Just In
Norovirus : নতুন আতঙ্ক নোরোভাইরাস! জেনে নিন কতটা ভয়ানক এই ভাইরাস ও এর উপসর্গ
কোভিড আতঙ্কে এমনিতেই জর্জরিত গোটা বিশ্ব। তার ওপর একের পর এক নতুন নতুন ভাইরাসের উদ্ভব মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। মাঙ্কিপক্স, জিকা ভাইরাসের পর এবার নতুন আতঙ্ক নোরোভাইরাস! বিশেষজ্ঞরা এই ভাইরাসটিকে নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি, এই সব লক্ষণ নিয়ে ইংল্যান্ডে আতঙ্ক তৈরি করেছে 'নোরোভাইরাস'। কোভিডের মতোই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতাও অনেকটাই বেশি। ইংল্যান্ডে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে! সম্প্রতি ইংল্যান্ডের গণস্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে এই নিয়ে সতর্কও করা হয়েছে।
তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, কী এই নোরোভাইরাস? এর লক্ষণ, কারণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে।
নোরোভাইরাস (Norovirus) কী?
নোরোভাইরাস একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস, এতে আক্রান্ত হলে মারাত্মক বমি এবং ডায়রিয়া হয়ে থাকে। এটি সংক্রামিত ব্যক্তি বা দূষিত পৃষ্ঠের সংস্পর্শের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি বাতাসে নোরোভাইরাসের কয়েকশো কোটি কণা ছড়িয়ে দিতে পারেন! যেগুলি সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তাকেও সংক্রমিত করতে পারে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) এর মতে, কেবলমাত্র কয়েকটি নোরোভাইরাস কণা অন্য ব্যক্তিকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। এই রোগ ছড়ায় আক্রান্তের শরীর থেকে নির্গত ভাইরাসের মাধ্যমে।
এটি কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে?
সিডিসি অনুযায়ী, নোরোভাইরাস মূলত খাদ্য এবং জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও যে যে কারণে ছড়াতে পারে -
১) সংক্রামিত ব্যক্তি যদি খালি হাতে খাবার স্পর্শ করে।
২) কোনও খাদ্য যদি এমন পৃষ্ঠের উপর রাখা হয়, যার উপর মল বা বমির কণা রয়েছে।
৩) সংক্রামিত ব্যক্তির বমির ক্ষুদ্র ড্রপ থেকে ছড়াতে পারে।
৪) ভাইরাস রয়েছে এমন কোনও বস্তুতে হাত দিয়ে, সেই হাত না ধুয়ে মুখে দিলে সংক্রমিত হতে পারেন।
৫) ভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে একই পাত্রে শেয়ার করে খাবার বা জল খেলেও হতে পারে এই রোগ।
৬) সিডিসি-র মতে, কোনও সুস্থ ব্যক্তি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এসে, দূষিত খাবার বা জল গ্রহণ করে এবং দূষিত পৃষ্ঠগুলিকে স্পর্শ করে এবং হাত না ধুয়ে মুখে দেওয়ার মাধ্যমে নোরোভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।
৭) না ধোওয়া শুকনো খাবার, দীর্ঘ দিন রেখে দেওয়া জল এবং অপরিচ্ছন্ন কোনও বস্তু থেকেও ছড়াতে পারে।
নোরোভাইরাস এর লক্ষণ
CDC-এর মতে, নোরোভাইরাস সংক্রমণের সর্বাধিক সাধারণ লক্ষণগুলি হল - ডায়রিয়া, বমি, বমি বমি ভাব এবং পেটের ব্যথা। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে - জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে ব্যথা। নোরোভাইরাস মূলত পেট বা অন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা অ্যাকিউট গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস নামে পরিচিত। চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ১২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শরীরে প্রভাব পড়তে শুরু করে। সেই প্রভাব এক দিন থেকে তিন দিন থাকতে পারে।
প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
নোরোভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য CDC দ্বারা প্রস্তাবিত সাধারণ উপায়গুলি হল -
১) খাওয়ার আগে, খাবার প্রস্তুত করা বা খাবার পরিবেশনের আগে হাত ভালভাবে ধোওয়া বা পরিষ্কার করুন।
২) আপনি যখন অসুস্থ থাকবেন, তখন খাবার প্রস্তুত করবেন না বা অন্য কোনও জিনিসে হাত দেবেন না। বাড়ির অন্যদের যত্ন নেবেন না।
৩) বাড়ির চারিদিক, জিনিসপত্র সব পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখুন। জামাকাপড় ভাল করে ধোবেন।
নোরোভাইরাস চিকিৎসা
CDC জানিয়েছে, নোরোভাইরাসে অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে রোগীর বমি এবং ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরল পূরণের জন্য প্রচুর পরিমাণে জল বা তরল পান করা উচিত। এটি ডিহাইড্রেশন রোধ করতে পারে, কারণ জলের অভাবে শরীরে অন্যান্য গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।