Just In
Don't Miss
সাবধান! করোনার পর এবার মিলল ডেঙ্গুর নতুন ভ্যারিয়েন্ট, এটি কতটা উদ্বেগজনক? জেনে নিন
করোনার রেশ না কাটতেই, হদিস মিলল ডেঙ্গুর নতুন ভ্যারিয়েন্ট DENV-2 এর। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে, গত দেড় মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণের চমকপ্রদ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। যদিও বিগত বছরগুলোতে ডেঙ্গু কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল, কিন্তু বর্তমানে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি বেড়েছে। তাই বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ইতিমধ্যেই, হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক, কী এই ডেঙ্গুর নতুন ভ্যারিয়েন্ট DENV-2 এবং এটি কতটা বিপজ্জনক।
ডেঙ্গুর নতুন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে
করোনার মধ্যেই কেরল, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ এবং ওড়িশা-সহ ভারতের প্রায় ১১টি রাজ্যে, গত দেড় মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আশ্চর্যজনকভাবে বৃদ্ধি অনেকটাই চিন্তা বাড়িয়েছে মানুষের।
সরকারি রিপোর্ট অনুসারে, ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপের মধ্যে, DENV-2, বা D2 স্ট্রেন বর্তমানে ব্যপকভাবে ছড়িয়েছে এবং এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এর ডিরেক্টর-জেনারেল বলরাম ভার্গভ-এর কথায়, এই স্ট্রেনটি বেশ বিপজ্জনক এবং হতাহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি করছে।
এটি কেন এত উদ্বেগজনক?
এই স্ট্রেনের তীব্রতা, চিন্তা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। বিশেষ করে ইউপি এবং কেরালার মতো কিছু রাজ্যে, অনেক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং এর ফলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কর্তৃপক্ষের মতানুসারে, এটি মূলত মশা বাহিত ভাইরাস D2 স্ট্রেনের কারণেই ঘটছে। বেশিরভাগ সময় DENV স্ট্রেনগুলি হালকা বা তীব্র ফ্লু-এর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, DENV- এর বিশেষ স্ট্রেনগুলি, যেমন D2 এর লক্ষণগুলির তীব্রতা অনকটাই বেশি এবং গুরুতর। যার সময়মতো চিকিৎসা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ এই DENV-2 স্ট্রেনকে, ডেঙ্গু-শক সিনড্রোম বা ডেঙ্গু-হেমোরেজিক ফিভার হিসেবেও উল্লেখ করছেন।
কীভাবে ডেঙ্গুর ভাইরাস পরিবর্তিত হচ্ছে?
ডেঙ্গুর ভাইরাস মূলত, চারটি আকারে রূপ নিতে পরিচিত। সেগুলি হল - D1, D2, D3 এবং D4।
কোভিড-19 এর মতো DENV-2 এর সংক্রমণও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, যাদের পূর্বে ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে, তারা পুনরায় সংক্রামিত হতে পারে। যারা ইতিমধ্যেই প্রথম স্ট্রেন দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন, তারা যদি পুনরায় DENV-2 দ্বারা সংক্রমিত হন, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ২০০ শতাংশ।
DENV-2 সংক্রমণও কী করোনা সংক্রমনের মতো মারাত্মক?
করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি উপসর্গবিহীন অসুস্থতা সৃষ্টি করতেও সক্ষম। কিন্তু ডেঙ্গুর সংক্রমণ সাধারণত ভাইরাস বহনকারী মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়, সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সরাসরি শ্বাস-প্রশ্বাসের ড্রপলেটের মাধ্যমে নয়। তবে DENV-2 এতটাই উদ্বেগজনক যে সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, সাথে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে। যারা পূর্বে ডেঙ্গুর সেরোটাইপ দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেও DENV-2 এর সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে।
ডেঙ্গু এবং কোভিড-19 এর মধ্যে কীভাবে পার্থক্য করবেন?
বর্তমান সময়কালে করোনা বড় উদ্বেগের বিষয় ঠিকই, তবে এই সময়ে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলি নিয়েও যথাযথ বিচার করা প্রয়োজন। যেহেতু উভয় সংক্রমণের ক্ষেত্রেই একই ধরনের উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়, তাই এদের মধ্যে পার্থক্য করাটা একটু কঠিন হতে পারে।
ডেঙ্গুর সংক্রমণে হাই ফিভার, গুরুতর মাথা যন্ত্রণা, জয়েন্ট এবং পেশীতে ব্যথার মতো বিভিন্ন ধরনের উপসর্গের পাশাপাশি, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে, কোভিড-19 এর ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যা মানুষের বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করে। কোভিডের ক্ষেত্রে হালকা, মাঝারি কিংবা গুরুতর সংক্রমণ হতে পারে। এর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল জ্বর, সর্দি, কাশি, ঠান্ডা, গলা ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া, মাথাব্যথা, myalgia, তীব্র ক্লান্তি এবং দুর্বলতা, প্রভৃতি। তবে এই উপসর্গগুলি, ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া ক্ষেত্রেও অনেক সময় লক্ষ্য করা যেতে পারে। তাই উপরোক্ত উপসর্গগুলি দেখা দেওয়া মাত্রই, অবিলম্বে টেস্ট করে নিশ্চিত হন এবং চিকিৎসকের যথাযথ পরামর্শ নিন।
তবে কিছু উপায়ে এই দুটি রোগের মধ্যে পার্থক্য বার করতে পারেন, যেমন -
১) গন্ধ ও স্বাদ হ্রাস এবং অন্যান্য upper respiratory tract inflammation লক্ষণ শুধুমাত্র কোভিডের কারণে হতে পারে, ডেঙ্গু নয়।
২) শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা সাধারণত ডেঙ্গুতে উপস্থিত হয় না।
৩) ডেঙ্গু প্রায়ই মাথা ব্যথা বা দুর্বলতা দিয়ে শুরু হতে পারে, তবে যদি আপনি কোভিডে আক্রান্ত হন তবে সবসময় এই লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে।