Just In
ভুলেও নাইট শিফ্টে কাজ নয়! না হলে কিন্তু...
পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের মোট জনসংখ্য়ার একটা বড় অংশ রাত জেগে কাজ করেন। যাদের বেশিরভাগই ২০-৩০ বছর বয়সি। এত কম বয়সে এমন রাত জেগে কাজ করা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কেন জানেন? কারণ দীর্ঘ সময় রাত জাগলে শরীরের বায়োলজিকাল ক্লক বদলে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেহের নিজস্ব যে কাজ করার ধরণ রয়েছে তাতেও বদল আসে। ফলে ধীরে ধীরে একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে।
রাত জাগা যতটা না কঠিন, দিনের বেলা ঘুমানো তার থেকেও বেশি কষ্টকর। আর যদি কোনও মতে ঘুম এসেও যায়, তবু রাতের বেলার মতো সাউন্ড স্লিপ হতে চায় না। কারণ দিনের আলো ফোটা মাত্র শরীর অ্যাকটিভ মোডে চলে যায়। তখন তাকে ঘুম পারানো বেজায় কঠিন একটা কাজ। প্রসঙ্গত, ঘুমানোটা আপাত দৃষ্টিতে সহজ কাজ মনে হলেও আদতে কিন্তু এই সময় আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে সহজে ঘুম এসে যায়। এখন রাতের বেলা যদি কেউ জেগে থেকে দিনের বেলা ঘুমতে শুরু করেন, তাহলে এই সব কেমিকেলগুলি ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে ঘুমের পরিধি কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আয়ুও কমে যায়। শুধু তাই নয়, আরও নানা ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় শরীরকে। যেমন...
তথ্য ১:
চিকিৎসক মহল নাইট শিফ্টকে কী নামে ডেকে থাকে জানেন? "কার্সিনোজেনিক শিফ্ট"। কারণ দীর্ঘদিন রাত জেগে কাজ করলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়। সেই কারণেই তো অনেক গবেষক এই শিফ্টটিকে "গ্রেভিয়ার্ড শিফ্ট" নামেও ডেকে থাকেন।
তথ্য ২:
রাতের বেলা জেগে থেকে দিনের বেলা ঘুমালে শরীরে মেলাটোনিন হরেমানের ক্ষরণ ঠিক মতো হয় না। ফলে ঘুম কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অবসাদ এবং মানসিক চাপে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে যারা নাইট শিফ্ট করেন, তারা খুব খিটকিটে মেজাজের হয়ে যান। এমনটা হয় মেলাটোনিন হরমোনের ঠিক মতো ক্ষরণ না হওয়ার কারণে।
তথ্য ৩:
বেশ কিছু দিন আগে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে যারা রাত জেগে কাজ করেন, তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সাধারণের তুলনায় বেড়ে যায়। এবার বুঝতে পারছেন তো কেন চিকিৎসকেরা দীর্ঘ সময় নাইট শিফ্ট করতে মানা করেন।
তথ্য ৪:
দিনের বেলা ঘুমালে শরীরে অন্দরে জিনের বিভাজন একেবারে ঠিক মতো হতে পারে। ফলে একাধিক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে রাতের বেলা না ঘুমালেও শরীরের অতটা ক্ষতি হয় না, যতটা দিনের বেলা ঘুমালো হয়। এদিকে যারা রাত জাগেন, তাদের দিনের বেলা না ঘুমালে চলে না। ফলে দেহের ক্ষয় দ্বিগুণ হারে ঘটতে শুরু করে।
তথ্য ৫:
একাধিক পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যারা রাত জেগে কাজ করেন, তাদের ক্যান্সার, হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ওবেসিটির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ মানুষের থেকে বেশি থাকে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশকে যেভাবে লাইফস্টাইল ডিজিজের প্রকোপ বেড়েছে তাতে এখন থেকেই সাবধান হওয়াটা জরুরি। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
তথ্য ৬:
সারা রাত জাগার পর দিনের বেলা ঘুমলে খিদে কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা যেমন কমে যায়, তেমনি বিপাক প্রক্রিয়াও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। সেই সঙ্গে অল্প কিছু খেলেই গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এইভাবে চলতে থাকলে এক সময়ে গিয়ে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, নানাবিধ জটিল রোগ একে একে শরীরে এসে বাসা বাঁধতে শুরু করে। ফলে দৈনন্দিন জীবন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
তথ্য ৭:
সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে ধীরে ধীরে ত্বকের উপরও এর প্রভাব পরতে শুরু করে। ফলে শরীরের বয়স বাড়তেও শুরু করে। সেই সঙ্গে সার্বিক সৌন্দর্যও চোখে পরার মতো হ্রাস যায়। তাই তো মহিলাদের বেশি করে নাইট শিফ্ট করতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।