Just In
- 4 hrs ago রাতে খারাপ এবং ভয়ের স্বপ্ন আসে? সহজ জ্যোতিষী সমাধান স্বস্তি দেবে
- 6 hrs ago আপনি কি সেলফি তুলতে পছন্দ করেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেলফি স্বাস্থ্যকর
- 6 hrs ago হিন্দু নববর্ষের ৩ দিন আগেই গ্রহ পরিবর্তন, শনির প্রভাবে অর্থ-বৃষ্টির সম্ভাবনা এই রাশিগুলিতে
- 24 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
বছরে ৩০০ দিন ঘুমোন! বিরল রোগে আক্রান্ত রাজস্থানের এই ব্যক্তি
রামায়ণে কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙানোর ঘটনা ও তার চরিত্র সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। কুম্ভকর্ণের ঘুম নিয়ে আমরা প্রায়ই হাসি-ঠাট্টা করে থাকি, কিংবা আমাদের চেনা-পরিচিতর মধ্যে যদি কেউ একটু বেশি ঘুমাতে ভালবাসে, তাহলে তাকে আমরা 'কুম্ভকর্ণ' বলে আখ্যাও দিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বাস্তবের মাটিতেও এমন চরিত্র রয়েছে।
রাজস্থানের ভাড়ওয়া গ্রামের বাসিন্দা, ৪২ বছর বয়সী পুরখারাম বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০দিনই ঘুমান! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। বছরের মাত্র ৬৫দিন জেগে থাকেন, তাও খুব কষ্ট করেই। রামায়ণের কাহিনী অনুযায়ী, কুম্ভকর্ণ বছরের ৬ মাস ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতেন। কিন্তু পুরখারাম তো তার থেকেও বেশি ঘুমোতে পারেন! ডাক্তারি ভাষায়, ওই ব্যক্তি অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া-তে আক্রান্ত। এই বিরল রোগ আদতে একপ্রকার মানসিক অসুস্থতা। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাঁর এই রোগ ধরা পড়ে। জানা গিয়েছে, তিনি একবার ঘুমিয়ে পড়লে টানা ২৫দিন ধরে তাঁর চলে নিদ্রাকাল। এই বিচিত্র অসুখের জন্য গ্রামবাসীরা পুরখারাম-কে 'কুম্ভকর্ণ' বলে ডাকেন। একটি মুদির দোকান রয়েছে তাঁর। কিন্তু এই বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে, মাসে মাত্র পাঁচদিন দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারেন তিনি।
অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া কী?
অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া একটি অত্যন্ত বিরল ঘুমের ব্যাধি, যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে থাকতে পারে। ফলে তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রায় নেতিবাচকভাবে প্রভাব পড়ে। অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া হল এক ধরণের হাইপারসোমনিয়া, যা টিএনএফ-আলফা নামে পরিচিত ব্রেন প্রোটিনের ওঠা-নামার কারণে ঘটে। এটি সাধারণত অতিরিক্ত ঘুম সংক্রান্ত রোগগুলির সাথে সম্পর্কিত, যেমন - স্লিপ অ্যাপনিয়া, narcolepsy এবং ইডিওপ্যাথিক হাইপারসোমনিয়া।
অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া এবং হাইপারসোমনিয়ার লক্ষণ, কারণ এবং চিকিৎসার পদ্ধতিগুলি প্রাথমিকভাবে একই।
হাইপারসোমনিয়া কী?
হাইপারসোমনিয়া এমন একটি রোগ, যার কারণে দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম পায় এবং একে excessive daytime sleepiness (EDS) বলা হয়। হাইপারসমোনিয়ার প্রাইমারি অবস্থা বা সেকেন্ডারি অবস্থা হতে পারে।
হাইপারসোমনিয়া-র কারণ কী?
১) প্রাইমারি হাইপারসোমনিয়া মস্তিষ্কের সিস্টেমে সমস্যাগুলির কারণে ঘটে, যা ঘুম এবং নিদ্রাভঙ্গের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
২) সেকেন্ডারি হাইপারসোমনিয়া ক্লান্তি বা অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে হয়, যেমন - স্লিপ অ্যাপনিয়া।
৩) কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ হাইপারসোমনিয়া-র কারণ হতে পারে।
৪) ঘন ঘন ড্রাগ এবং অ্যালকোহলের ব্যবহার, দিনের বেলা ঘুমের কারণ হতে পারে।
৫) অন্যান্য কারণগুলি হল - লো থাইরয়েড ফাংশন এবং হেড ইনজ্যুরি।
হাইপারসোমনিয়া-র উপসর্গ
অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং সবসময় ঘুম-ঘুম ভাব ছাড়াও, হাইপারসোমনিয়ার অন্যান্য লক্ষণগুলি হল -
উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা
বিরক্তিভাবে বেড়ে যাওয়া
এনার্জি কমে যাওয়া
অস্থিরতা
ধীর চিন্তাভাবনা এবং ধীর কথাবার্তা
খিদে কমে যাওয়া
হ্যালুসিনেশন
স্মৃতিশক্তিতে অসুবিধা
এটি কীভাবে নির্ণয় করা হয়?
প্রথমে রোগীর উপসর্গ এবং চিকিৎসার ইতিহাস পর্যালোচনা করেন ডাক্তাররা। তারপর এই পরীক্ষাগুলি করতে পারেন - Epworth Sleepiness Scale, Multiple sleep latency tests, Polysomnogram এবং Sleep diary।
হাইপারসোমনিয়ার চিকিৎসা
হাইপারসোমনিয়ার কারণের উপর নির্ভর করে, এই অবস্থার চিকিৎসা পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, narcolepsy চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলি হাইপারসোমনিয়ার চিকিৎসা করতে পারে। এছাড়া, এই রোগের চিকিৎসার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল, জীবনযাত্রার পরিবর্তন।
ডাক্তার প্রতিদিন নির্দিষ্ট ঘুমের সময়সূচী সুপারিশ করতে পারেন, এমন কিছু কাজ করতে বারন করা হতে পারে যা অত্যন্ত ক্লান্তিকর, বিশেষত ঘুমাতে যাওয়ার আগে।
হাইপারসোমনিয়াতে আক্রান্তদের অ্যালকোহল, ড্রাগ বা এমনকি কফিও খাওয়া উচিত নয়। এনার্জি লেভেল ঠিক রাখার জন্য উচ্চ পুষ্টিকর ডায়েটের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।