্তে আনতে সাহায্য করে,যার ফলে নিজের জীবন নিয়ণ্ত্রণে থাকে।
এটা আপনার জীবনে এক সাম্যতা আনে যাতে আপনার জীবনে সুখ,শান্তি ও প্রকৃতির সাথে একা্ত্ম হয়ে থাকার এক মনোরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।অনেকের একটা ভুল ধারণা আছে যে যোগব্যায়াম শুধুই শারীরিক কসরত যা কেবল শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন।
যোগ এক জীবনধারা বলতে পারেন যার ফল পেতে গেলে আপনাকে এটা নিয়মিত অভ্যাস করতে হবে।যে যোগব্যায়ামের ওপর প্রভুত্ব লাভ করে সে স্বয়ং-এর ওপর প্রভুত্ব অর্জন করে,যার ফলস্বরুপ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডর ওপর এক প্রকার প্রভুত্ব অর্জন করেছে।সব মিলিয়ে এটা আপনার চিন্তাধারা,জীবনযাপন,কামনা ও শরীর – সব কিছুর ওপর প্রভাব বিস্তার করে। এতে আপনি আপনার ক্ষুধা নিয়ণ্ত্রণে আসে এবং আপনার কর্মক্ষমতা আপনার দৈহিক ক্ষমতার ঊর্ধ্বে যেতে পারে।শ্বাস প্রশ্বাসের নিয়ণ্ত্রণে আপনি আপনার রাগ আয়ত্তে রাখতে সক্ষম হতে পারেন।সময়ের যা অভাব তাতে সম্পূর্ণ রুপে পুরো যোগব্যায়ামের প্রণালী মানা অনেক ক্ষেত্রেই মু্স্কিল।
এটাই যোগের মাধুর্য্য যে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এটার রুপ পরিবর্তন করা যায়।আপনি যদি মনে করেন তাহলে শুধু শ্বাস প্রশ্বাসের অভ্যাসটা করতে পারেন, অথবা মানুন ধ্যানের যোগ বা শুধু শরীর ঠিক রাখতে করুন আসন।এর মধ্যে অনেক মুদ্রা আছে যা নানান অন্য মুদ্রার সাথে মিলিয়ে এমন করে নেওয়া যায় যা দিনের যে কোনও সময় অভ্যাস করা যায়।এখানে এরকমই কিছু মুদ্রার উল্লেখ করা হল তাঁদের জন্য যাঁরা সারাদিন চেয়ারে কম্পিউটারের সামনে আবদ্ধ থাকেন, এবং এর অভ্যাস কর্মস্থলেও করা যায়।
গভীর নিশ্বাস নেওয়া
শিরদাঁড়া সোজা করে নিজের চেয়ারে বসুন, দুটো পা মাটিত রেখে।জোরে নিশ্বাস ভেতরে টানুন যাতে আপনার পেট, ফুসফুসের নিচের দিক, মাঝখান ও তারপর ওপরের দিক হাওয়ায় ভরে।এরপর আস্তে আস্তে নিশ্বাস ছাড়ুন ফুসফুসের ওপর দিক,মাঝখান ও নিচের দিক থেকে ও শেষে পেটের অংশ থেকে।এই হাওয়ার নেওয়া ছাড়ার সময় মনোযোগ দিন।চোখ বন্ধ করে এটা পাঁচ বার করুন।
গলা ঘোরানো
চোখ বন্ধ করে আপনার থুতনিটা বুকের ওপর লাগান। এবার ঘড়ির দক্ষিণাবর্তে মাথাটা ঘোরান একবার চক্রাকারে, তারপর আবার একই ভাবে বামাবর্তে।খেয়াল রাখবেন যেন মাথাটা ও ঘাড়টা পুরো চক্রের আকারে ঘোরানো হয়, এমন ভাবে যাতে প্রতিবার আপনার কানটা ঘাড়ের ওপর ঠেকে এক একদিকে যেদিকে মাথা ঘোরাবেন।এসবের মাঝে মন ও শরীর পুরো স্বচ্ছন্দ ও নিরুদ্বেগ রাখবেন।
পদহস্তাসন
দুটো পা জড় করে সোজা হয়ে দাড়ান।নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমরের দিক থেকে নিচু হয়ে সামনের দিকের ঝুকুন নিজের পায়ের আঙুল ছোঁওয়ার চেষ্টা করে।এই পুরো প্রক্রিয়ায় হাত দুটো সোজা রাখুন।এরপর আস্তে আস্তে সোজা হয়ে নিজের পুরোনো স্থানে ফিরে আসুন।
পশ্চিমোত্তাসন
মাটিতে বসে আপনার পা দুটো ছড়িয়ে দিন সামনের দিকে।হাত ও শরীর সামনের দিকে এগিয়ে আপনার পায়ের বুড়ো আঙুল দুটো ধরার চেষ্টা করুন।এই আসনটা করলে আপনার হাত, পা ও শিরদাঁড়ার ভাল ব্যায়াম হয়।এটা এছাড়াও আপনার পেটের অংশে জমে থাকার মেদ কমায় ও আপনাকে সুস্থ্য রোগমুক্ত রাখে।
যোদ্ধার ভঙ্গী অবলম্বন করা
সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং দুটো পায়ের মাঝে চার ইন্চির অন্তর রাখুন।এবার হাত দুটো ওপরে তুলে ছড়িয়ে দিন।ডান পা-টাকে এবার ৯০ ডিগ্রী ডানদিকে ঘুরিয়ে দিন এবং সেই অনুসারে বাঁ পা-টাকেও ঘোরান ও টানটান করুন।পিঠটা সোজা করুন। ওপরের দিকে তাকান ও হাত দুটো আকাশের দিকে তুলে ধরুন।
উত্থিত হস্তপদঙ্গুস্ঠান
তাড়াসনের অবস্থায় সোজা দাঁড়ান।এবার চেষ্টা করুন আপনার বাঁ পা-টা ওপরের দিকে তুলতে। এবার আপনার বাঁ গোড়ালিটা আপনার বাঁ হাত দিযে ধরার চেষ্টা করুন।অন্যদিকেও একই রকম চেষ্টা করুন।এই আসনটা করলে আপনার শিরদাঁড়া, কোমরের নিচের দিক, পিছন, পা ও হাতের ভাল ব্যায়াম হয়।এতে এইসব জায়গায় জমে থাকা মেদও কমে।