Just In
সামান্য প্রয়োজনেই পেইন কিলার খাওয়ার অভ্যাস? মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছেন কিন্তু!
কথায় কথায় পেইন কিলার খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। একটু মাথাব্যথা, জ্বর, গায়ে হাতে ব্যথা হল কি হল না, ঝটপট পেন কিলার খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে অনেকের। কিন্তু জানেন কি, এই সাময়িক স্বস্তির আড়ালে ভয়ানক বিপদ ডেকে আনছেন আপনার শরীরে? এতে উল্টে শারীরিক বিপদ ঘটতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভাল।
খোলা বাজারে NSAIDs বা নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গোত্রের ওষুধ বেশি পাওয়া যায়, যেমন - ডাইক্লোফেনাক, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, ইত্যাদি৷ এই ওষুধগুলি ব্যথা কমানোর পাশাপাশি প্রদাহও কমায়৷ কিন্তু এই জাতীয় ওষুধগুলি খাওয়ার ফলে বদহজম, পেট ব্যথা, গ্যাসট্রাইটিস, রক্তপাত এবং আরও অনেক শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, পেইন কিলার বা ব্যথা নাশক ওষুধগুলি শরীরের কী কী ক্ষতি করতে পারে -
১) লিভারের ক্ষতি হওয়া
ব্যথা উপশমকারী ওষুধ, বিশেষ করে প্যারাসিটামল লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই, প্যারাসিটামল পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। প্রতিদিন ৮টি ট্যাবলেট (৫০০ মিলিগ্রাম) খেলে লিভারের গুরুতর ক্ষতি হতে পারে। তাই ঠান্ডা লাগা, গা হাত ব্যথা, জ্বর, যাইহোক না কেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই প্যারাসিটামল খান।
২) পেটে ব্যথা এবং আলসার
ব্যথা নাশক ওষুধ বা পেন কিলার যেমন আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন এবং ন্যাপ্রোক্সেন গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, জ্বালা এবং অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে। এমনকি ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণের কারণে পেটে আলসারও হতে পারে। আর যাঁদের আগে থেকেই আলসার আছে, তাঁদের রক্তপাত হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
৩) ডিপ্রেশন
পেইন কিলার ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে। তাই যাঁরা বিষণ্ণতায় ভুগছেন এবং অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট গ্রহণ করছেন, তাঁরা ঘন ঘন ব্যথা নাশক ওষুধ (NSAIDs)গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
৪) কিডনি ফেলিওর
উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আইবুপ্রোফেন এবং ন্যাপ্রোক্সেন-এর মতো ব্যথা নাশক ওষুধ গ্রহণ করলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এর থেকে কিডনি ফেলিওর বা ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া, যাঁরা ইতিমধ্যেই কিডনির রোগে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা অনেকটাই বেশি।
৫) গর্ভপাত
গর্ভাবস্থার প্রথম ২০ সপ্তাহে যদি কেউ ব্যথা নাশক ওষুধ (যেমন NSAIDs) ব্যবহার করেন, তাঁদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেইন কিলার ওষুধগুলি হরমোনের কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করে। তাই গর্ভাবস্থায় যদি আপনি কোনও কারণে ব্যথা নাশক ওষুধ ব্যবহারের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৬) রক্তপাত হওয়া
অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন এবং নেপ্রোক্সেন-এর মতো পেইন কিলারগুলি রক্ত পাতলা করে। যাঁদের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা এবং হার্টের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এই ওষুধগুলি উপকারি হতে পারে। তবে যাঁরা রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করেন, তাঁদের যে কোনও ব্যথা নাশক ওষুধ(NSAIDs)এড়িয়ে চলা উচিত। এতে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে এবং অত্যধিক রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।
৭) হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। যাঁরা এই ওষুধগুলি ব্যবহার করেন, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।